
গতকাল অনুষ্ঠিত বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখল, ভোট জালিয়াতি ও প্রহসনের প্রতিবাদে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আজ ৩১ জুলাই ২০১৮ ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিকাল সাড়ে ৪টায় বিরূপ আবাহাওয়া উপেক্ষা করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবি’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, একের পর এক স্থানীয় নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি করে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন বিষয়টিতে তামাশায় পরিণত করেছে। গতকাল কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি, আগে থেকে ঠিক করা ফলাফল ঘোষণার জন্য প্রহসন মঞ্চস্থ হয়েছে। ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিকভাবে অনুষ্ঠিত করার ইচ্ছা সরকারের আছে বলে মনে হয় না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন। তারা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে আজ্ঞাবহ ভূমিকা নিয়েছে। এই নির্বাচন কমিশনের আর সামান্য বিশ্বাসযোগ্যতাও অবশিষ্ট নেই।
তিনি অবিলম্বে তিন সিটি নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, যদি এসব নির্বাচন বাতিল না করা হয়, তাহলে আগামী ডিসেম্বরেও কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
কমরেড সেলিম আরও বলেন, ইতিহাস বড় নির্মম, ভোট চোর ভোট ডাকাত চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে পারে না। স্বৈরাচার আইয়ুব শাসনামলে সার্বজনীন ও প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার ছিল না, ইয়াহিয়া ৭০-এর নির্বাচনের ফলাফল মানে নাই। বঙ্গবন্ধু আমলে ভোট কারচুপি করে খন্দকার মোশতাককে বিজয়ী করা হয়েছিল, জিয়া-এরশাদ আমলে হ্যাঁ ও না ভোটের নাটক আমরা দেখেছি। সবাই চেয়েছিল চিরদিনের জন্য ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে, কেউ পারেনি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সহ-সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রফিকুজ্জামান লায়েক, মিহির ঘোষ, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জলি তালুকদার প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে অভিযোগ করা হয়, বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, হামলা, গুলিবর্ষণ, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, প্রার্থীদের আহত করার ঘটনা ঘটেছে। ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করে নৌকা প্রতীকে সীল মারা, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো, ব্যালট কেড়ে নেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ করা হলেও নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে ন্যূনতম কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে তিন সিটিতে অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়ার দাবি জানানো হয়।