সহিংসতা বন্ধ, রাজনৈতিক সমাধান ও জামাত নিষিদ্ধের দাবিতে সিপিবি-বাসদের বিক্ষোভ পেট্রোল বোমার আঘাতে মানুষ হত্যার অধিকার কারো নেই অচলাবস্থা কাটাতে রাজনৈতিক সমাধানের দায়িত্ব সরকারের

Posted: 13 ফেব্রুয়ারী, 2015

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, খালেদা জিয়ার আন্দোলন করার অধিকার থাকলেও, পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যার অধিকার তার বা অন্য কারো থাকতে পারে না। একই সাথে একথাও বলতে হয় যে, পেট্রোল বোমার নাশকতা কঠোর হাতে দমনের দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু তা দমনের নামে আন্দোলন-সংগ্রাম দমন করার কোন অধিকার সরকারের থাকতে পারে না। বর্তমান অচলাবস্থা কাটাতে রাজনৈতিক সমাধানের দায়িত্ব সরকারের। অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, চলমান সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান, জামাত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-সমাবেশে কমরেড সেলিম এসব কথা বলেন। বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাহেদুল হক মিলু, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন। সমাবেশে কমরেড সেলিম আরও বলেন, বিএনপির অবরোধ-হরতালের সুযোগে নাশকতা সৃষ্টিকারীরা যে পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষকে দগ্ধ করছে- বিএনপি সে দায় এড়াতে পারে না। কারো হাতে পেট্রোল বোমা পাওয়া গেলে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য দলীয় কর্মীদের প্রকাশ্যে নির্দেশ দেয়ার জন্য তিনি খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। কমরেড সেলিম আরও বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার ও বিচার বহিভূর্ত হত্যাকান্ড, কোল্যাটারেল ড্যামেজ, প্রি এমপটিভ এ্যাটাক, কালেকটিভ পানিশমেন্ট ইত্যাদি চলতে পারে না। আগুন দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা সমাজে সংঘাত ও নৈরাজ্যের আগুনকেই বরং আরো প্রজ্জলিত করবে। সরকার প্রায় দেড় মাস ধরে যে ‘ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করার’ পথ অনুসরণ করছে, তাতে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। নাশকতা সৃষ্টিকারীদের দমন করার কথা বলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমননীতি চালিয়ে নিশ্চিহ্ন করার পথ সহিংস নৈরাজ্যকেই আরও শক্তি যোগাবে। সমাবেশে কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, দেশে সহিংস নাশকতার প্রধান ক্রীড়নক হলো জামায়ত-শিবির ও তাদের লালিত সাম্প্রদায়িক জঙ্গী গোষ্ঠী। এই অপশক্তিকে নির্মূলের প্রতি প্রধান গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। তা না করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কামান দাগার যে পথ সরকার অনুসরণ করছে, তার ফলে জামায়াত-শিবির ও সাম্প্রদায়িক জঙ্গী গোষ্ঠীই সবচেয়ে লাভবান হবে। তিনি অবিলম্বে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। কমরেড জাফর বলেন, অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে সহিংস নাশকতার বিপদ থেকে দেশকে মুক্ত করা সবচেয়ে বড় কাজ। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকলে চলবে না। এরকম অবস্থা যেন বারবার ফিরে-ফিরে না আসে তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক বিরোধ মীমাংসার গণতান্ত্রিক পথ ও পন্থা সম্পর্কে রাজনৈতিক পথেই মীমাংসা করতে হবে। তা না করলে দেশে সংঘাত ও নৈরাজ্যের উৎস থেকেই যাবে। রাজনৈতিকভাবে বর্তমান অচলাবস্থা কাটানোর পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরনো পল্টনে এসে শেষ হয়। বার্তা প্রেরক কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগ