ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সদ্য-সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণা কার্যক্রমকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি এবং অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
আজ ১৪ জুলাই এক বিবৃতিতে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্বনামধন্য অধ্যাপক এবং গবেষক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকে নেতৃত্বে এক দল গবেষক বিভিন্ন কোম্পানির বাজারজাতকৃত দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পেয়েছেন। জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক এই ঘটনাটি প্রচারে আসা মাত্রই সংশ্লিষ্ট কোম্পানি এবং সরকারি আমলাদের কেউ কেউ অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ভাষায় অধ্যাপক ফারুককে আক্রমণ করছেন এবং চাপ প্রয়োগ করছেন বলে সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্নসূত্রে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা অধ্যাপক ফারুকের বিরুদ্ধে এই অন্যায় আচরণের নিন্দা জানাই।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তিনি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ, সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে অধ্যাপক ফারুক নীতিনৈতিকতাবিরোধী কোনো কাজ করেননি, বরং তার দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএসটিআই দুধের মান নির্ণয়ে ১৭ বছর আগে যে মানদ- নির্ধারণ করেছিলো তা দুধের মান নির্ণয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে, দুধে এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি নির্ণয়ের মত কোনো পদ্ধতি বিএসটিআই-এর নেই। অধ্যাপক ফারুক কর্তৃক এই গবেষণাটি প্রচারে না এলে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত এই বিষয়টি অজানাই থেকে যেত। এই ধরনের গবেষণাকে উৎসাহিত করা যেখানে কাম্য ছিলো, তা না করে উল্টো অধ্যাপক ফারুককেই দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তাকে বিভিন্ন অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। অধ্যাপক ফারুকের গবেষণার ফলাফল নিয়ে সন্দেহ থাকলে সরকারি কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আরো গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দুধের মান নিয়ে জনমনে সন্দেহের অবসান ঘটাতে পারতেন। তা না করে অধ্যাপক ফারুককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে জনপ্রতিনিধি, সরকারি আমলা ও বিভিন্ন কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যে আচরণ করছেন তা বিশ^বিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার পরিবেশের জন্য এক বিরাট হুমকি। এই ধরনের আচরণ অব্যাহত থাকলে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকেরা গবেষণার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন এবং বিশ^বিদ্যালয়ে মুক্তচিন্তা ও নতুন জ্ঞান সৃজনের ক্ষেত্রটি আরো সংকুচিত হয়ে পড়বে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ইতোমধ্যে হাইকোর্ট ১৪টি কোম্পানির প্রস্তুতকৃত দুধের নমুনা পৃথক চারটি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের এই আদেশকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি উপযুক্ত পরীক্ষাপদ্ধতি এবং দক্ষ গবেষকদের সাহায্যে এই পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করতে এবং জনমনে যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে তা নিরসণকল্পে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ উদ্যোগ নিতে নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান।