ব্রিটিশবিরোধী
সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষক আন্দোলন, নারী মুক্তির লড়াই- সর্বোপরি
কমিউনিস্ট আন্দোলনের কিংবদন্তী নেত্রী কমরেড হেনা দাসের জন্মশতবার্ষিকীর
আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনে বিকাল ৪ টায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে কমরেড হেনা দাসের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিপিবির
কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির কেন্দ্রীয়
প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী। সঞ্চলনা করেন সিপিবির
কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক কমরেড লুনা নূর।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবি সাবেক সভাপতি
কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড শাহীন
রহমান, এ এন রাশেদা, কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড দিবালোক সিংহ, মহিলা পরিষদের
সভানেত্রী ফওজিয়া মোসলেম, স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী মঞ্জুশ্রী নিয়োগী
প্রমুখ।
সভার শুরুতে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী হেনা দাসের স্মরণে গণসংগীত
পরিবেশন করে। এরপর হেনা দাসের জীবনী উত্থাপন করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির
সদস্য কমরেড লাকী আক্তার।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন
প্রিন্স তার বক্তব্যে বলেন, মানবমুক্তির মহান সংগ্রামে জীবনের শেষ দিন
পর্যন্ত অবিচল ছিলেন কমরেড হেনা দাস। বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তির
সংগ্রামে তিনি ছিলেন অগ্রসৈনিক। এদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নারীদের
রয়েছে সংগ্রামী ভুমিকা। এমনকি সাম্প্রতিক জুলাই অভ্যুত্থানে নারীরাও পালন
করেছে ঐতিহাসিক ভূমিকা। তরুণ নারীদের সিপিবির রাজনীতিতে আগ্রহী করতে সিপিবি
নিরলস কাজ চালিয়ে যাবে। আদর্শিক রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে হেনা দাস আমাদের
অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।
সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
বলেন, কমরেড হেনা দাস ছিলেন একজন জাতীয় নেতা। তিনি ছিলেন একজন সাচ্চা
কমিউনিস্ট। যুগ যুগ ধরে তিনি প্রজন্মের বাতিঘর হয়ে থাকবেন।
মহিলা
পরিষদের সভানেত্রী ফওজিয়া মোসলেম বলেন, কমরেড হেনা দাসের মতো বহুমুখী ধারার
আন্দোলনের অনন্য নেত্রী এদেশে খুবই কম জন্মেছেন। এদেশের প্রগতিশীল
আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছেন কমরেড হেনা দাস। তরুণ
প্রজন্মকে তাঁর বিপ্লবী জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়াও
অন্যান্য বক্তারা বলেন, হেনা দাস ছিলেন আজন্ম এক সংগ্রামী যোদ্ধা। তিনি
ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ইতিহাসের বিভিন্ন
পর্বে সক্রিয় যোদ্ধা। মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ তথা সাম্যবাদী সমাজ
প্রতিষ্ঠার মহান ব্রত নিয়ে মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি সংগ্রামে অবতীর্ণ হন।
তিনি ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসন-শোষণের শৃঙ্খল ছিন্ন করে দেশমাতৃকার
স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে লক্ষ্মী চক্রবর্তী
বলেন, রাজনীতিতে হেনা দাস সবসময় প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবেন। ইতিহাসের কালপর্বে
তার অবিস্মরণীয় অবদান জাতি যুগ যুগ ধরে স্মরণ রাখবে।
সমবেত কণ্ঠে ইন্ট্যারন্যাশনাল গাওয়ার মধ্য দিয়ে আলোচনা সভার সমাপ্তি হয়।