Revolutionary democratic transformation towards socialism

সিপিবি’র সংহতি অবস্থানে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ছাত্রদের গায়ে হাত দেবেন না বরং মন্ত্রিসভা মাফিয়ামুক্ত করুন


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র উদ্যোগে নিরাপদ সড়ক, হত্যাকাণ্ডের বিচার, উদ্ধত মন্ত্রী শাজাহান খানের অপসারণ এবং পরিবহন খাতে নৈরাজ্য ও মাফিয়াতন্ত্রের অবসানের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমর্থনে দেশব্যাপী সংহতি অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ ৪ আগস্ট ২০১৮, শনিবার, দেশের জেলা শহরসমূহে সংহতি অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিকেল ৪টায় সংহতি অবস্থানে অপরাপর বাম ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। সংহতি অবস্থানে সিপিবি’র সভাপতি জননেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম সমগ্র দেশবাসীর সংগ্রাম। দেশ যে অরাজকতা ও বৈষম্যের ধারায় চলছে তা আর কোনোভাবেই চলতে দেয়া হবে না, এটাই এই আন্দোলনের মর্মকথা। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, চলমান আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অন্তত সংখ্যার বিচারে ’৬৯-এর গণআন্দোলনকে ছাড়িয়ে গেছে। কমরেড সেলিম আরও বলেন, সরকার সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। একের পর এক মিথ্যা আশ্বাস এবং কিছুদিন পূর্বে কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর ছলচাতুরির ফলে সরকারের মুখের কথা জনসাধারণের বিশ্বাস হচ্ছে না। তিনি অবিলম্বে মন্ত্রী শাজাহান খানকে অপসারণের মাধ্যমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, চলমান ধর্মঘট পরিবহন শ্রমিকরা করে নাই, এটা লুটেরা মালিকদের স্বার্থে করা হচ্ছে। তিনি লুটেরা মালিকদের শোষণের জাল ছিড়ে পরিবহন শ্রমিকদের বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান। সংহতি অবস্থানে অংশ নিয়ে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের অনেক কিছুর মত পরিবহন খাত যখন লুটেরা ও মাফিয়াতন্ত্রের হাতে সম্পূর্ণ জিম্মি, তখন এই জিম্মিদশা ও নৈরাজ্য থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে জাগ্রত ‘কিশোর বিদ্রোহীরা’। নেতৃবৃন্দ বলেন, তারা শুধু সড়ক পরিবহনে সুষ্ঠু অবস্থা ফিরিয়ে আনার কাজে হাত দেয়নি, তারা দেশের চলমান অবস্থার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। এই কিশোররা দেশের মানুষের মধ্যে এই আশাবাদ সঞ্চার করেছে যে, দেশ ও সমাজের যে পরিবর্তন দরকার, সেই পরিবর্তন সম্ভব। নেতৃবৃন্দ আন্দোলনরতদের ওপর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও সরকার দলীয় লোকজনের হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রদের ন্যায্য ৯ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ছাত্রদের গায়ে হাত দিলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। বরং মন্ত্রীসভা যদি মাফিয়ামুক্ত করা হয় সেটাই হবে প্রসংশিত কাজ। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মো. শাহ আলম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, ঐক্য ন্যাপের সহ-সভাপতি অ্যাড এস এম এ সবুর, সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এ এন রাশেদা, শিশু-কিশোর সংগঠক অধ্যাপক এম এ সাঈদ, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. আহমদ সাজেদুল হক রুবেল, আইনজীবী নেতা অ্যাড. আইনুন্নাহার লিপি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিলানী শুভ প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জলি তালুকদার।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..