সিপিবি’র আলোচনায় কমরেড সেলিম আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরের বিরুদ্ধে ‘গলাকাটা দ্বন্দ্বে’ লিপ্ত

Posted: 28 জানুয়ারী, 2015

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরের বিরুদ্ধে ‘গলাকাটা দ্বন্দ্বে’ লিপ্ত। গণতান্ত্রিক পথে দ্বন্দ্ব নিরসনের পরিবর্তে তারা দেশকে অব্যাহত সহিংস সংঘাতের ধারায় নিয়ে গেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি দেশ ও জনগণের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। আজ ২৮ জানুয়ারি সকালে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিপিবি একতা শাখার আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। শাখা সভাপতি মোসলেম উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিপিবি সভাপতি বলেন, চলমান সহিংসতার রাজনীতি থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দ্বিদলীয় মেরুকরণের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক ও উদারনৈতিক বিকল্প শক্তি গড়ে তুলতে হবে। রাজনীতির মূলস্রোতে দেশপ্রেমিক ও গণমুখী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ছাড়া চলমান সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে না। কমরেড সেলিম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারিক ধারাবাহিকতা ক্ষুন্ন করে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে জামায়াত দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। এ কারণেই ‘আন্দোলনের’ নামে জনদুর্গতি সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে নাশকতা ও নৈরাজ্যের পথে নিয়ে যেতে জামায়াতের আগ্রহ ও অপতৎপরতাটা সবচেয়ে বেশি। জামায়াতকে আশ্রয় দিয়ে বিএনপি ভয়ঙ্কর এই খেলার সুযোগ করে দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বতর্মান পরিস্থিতিতে বিএনপি যুক্তি দিচ্ছে, সরকার গণতান্ত্রিক পন্থায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের সব পথ কার্যত বন্ধ করে দেওয়ায় চোরাগুপ্তা সহিংসতার পথটিকে সরকার অনিবার্য করে তুলেছে। তাদের এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। ইতিহাস এই শিক্ষাই দেয় যে, গণতন্ত্রের পথে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হলে তার সবচেয়ে বড় ও নির্ভরযোগ্য শক্তি হলো জনগণের শক্তি ও গণসম্পৃক্ত প্রকৃত গণআন্দোলন। শ্রেণিগত সীমাবদ্ধতার কারণে সে ধরনের গণআন্দোলন পরিচালনার শক্তি বিএনপির নেই। আর এক্ষেত্রে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী জামায়াতকে সঙ্গে রেখে ‘গণআন্দোলনের’ চেষ্টা জনগণের মাঝে আন্দোলনের উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে। এ কারণে বিএনপির জামায়াত নির্ভর গণবিচ্ছিন্ন ‘আন্দোলন’ যে ব্যর্থ হবে তা অবধারিত। সিপিবি সভাপতি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিকে প্রধানত রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার পরিবর্তে আওয়ামী লীগ যেভাবে হার্ডলাইনে পুলিশি ব্যবস্থার পথ গ্রহণ করেছে, তা সুযোগসন্ধানীদের নীল নকশার বাস্তবায়নকেই আরও এগিয়ে দিচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ধারাকে রক্ষার জন্য গণতন্ত্রকে সংকুচিত করা নয়, বরং তাকে আরো সম্প্রসারিত করাই সঠিক পদক্ষেপ। কমরেড সেলিম বলেন, দেশে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা গেলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জনগণের ভাগ্য নিয়ে যা খুশি তাই করার সুযোগ পেত না। দেশে ইতিবাচক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হলে প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও জনগণের পক্ষের ধারাকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি এই লক্ষ্যে সকল বাম-গণতান্ত্রিক-দেশপ্রেমিক ও উদারনৈতিক দল ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। কমরেড সেলিম আগামী ৩০ জানুয়ারি ‘দেশ বাঁচাও’ আওয়াজ তুলে সারাদেশে বিক্ষোভ-কর্মসূচি পালনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। বার্তা প্রেরক কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগ