বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
বুর্জোয়া শাসকদের হাতে মুক্তিযুদ্ধের অর্জন নিরাপদ নয়
Posted: 15 ডিসেম্বর, 2019
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, প্রায় অর্ধশতাব্দীর অভিজ্ঞতায় আজ একথা প্রমাণিত যে, মহান মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো বুর্জোয়া দলগুলোর হাতে নিরাপদ নয়। ৩০ লাখ শহীদের আত্মদানের মাধ্যমে একাত্তরে যেসব ঐতিহাসিক প্রগতি অভিমুখীন বিজয়ের অমূল্য সম্পদ অর্জিত হয়েছিল, বুর্জোয়া শাসকদের ক্ষমাহীন ব্যর্থতা, দেউলিয়াপনা ও অপরাধমূলক কর্মকাÐের ফলে তার প্রায় সবটুকুই হাতছাড়া হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আজ দেশ পরিচালিত হচ্ছে অনেকটাই মুক্তিযুদ্ধের উল্টোমুখী পাকিস্তানি ধারায়।
সভায় কমরেড সেলিম আরো বলেন, বুর্জোয়ারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ-চেতনার পতাকাকে আজ পরিত্যাগ ও ভুলূণ্ঠিত করলেও সেই পতাকার ক্ষয় নেই। বুর্জোয়ারা সেটিকে পরিত্যাগ করলেও কমিউনিস্ট পর্টি ও বামপন্থীরা সেই রক্তখচিত পতাকাকে উর্ধ্বে তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ-চেতনায় দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আছে। এই লক্ষ্যে কমিউনিস্ট ও বামপন্থীরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপন সংগ্রাম করে যাবে।
আজ ১৫ ডিসেম্বর, রবিবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে সিপিবি আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৪৯ বছরে সংবিধানের ৪ মূলনীতি ভুলুণ্ঠিত। দেশের সংবিধান সাম্প্রদায়িকীকরণ কা হয়েছে। স্বাধীনতার পূর্বের কোটিপতি ২২ পরিবারের জায়গায় আজ লক্ষ-কোটি পরিবার জন্ম হয়েছে। অন্যদিকে যারা দেশের জন্য জীবনপণ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে সেই সাধারণ গরিব মানুষ বিজয়ের প্রকৃত মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ধনী-গরিবের বৈষম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। তিনি সকলকে দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে দেশে চলমান দুই মেরুকরণের বাইরে বাম গণতান্ত্রিক শক্তির বিকল্প গড়ে তোলার আহŸান জানান।
সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তথ্য নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। মা, মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, কল-কারখানা, রেলের শ্রমিক, কৃষকসহ দেশের আপামর জনগণ মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সিপিবি’র পক্ষ থেকে জেলায়-উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করা ও ট্রেনিং পরিচালনার করা হয়।
সিপিবি’ অন্যতম সম্পাদক আহসান হাবিব লাবলুর পরিচালনায় সভায় শ্রমিক নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা কমরেড লুৎফর রহমান, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কামরুল আহসান খান, ক্ষেতমজুর সমিতির প্রাক্তন সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. জিয়াদ আল মালুম বক্তৃতা করেন।
সভার শুরুতে উদীচীর শিল্পীবৃন্দ সঙ্গীত পরিবেশন করেন।