বাম জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত ১৩ সেপ্টেম্বর সারাদেশে জেলায় জেলায় সংহতি সমাবেশ সফল করার আহ্বান

Posted: 08 সেপ্টেম্বর, 2020

বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভা আজ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ সকাল ১১টায় ২৩/২ তোপখানা রোডস্থ বাসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড কাফি রতন, কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী)’র নেতা কমরেড মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুইয়া, মনিরুদ্দিন পাপ্পু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান। সভার এক প্রস্তাবে নারায়ণগঞ্জের তল্লায় মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণে সাধারণ মুসল্লীদের নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। সভায় নিহত-আহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং গ্যাস বিস্ফোরণের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। সভার অপর এক প্রস্তাবে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন তারেক আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, জিয়াউদ্দিন তারেক আলীর মৃত্যুতে জাতি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক চেতনা সম্পন্ন দেশপ্রেমিককে হারালো। তার অপূরিত স্বপ্ন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা শোষণহীন সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নেয়ার জন্য সভায় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। সভার আরেক প্রস্তাবে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তাহীনতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং কক্সবাজারে মেজর সিনহার হত্যাকা-, ঘোড়াঘাটে ইউএনও’র ওপর ন্যাক্কার জনক হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয় বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম, খুন অব্যাহতভাবে সংগঠিত হলেও এসবের কোন সুষ্ঠুবিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়াতেই একের পর এক হত্যা ও হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে। সভার প্রস্তাবে বলা হয়, রাষ্ট্র ও সরকারের অগণতান্ত্রিক শাসন প্রশাসন ব্যবস্থার কারণেই এসব ঘটছে। ফলে বর্তমান ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সকল গণতান্ত্রিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। সভার অপর এক প্রস্তাবে চাল, পিয়াজ, সবজিসহ নিত্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয় বর্তমান সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার কোন উদ্যোগ না নিয়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষা করছে। প্রস্তাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় রাখার দাবি জানিয়ে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধের আহ্বান জানান। সভার এক প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় ২৫টি পাটকল বন্ধের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, পিপিপি বা লীজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় পাটকল চালু করা, বিজেএমসি’র মাথাভারী প্রশাসন হ্রাস করা, পাটকল লোকসানের জন্য দায়ী সরকারের ভুলনীতি, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ এবং শ্রমিকদের ৬ সপ্তাহের হাজিরা বেতন, ঈদ বোনাসসহ সকল বকেয়া অবিলম্বে প্রদান এবং সরকারি-বেসরকারি সকল পাটকলে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করার দাবি জানানো হয় এবং উপরোক্ত দাবিতে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ সারাদেশে জেলায় জেলায় সংহতি সমাবেশ সফল করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।