Revolutionary democratic transformation towards socialism

নারী-গণসমাবেশে কমরেড সেলিম নারীর প্রতি সকল প্রকার শোষণ-বৈষম্য রোধ করতে প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দেশের নারী সমাজ বর্তমানে আরো বেশি করে শোষণ ও ভোগের শিকার হয়ে পড়েছে। সস্তা শ্রমের লোভে তাদেরকে কম মজুরিতে হাড় ভাঙা পরিশ্রম করিয়ে তাদের জীবনী শক্তি নিঃশেষ করা হচ্ছে। তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে বাড়তি মুনাফার লোভনীয় উৎস হিসেবে। অন্যদিকে বজার অর্থনীতির প্রভাবে সমাজে যে ভোগবাদ, দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি কালো ছায়া নেমে এসেছে, তার প্রধান শিকার হয়ে পড়েছে নারী সমাজ। নারীর সম্ভ্রম এমন ভয়ঙ্কর হামলার মুখে। তাদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। নারীর প্রতি সকল প্রকার শোষণ-বৈষম্য রোধ করতে আদর্শবাদী

প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নারী সেলের উদ্যোগে আজ ১০ মার্চ বিকেলে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত নারী-গণসমাবেশে কমরেড সেলিম এসব কথা বলেন। সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় নারী সেলের আহ্বায়ক লক্ষ্মী চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এবং নারীনেত্রী মাকছুদা আক্তার লাইলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সিপিবি নারী সেলের নেত্রী জলি তালুকদার, লুনা নূর, তাহমিনা ইয়াসমিন নীলা, লাকী আক্তার, নারায়ণগঞ্জের নারী সেলের নেত্রী শাহানারা বেগম। সমাবেশের শুরুতে গণসঙ্গীত পরিবেশন

করেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের শিল্পীরা। এছাড়া আবৃত্তি করেন পুষ্পিতা রায়। নারী-গণসমাবেশে কমরেড সেলিম আরো বলেন, লুটেরা বুর্জোয়া শ্রেণির স্বার্থ রক্ষাকারী কোনো সরকারের পক্ষে নারীর অধিকার, নারী মুক্তি তো দূরের কথা, নারীর ন্যূনতম নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করাও সম্ভব নয়। দেশের শ্রমজীবী মানুষসহ সব নারীকে তাদের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করতে হবে। নিরাপত্তার জন্যে নিজস্ব প্রতিরোধ বাহিনী সংগঠিত করে ‘পাল্টা আঘাত’ করতে হবে। নারীমুক্তি বাদ দিয়ে সমাজের সার্বিক মুক্তি সম্ভব নয়। প্রচলিত সমাজ টিকিয়ে রেখে নারীমুক্তি সম্ভব নয়। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার

মাধ্যমেই সার্বিক নারী মুক্তি সম্ভব। তাই নারী মুক্তির লক্ষ্যে সমাজের বিপ্লবী পরিবর্তনের জন্য লড়াই করতে হবে। সেই লক্ষ্যে কমিউনিস্ট পার্টিকে শক্তিশালী করতে হবে। কমরেড সেলিম দেশের এবং সারা নারী সমাজের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। অন্য বক্তারা বলেন, গণতন্ত্রহীনতা, বিচারহীনতায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নারী। মৌলবাদের হিংস্র থাবায় আক্রান্ত নারীর স্বাধীনতা। মিডিয়া নারীকে পণ্যে পরিণত করছে। সাম্রাজ্যবাদ, মুক্তবাজার আর কর্পোরেট সংস্কৃতির ভোগবাদী জৌলুশে নারী এখন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সকল অরাজকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই নারী মুক্তির লড়াইকে অগ্রসর

করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, নারীর অবদানের তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি ঘটেছে। কিন্তু নারীর প্রতি বৈষম্য, শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চণা বেড়েই চলেছে। নারীর অনেক অবদানেরই কোনো স্বীকৃতি নেই। শোষিতদের মধ্যে নারী সবচেয়ে শোষিত। নারীর অবদান ও অধিকারকে অগ্রাহ্য করে সমাজের প্রগতি সম্ভব নয়। সাম্রাজ্যবাদ, মৌলবাদ, প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে প্রগতির ঝাণ্ডা নিয়ে নারীমুক্তির লড়াইকে বেগবান করতে হবে। তিনি সরকার ঘোষিত বাল্যবিবাহ আইনের সমালোচনা করে এ আইনকে অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান। নারী-গণসমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..