Revolutionary democratic transformation towards socialism

কার্ল মার্কস-এর দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীতে সিপিবি-বাসদ এর আলোচনা সভায় বক্তারা মহামতি কার্ল মার্কস ছিলেন মানবমুক্তির সংগ্রামের পথ প্রদর্শক


মহামতি কার্ল মার্কসের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সিপিবি-বাসদ-এর উদ্যোগে এক আলোচনা সভা আজ ৫ মে, শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেল ৪টায় তোপখানা রোডের বিএমএ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সভায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, সিপিবির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কমরেড মনজুরুল আহসান খান, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোঃ শাহ আলম, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক ও বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন। সভা পরিচালনা করেন বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। আলোচনা সভার শুরুতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী এবং চারণ সাংস্কৃতি কেন্দ্রের শিল্পীরা। কার্ল মার্কসের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা মো. কিবরিয়া। আলোচনা সভায় সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং মানবমুক্তির সংগ্রামে মহামতি কার্ল মার্কস ছিলেন উজ্জ্বল বাতিঘর এবং পথপ্রদর্শক। দর্শন, অর্থশাস্ত্র এবং সামাজিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিপ্লবী চিন্তার প্রয়োগ ঘটানোর পাশাপাশি তিনি সমাজপ্রগতির বিপ্লবী সংগ্রামকে দিয়েছেন বিপ্লবী পথনির্দেশনা। দর্শনের জটিল জগতকে তিনি মানুষের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের উপযোগী করে গড়ে তুলেছিলেন। শ্রমিক শ্রেণির লড়াইকে অগ্রসর করার মধ্য দিয়ে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল মানুষের মুক্তির যে দিশা দেখিয়েছেন কার্ল মার্কস, আজো তা দুনিয়ার মুক্তিকামী মানুষকে লড়াইয়ের দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। কমরেড সেলিম আরো

বলেন, মার্কস মেহনতি মানুষের সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি, শ্রেণিবিভক্ত সমাজে শ্রমিকশ্রেণির হাতে তাদের মতাদর্শিক হাতিয়ার তুলে দিয়েছেন। প্রচলিত সমাজব্যবস্থার বিশ্লেষণ, বিপ্লবী তত্ত্ব নির্মাণ, দর্শনকে মানুষের জন্য কাজে লাগানোর মধ্য দিয়ে মার্কস দুনিয়ার একজন একজন শ্রেষ্ঠ চিন্তক ও দার্শনিক হিসেবে সর্বমহলে স্বীকৃত হয়েছেন। বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, কার্ল মার্কস তার জন্মের দুইশ বছর পরে আজও ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক। পুঁজিবাদ আজ যখন মুক্তবাজার অর্থনীতি, উদারনীতিবাদ, বিশ্বায়নের নামে নতুন নতুন চেহারায় তাদের শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে, সেসময় কার্ল মার্কস আরো প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন। কার্ল মার্কসের বিপ্লবী জীবন ও তার দেখানো পথ থেকে শিক্ষা নিয়ে শোষণহীন ‘মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজ’ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে অগ্রসর করার মধ্য দিয়ে কার্ল মার্কসের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন করা সম্ভব হবে। আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তারা কার্ল মার্কসের শিক্ষা থেকেই বাংলাদেশের মেহনতি মানুষের মুক্তির পথ খুঁজতে হবে। বক্তারা আরোও বলেন, পৃথিবী থেকে একদিন পুঁজিবাদ বিলুপ্তি হয়ে সমাজতন্ত্র এবং সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠিত হবেই। বর্তমান বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থা বদলাতে গেলে ও পুঁজিবাদকে বুঝতে হলে মার্কসকে পড়তে হবে। বিশ্ব পুঁজিবাদকে পরাজিত করতে আজ দুনিয়ার সকল মানুষকে এক হতে হবে। আলোচনা সভা শেষে, রণেশ দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে ‘মুক্তি মশাল’ শীর্ষক একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে আজ বায়তুল মোকাররম মার্কেটের সামনে সিটি কর্পোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে বোলডোজারে নিহত হকার নেতা জামাল হোসেনের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..