নুসরাতের জবানবন্দির ভিত্তিতেই অপরাধীকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে সমাজের সর্বস্তরের নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার

Posted: 11 এপ্রিল, 2019

সারাদেশে ধর্ষণ, খুন এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে আর বিচার চাইবার সময় নাই এবার রুখে দাঁড়াতে হবে। মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যাকারীদের এবং সূবর্ণচরে গণধর্ষণকারীর বিচারের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতকে যে নির্মমতার শিকার হয়ে চলে যেতে হয়েছে তার জন্য ভণ্ড মাদ্রাসা শিক্ষকসহ সরকার, প্রশাসন, শিক্ষা ব্যবস্থা, পুলিশ সকলেই দায়ী। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা দায়ের করার পর নুসরাতকে কোনো ধরনের আইনী সহায়তা না দিয়ে সোনাগাজী থানার ওসিসহ পুলিশ অপরাধীর পক্ষে যে জঘন্য ভূমিকা রেখেছে তারই ধারাবাহিকতায় নুসরাতকে আজ জীবন দিতে হলো। অন্যদিকে যৌন নিপীড়ক অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ তার চক্রকে রক্ষা করার জন্য যারা এখনও আইনী ও সামাজিকভাবে সহায়তা করে যাচ্ছেন তারাও হত্যাকাণ্ডের দায়ভার এড়াতে পারেন না। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে সিরাজউদ্দৌল্লার ফাঁসির দাবি জানিয়ে বলেন, কোন প্রমাণের দরকার নাই, নুসরাত নিজের মুখেই যে জবানবন্দি দিয়ে গেছে তার ভিত্তিতেই এই যৌন নিপীড়ক ও খুনী চক্রকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব। এ বিষয়টি নিয়ে কোন রকম দীর্ঘসূত্রিতা বা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। বক্তারা আরও বলেন, সোনাগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্রী যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করায় তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়, সুর্বণচরে গণধর্ষণ করা হয় আর প্রধানমন্ত্রী শুধু ব্যক্তিগতভাবে তাদের দায়িত্ব নিয়ে মহান সাজার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষক ও খুনীরা নানাভাবে তাঁর এবং তাঁর সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বহাল তবিয়তে আছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই এই ধরনের মহান সাজার আচরণ না করে বরং আইনকে তার নিজের গতিতে চলতে দিন। কোন হস্তক্ষেপ বা পৃষ্ঠপোষকতা করবেন না, তার ফলাফল কিছুতেই সুখকর হবে না। সিপিবি নারী সেল ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সিপিবি কেন্দ্রীয় নেত্রী ও নারী সেলের সদস্য কমরেড মাকছুদা আক্তার লাইলীর সভাপতিত্বে ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শম্পা বসুর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ও নারী সেলের নেত্রী জলি তালুকদার, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফেরামের সাংগঠনিক সম্পাদক দিলরুবা নুরী, সিপিবি কেন্দ্রীয় নেত্রী ও নারী সেলের নেত্রী লুনা নূর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম মহানগরের নেত্রী রুখসানা আফরোজ আশা, সিপিবি নেত্রী রাশিদা কুদ্দুস রানু প্রমুখ। সংহতি বক্তব্য রাখেন শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর সভাপতি বহ্নি শিখা জামালী। বক্তারা বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে কোন ধর্ষণ নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বা বিচার হয়নি, সমাজের সর্বস্তরে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও বিচারহীনতা বিরাজ করছে। অন্যদিকে যা পড়ানো হয় এ কওমী মাদ্রাসায় বা নারীর সম্পর্কে যা ধারণা দেওয়া হয়, তা একেবারেই বাংলাদেশের সংবিধানের বিরোধী। এমনকি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হচ্ছে, যা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। বক্তারা, যাদের মদদে-আশ্রয়ে সোনাগাজীর অবুঝ নারী শিক্ষার্থীরা এ নরপিশাচের পক্ষে রাস্তায় নেমেছে তাদেরকেও খুঁজে বের করেও বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।