Revolutionary democratic transformation towards socialism

শ্রমিকদের করোনা টেস্ট, আক্রান্তদের চিকিৎসার দায়িত্ব, মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে বাম জোট


স্বাস্থ্য বিধি, গণপরিবহন ও টিকার আয়োজন না করে করোনা মহামারীর এই চূড়ান্ত পর্যায়ে রপ্তানিমুখী কারখানা খুলে দেওয়ার গণবিরোধী ও অমানবিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে আজ ১ আগস্ট ২০২১  সকাল ১১:৩০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম নেতা বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন। বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড আব্দুল্লাহ আল কাফী রতন, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা শিশু, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের নেতা কমরেড নজরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য কমরেড বাচ্চু ভুইয়া, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড রুবেল হেসেন। সভা পরিচালনা করেন বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন।

সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, করোনা মহামারীতে দেশে যখন প্রতিদিন ২০০-২৫০ মানুষ মারা যাচ্ছে এবং ১৫/১৬ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, করোনা যখন ঊর্ধ্বমুখী, তার প্রভাবে গোটা দেশ যখন লকডাউনে, সেই সময় মালিকের মুনাফার স্বার্থে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়াই ২৪ ঘণ্টার নোটিশে একতরফাভাবে রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত চরম অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী, স্বাস্থ্যবিধি বহির্ভূত ও অমানবিক।

করোনা মহামারীতে সমস্ত আমলা-মন্ত্রীরা ঘরে বসে অনলাইনে নিরাপদে থেকে অফিস চালাচ্ছেন। গোটা দেশকে লকডাউনে রেখে শ্রমজীবী মানুষকে করোনা মহামারীতে অত্যন্ত অমানবিক কায়দায়, ট্রাকের মধ্যে, কাভার্ড ভ্যানের মধ্যে গাদাগাদি করে পায়ে হেঁটে বৃষ্টিতে ভিজে হাজার হাজার টাকা খরচ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কারখানা চালু করা কোন যুক্তিতে।

সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যেও দেশের অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধির চাকা সচল রাখলেও গত ১৫ মাসের করোনা মহামারীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা- না রাষ্ট্রের কাছে না মালিকের কাছে কোন ধরনের সহযোগিতা পেয়েছে। মালিক শ্রমিকদেরকে তাদের মুনাফা অর্জনের যন্ত্র হিসেবে দেখে। সরকার দেখে রপ্তানি বাড়ানো আর প্রবৃদ্ধি অর্জনের যন্ত্র হিসেবে। তাদেরকে মানুষ হিসেবে দেখে না।
বক্তাগণ সকল শ্রমিককে কারখানা গেটে করোনা পরীক্ষা ও টিকা দান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালু, ঝুঁকি ভাতা প্রদান, করোনা আক্রান্ত শ্রমিকদের মালিক ও সরকারের দায়িত্বে আইসোলেশন ও চিকিৎসা ব্যবস্থা, করোনায় মৃত্যুতে সরকারি কর্মচারীদের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জোর দাবি জানান। অন্যথায় বাম গণতান্ত্রিক জোট বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে যে ভয়ানক পরিস্থিরিতি সৃষ্টি হবে তার দায় মালিক ও সরকারকেই বহন করতে হবে। সমাবেশ শেষে একটি  বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব তোপখানা রোড হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..