Revolutionary democratic transformation towards socialism

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সভায় গ্যাসের বর্ধিত দাম বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ লুটপাটের টাকা যোগাতে জনগণের পকেট কাটা চলবে না বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে ১৪ জুলাই জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও

আজ ১০ জুলাই, বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সভায় গ্যাসের বর্ধিত দাম বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয়। জোট সমন্বয়ক ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নুর সভাপতিত্বে সভায় অংশ নেন, কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মানস নন্দী, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির লিয়াকত আলী। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, আবদুল্লাহ আল ক্বাফী রতন, কমিউনিস্ট লীগের অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নি শিখা জামালী, আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু। সভায় প্রধানমন্ত্রীর গ্যাসের দাম বৃদ্ধি বিষয়ক মন্তব্য সম্পর্কে নেতৃবৃন্দ বলেন, এ বছরের বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়েছে সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিবে না যাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। অথচ বাজেট পাশের দিনই গ্যাসের দাম ৩২.৮০% বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারা বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাবে ফলশ্রুতিতে সকল ধরনের শিল্প পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে, যা জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবে। তাই গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং বিইআরসি-তে রাজনৈতিক দলসমূহসহ বিভিন্ন মহল দাম কমানোর যে যুক্তি উপস্থাপন করে ছিল তা বিবেচনায় নিয়ে দাম কমাতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যে গ্যাস ভারত কেনে ৬ ডলারে, সেখানে বাংলাদেশ তা কেনে ১০ ডলারে। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তার পরও সাধারণ ভোক্তাদের বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে। এটা করা হচ্ছেÑ এলএনজি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে। তারা বলেন, গ্যাস খাতের চুরি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার দায়-দায়িত্ব জানগণ কেন গ্রহণ করবে? তিতাসের সিস্টেম লসের নামে দুর্নীতি দূর করতে পারলে বছরে ৮ হাজার ৪শত কোটি টাকা বাঁচানো সম্ভব। সামগ্রিকভাবে গ্যাস খাতের চুরি, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা দূর করলে বছরে ১৬ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। সরকারের ভুল নীতি ও দুর্নীতি পরিহার করলে খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। নেতৃবৃন্দ বলেন, গ্যাসের সরবরাহকারী ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানিগুলো ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। ফলে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা নেই। নেতৃবৃন্দ বলেন, লুটেরাগোষ্ঠীর লুটপাটের টাকা যোগাতে জনগণের পকেট কাটা চলবে না। ‘উন্নয়ন চাইলে গ্যাসের বর্ধিত দাম মেনে নিতে হবে’ প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, উন্নয়ন হচ্ছে দেশের মাত্র ১% লুটেরা ধনিকের, তা হলে বাকি ৯৯% সাধারণ মানুষ কেন তথাকথিত ‘উন্নয়নের প্রসব বেদনা’র শিকার হবে। নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি গ্যাস নীতি নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্কের আহ্বান জানান। আগামী ১৪ জুলাই, রবিবার গ্যাসের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে ‘জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও’ এবং সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের জন্য নেতৃবৃন্দ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..