Revolutionary democratic transformation towards socialism

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আধাবেলার হরতাল সর্বাত্মক সফল করায় ঢাকাবাসীকে সিপিবি-বাসদ-এর অভিনন্দন দাবি আদায়ে আগামী ১৫ মার্চ জ্বালানী মন্ত্রণালয় ঘেরাও


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ-এর ডাকে রাজধানীতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে অর্ধদিবস হরতাল সফল করায় ঢাকাবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান আজ এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ের অন্য যে কোন হরতালের তুলনায় এবার হরতালে জনগণের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল লক্ষ্যনীয়ভাবে বেশি। জনগণ একথা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি কোনোমতেই মানতে রাজী নয়। নেতৃবৃন্দ একইসাথে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে দেশের সর্বত্র প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত করার জন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেছেন যে, ঢাকাবাসী গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজকের হরতালে যে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে তা সঙ্গী করে সিপিবি-বাসদ জনগণের দুর্ভোগ মোচনে ও তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে। সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেছেন যে, গ্যাসের বর্ধিতমূল্য প্রত্যাহার করা না হলে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে তা অব্যাহত থাকবে ও আরো জোরদার হবে। পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষিত সিপিবি ও বাসদের পক্ষ থেকে আজ হরতাল শেষে নিম্নলিখিত পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছেঃ ১. গ্যাস-বিদ্যুৎ-কেরসিন-ডিজেল-পেট্রলের দাম বৃদ্ধি ও জ্বালানী ক্ষেত্রে দুর্নীতি-লুটপাট-নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ১-১৪ মার্চ দেশব্যাপী ‘প্রতিরোধ পক্ষ’ পালিত হবে। প্রতিরোধ পক্ষে সারাদেশে মিছিল, বিক্ষোভ, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, সুধী সমাবেশ ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হবে। সর্বত্র জ্বালানী মূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হবে। ২. ১৫ মার্চ ২০১৭, বুধবার একই দাবিতে ঢাকায় জ্বালানী মন্ত্রণালয় ঘেরাও করা হবে। প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ঢাকায় হরতাল শেষে প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বাসদ সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান এবং সিপিবি সাধারণ সম্পাদক কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ জনগণের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন। এই সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ ও সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স। তার আগে আজ সকালে হরতালের সমর্থনে পল্টন, শান্তিনগর, মিরপুর, মহম্মদপুর, ধানমন্ডি, লালবাগ, সাইন্স ল্যাব, আজিমপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিপিবি-বাসদ-এর কর্মীরা পিকেটিং করে। কেন্দ্রীয়ভাবে সকাল ৬টা থেকে পল্টন এলাকায় লাগাতার মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নেন সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা লক্ষ্মী চক্রবর্তী, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, মন্টু ঘোষ, কাফি রতন, মনিরা বেগম অনু, ফজলুর রহমান, সোহেল আহমেদ, মাকছুদা আক্তার লাইলী, জলি তালুকদার, সাদেকুর রহমান শামীম, সাজেদুল হক রুবেল, হাসান তারিক চৌধুরী সোহেল, লুনা নূর, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, আব্দুর রাজ্জাক, খালেকুজ্জামান লিপন, জুলফিকার আলী, শম্পা বসু প্রমুখ। সকাল ৮টার দিকে শান্তিনগর বাজারের সামনে পুলিশ মিছিলের উপর দিয়ে জোর করে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় শান্তিনগর শাখার কর্মী শফিক মোহাম্মদ মনসুর ও রেজাউল ইসলাম গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। নগরীর শাহবাগে দুপুর ১১টায় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমাবেশে পুলিশ হামলা করে। এসময় লাঠিপেটা, টিয়ার শেলে আক্রান্ত হয়ে অন্তত বিশ জন নেতাকর্মী আহত হন। এসময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন প্রিন্স, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন নেতা সূর্য পলাশসহ সাতজন ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা হয়। সিপিবি-বাসদের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচিতে হামলা ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..