Revolutionary democratic transformation towards socialism

গণঅভ্যুত্থানের নায়ক ছিল সাধারণ ছাত্র-শ্রমিক-জনতা


বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ২০২৪  এর গণঅভ্যুত্থানের নায়ক ছিল সাধারণ ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। এক বছর পর এসে দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে না। বেকারত্ব বাড়ছে, দেশে প্রতি চার জনের এক জন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যতার মধ্যে বসবাস করছে। এ অবস্থা পরিবর্তনে এ বছরের মধ্যে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম অগ্রসর করতে হবে। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে গণতন্ত্র ও বৈষম্যহীন সমাজের স্লোগান সামনে এলেও বৈষম্যমুক্তির পথ নিয়ে কোনো আলোচনা হচ্ছে না। বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের কথা হলেও কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচনসহ জনস্বার্থের বিষয় নিয়ে সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়নি। নারী অধিকার নিয়ে কথা হলেও এর বিরুদ্ধাচারণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, গণঅভ্যুত্থানকে ব্যবহার করে দেশের রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল চক্র সক্রিয় হয়েছে। এরা মহান মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করে এর অর্জন, ইতিহাস-ঐতিহ্য

মুছে ফেলতে চাইছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেই নিজেকে বিতর্কিত করে ফেলেছে। বিশেষ দল ও গোষ্ঠীর প্রতি তাদের পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে। 

নেতৃবৃন্দ দেশের সংকট মোচনে গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এ বছরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, যেকোনো অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হবে আত্মঘাতী। দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে অগ্রসর করতে এই মুহূর্তে দরকার, নির্বাচিত সরকার। 

নেতৃবৃন্দ ২০২৪ এর হত্যাকাণ্ডের বিচার, আহতদের পুনর্বাসন এবং ধ্বংস করা মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনা, ইতিহাস-ঐতিহ্য পুনঃনির্মাণের দাবি জানান। 

নেতৃবৃন্দ সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, সরকার দেশের সাধারণ জনগণের নয়, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। এখতিয়ার বহির্ভুতভাবে গোপন বাণিজ্য চুক্তি, রাখাইনে করিডোর, বিদেশিদের বন্দর লিজ দেওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে এগুচ্ছে। নেতৃবৃন্দ এই ধরনের দেশের স্বার্থবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান

জানান।
 
নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হচ্ছে। ঐ ঘোষণাপত্রের বিষয়ে আমাদের সাথে কথা বলা হয়নি। বিশেষ দু’একটি দলের সাথে কথা বলে যে ঘোষণাপত্র করা হলো, তার দায়-দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি না। এ জন্য ঐ সভায় আমন্ত্রণ পেয়েও আমরা যোগ দিচ্ছি না। 

আজ ৫ আগস্ট  ২০২৫, মঙ্গলবার গণঅভ্যুত্থান দিবসে বিকেল ৪.৩০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম-গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী)’র প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। 

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..