সিপিবি’র ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরি সভা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সম্ভাব্য সকল প্রতিষেধক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান সাংবাদিক নির্যাতন, গুমের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান

Posted: 15 মার্চ, 2020

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে আজ ১৫ মার্চ সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতি আলোচনা করা হয়। আলোচনায় নেতৃবৃন্দ করোনাভাইরাস জনিত সংকট মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নেতৃবৃন্দ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সকল হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলাসহ সকল ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অগ্রিম গড়ে তোলার উপর জোর দেন। যাতে আক্রান্ত হলে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়। নেতৃবৃন্দ করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে মাস্ক ও সেনিটাইজেশন ব্যবসায়ীদের বাজার থেকে তা তুলে নিয়ে মজুত গড়ে তোলা এবং বাজার স্বল্পতার কথা বলে উচ্চমূল্যে বিক্রি করার বিরুদ্ধে এখনই অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠোর হস্তে দমনের আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ পার্টি কমরেডসহ দেশের তরুণদের সম্ভাব্য করোনাভাইরাস আক্রমণ মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান। সেইসাথে এখন থেকেই প্রচারণার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে অনুরোধ জানানো হয়। সাংবাদিক নির্যাতন ও গুমের বিরুদ্ধে সিপিবি’র ক্ষোভ বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিপনের উপর ডেপুটি কমিশনার সুলতানা পারভীনের নির্দেশে যে অমানবিক নির্যাতন করা হয় তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান সিপিবি নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, সংবাদ প্রকাশের কারণে এক বছর পর ডিসি’র নির্দেশে অবৈধভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাড়ীর দরজা ভেঙ্গে পরিবারের সদস্যদের সামনে থেকে সাংবাদিককে তুলে নিয়ে আসা ঔপনিবেশিক যুগের কথা মনে করিয়ে দেয়। বর্তমান প্রশাসন আমলারা অনেকেই সরকারের প্রশ্রয়ে দুর্বিনীত ও দুর্বৃত্তের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি ডিসির নামে নামকরণের খবর প্রকাশ করায় ডিসি বাংলোয় নগ্ন করে রিপনের উপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতা ও ফ্যাসিস্ট কর্মকা-। নেতৃবৃন্দ বলেন, শুধুমাত্র প্রত্যাহার করাটা কোন শাস্তি হতে পারে না। তারা ডিসি সুলতানা পারভীন ও অবৈধ মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী মেজিস্ট্রেটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং চাকুরী থেকে অপসারণ দাবি করেন। নব্বইর দশকে এরশাদ স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মী ও দেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্র সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল সরকারি দলের নেতৃবৃন্দের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে সোচ্চার হওয়ায় তাকে গুম করা হয়েছে। কয়েকদিন যাবৎ তিনি নিখোঁজ। নেতৃবৃন্দ বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান সম্মত। শুধুমাত্র মত প্রকাশের জন্য কোন মানুষ গুম হয়ে যাবে তা কাম্য নয়। এটা কেবল সম্ভব ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সাংবাদিক কাজলকে খুঁজে বের করে নিরাপদে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ দেশবাসীকে মানুষের মৌলিক অধিকার ক্ষুণœকারী সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান।