
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ-এর প্রেস ব্রিফ্রিং-এ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দুই জোটের উপর মানুষের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু মানুষ তার সামনে কোন দৃশ্যমান গ্রহণযোগ্য বিকল্প শক্তি পাচ্ছে না। ফলে রাজনীতিতে চলছে গভীর শূন্যতা। এই শূন্যতা পূরণে কমিউনিস্ট পার্টি ও বাসদ তাদের নিজ নিজ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি সিপিবি-বাসদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম জোরদার করছে। এই সংগ্রামে অন্যান্য বাম শক্তিকে সঙ্গে আনার উদ্যোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অন্যান্য উদার গণতন্ত্রী শক্তি, ব্যক্তিকে যুগপৎ সমান্তরাল কর্মসূচির ভিত্তিতে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি গড়ে তোলাই বর্তমান মুহূর্তের প্রধান রাজনৈতিক কর্তব্য। এই কর্তব্যের অংশ হিসেবে সিপিবি-বাসদ ২৭ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ আহ্বান করেছে। দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সমাবেশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই জাতীয় সমাবেশ সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
আজ ২৫ ফ্রেব্রুয়ারি কমরেড মণি সিংহ সড়কস্থ মুক্তিভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফ্রিং নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। প্রেস ব্রিফিং-এ লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাসদ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাহেদুল হক মিলু, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন।
লিখিত বক্তব্যে কমরেড জাফর বলেন, দেশের মানুষ আজ গভীর সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। একদিকে বিএনপি-জামাতের বোমা, পেট্রোল বোমার আঘাতে মানুষ ক্ষত-বিক্ষত। দেশ জ্বলছে-মানুষ মরছে। অন্যদিকে এই সংঘাত, সহিংসতা নিরসনে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। র্যা ব, পুলিশ, বিজিবি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করছে সরকার। গুম, খুন, ক্রসফায়ার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। দেশের চলমান সংকট নিছক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে দমন-পীড়ন করে সমাধানের চেষ্টা করলে কোন শুভ ফল হবে না। শেষ বিচারে লাভবান হবে উগ্র জঙ্গিবাদী রাজনৈতিক শক্তি। তাই আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে সংকটের সমাধান করার দাবি আজ সময়ের দাবি।
তিনি আরো বলেন, মানুষ বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও-এই আওয়াজ নিয়ে আমাদের জাতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সমাবেশ থেকে দুই জোটের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হবে। পেট্রোল বোমায় মানুষ খুন বন্ধ করা, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করা, গুম-খুন-ক্রসফায়ার বন্ধ করা, সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান করা ও জামাত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে অনুষ্ঠিত হবে এই সমাবেশ। এর সাথে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু করা এবং সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানানো হবে এই সমাবেশ থেকে। দলীয়করণ-দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ করা, মুক্তিযুদ্ধের ধারায় দেশকে ফিরিয়ে আনা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-ডিজেল-কেরোসিনের দাম না বাড়ানো, শ্রমিকের মজুরি ৮ হাজার টাকা প্রদানসহ কৃষক-ক্ষেতমজুর, নারীসমাজ, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিকারসহ জনগণের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বার্তা প্রেরক
কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগ