যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলা কমিটি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত জনসভায় সিপিবি'র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও সারাদেশে সার্বজনীন রেশন ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়ে বলেছেন, সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। অনেক স্থানের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ অবস্থা উত্তরণে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখাতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকার কী করছে, কী করতে চায়? এসব কথা দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবিদরা জানেন না। তিনি প্রশ্ন করেন, তাহলে কাদের সাথে কথা বলে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার দেশ চালাচ্ছে? দেশবাসী তা জানতে চায়।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বিজয়ী হলেও কোন কোন দল বা গোষ্ঠী এ বিজয়কে তাদের বিজয় হিসেবে দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, দলবাজি, দখলদারিত্ব অব্যাহত রেখেছে। কোথাও কোথাও এসব ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহায়তাও পাচ্ছে।
তিনি সরকারকে এসব চাঁদাবাজি, দলবাজি, দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিগত সরকারগুলো উন্নয়নের নামে খাল-বিল পর্যন্ত দখল করেছিল। এর অবসান ঘটাতে হবে। তিনি ভবদহ এর জলাবদ্ধতা দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যশোর অঞ্চলের মানুষের দুঃখ দূর করতে জীবন জীবিকা বাঁচাতে, সরকারের জরুরি কাজ হিসেবে অবিলম্বে ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করতে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আজ ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার বিকেল ৪টায় মনিরামপুর দক্ষিণমাথা বাসস্ট্যান্ডে সিপিবি মনিরামপুর উপজেলা সভাপতি আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। অন্যদের মধ্যে সিপিবি যশোর জেলা সভাপতি অ্যাড. আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইলাহদাদ খান, অ্যাড. আমিনুর রহমান হিরু, শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান মজনু, অধ্যাপক গাজী গোলাম মোস্তফা, বীর মুক্তিযোদ্ধা অভিমান্যু মন্ডল, কৃষক নেতা আব্দুর রহিম, অধ্যাপক চিন্ময় মন্ডল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। জনসভা পরিচালনা করেন মুহিবুল্লাহ মুহিব।
রুহিন হোসেন প্রিন্স নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের আলোচনা শুরুর আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারের কার্যক্রমের রোডম্যাপ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে দেশবাসী পরিষ্কার ধারণা পাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশি-বিদেশি আধিপত্যবাদী শক্তি তাদের স্বার্থে ক্ষমতাসীনদের ব্যবহার করতে চাইবে। যা গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন ঘটালেও এর সুফল এখনো সাধারণ মানুষ পাচ্ছেন না। এটা নিশ্চিত করতে কৃষক ক্ষেতমজুর শ্রমিক এর স্বার্থে নীতি গ্রহণ করতে হবে। লুটেরাদের উচ্ছেদ করতে হবে। অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের ধারা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। তরুণ যুবদের কর্মসংস্থানসহ সব মানুষের স্বাস্থ্য চিকিৎসার নিশ্চয়তা দিতে হবে।”
সমাবেশ শেষে লাল পতাকার মিছিল মনিরামপুর এর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।