Revolutionary democratic transformation towards socialism

লুটপাটবিরোধী সমাবেশে বামপন্থি নেতৃবৃন্দ সরকার দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচারের প্রধান মদতদাতা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মাফিয়ারা দেশ-জনগণকে জিম্মি করে ফেলেছে


ক্ষমতাসীন দলগুলো বাংলাদেশকে লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করেছে। প্রতিবছর ৭২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এক লক্ষ কোটি টাকার উপর খেলাপী ঋণ রয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। মহাজোট সরকারের আমলে সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেংকারি, বেসিক ব্যাংক কেলেংকারি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ কেলেংকারি, ডেসটিনি-যুবক কেলেংকারি, বিভিন্ন সমবায় সমিতির নানা ঘটনায় সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে গেছে। আর এসব দুর্নীতি-লুটপাটের প্রধান মদদদাতা হচ্ছে সরকার। ঘুষ-দুর্নীতি, লুটপাট-দখলদারিত্ব, অর্থপাচার-ব্যাংক ডাকাতি রুখে দাঁড়ানোর দাবিতে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার দেশব্যাপি আহুত বিক্ষোভ-সমাবেশের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে বামপন্থি নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। আজ বিকাল সাড়ে চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক। বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মো. শাহ আলম, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট

লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু, সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মাকর্সবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক। সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ফ্লাইওভার, মহাসড়ক, সেতু নির্মাণের মত মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতির মচ্ছব চলছে। বিএনপি আমলে দেশবাসী ‘হাওয়া ভবন’ এর লুটপাট দেখেছে এখন চলছে ‘খাওয়া বাহিনী’র লুটপাট। গত ৪৬ বছর ধরে যারা ক্ষমতায় আছে তারা তাদের দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থক-স্বজনদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটের ব্যবস্থা করে দিয়ে হাজার হাজার লুটেরা ধনিক সৃষ্টি করেছে। ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে লুটেরাদের শেয়ার বাজার লুটের সুযোগ করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সর্বস্বান্ত করা হয়েছে। লুটের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের

পাচারের টাকায় বিদেশের ক্যাসিনোতে জুয়া খেলছে লুটেরারা। সুইস ব্যাংকের একাউন্টে ব্যালেন্স বাড়ছে লুটেরাদের। বড় লুটেরারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপে বাড়ি কিনছে। ছোট লুটেরারা মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় বাড়ি বানাচ্ছে। রাস্তার মাস্তান আর রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটকারীরা এক হয়ে বাংলাদেশের জনগণকে জিম্মি করে ফেলেছে। দুদককে কাগুজে বাঘে পরিণত করা হয়েছে। স্বাধীনভাবে কর্মপরিচালনার পরিবর্তে ক্ষমতাসীনদের বিরোধী পক্ষকে দমনের কমিশনে পরিণত হয়েছে দুদক। বামপন্থি নেতৃবৃন্দ লুটেরা গোষ্ঠির কবল থেকে দেশ ও জনগণকে মুক্ত করার জন্য গণআন্দোলন এবং গণআন্দোলনকে গণ-অভ্যূত্থানে পরিণত করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। পরবর্তী কর্মসূচি সমাবেশ থেকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ, নারী-শিশু নির্যাতন, খুন-ধর্ষণ, সামাজিক বর্বরতা রুখে দাঁড়ানোর দাবিতে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার আহ্বানে আগামী ১৯ আগস্ট, শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ-সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি: ১৯ আগস্ট, শনিবার, বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..