বাম
গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভা আজ ১ অক্টোবর ২০২৪
সেগুনবাগিচাস্থ বাসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোটের
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর
রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সভাপতি
কমরেড শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট
লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির
সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস,
বাসদ মার্কসবাদী সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী
সভাপতি আব্দুল আলী, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, মিহির ঘোষ, শহিদুল ইসলাম সবুজ,
রুবেল সিকদার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভার এক প্রস্তাবে ধর্মীয় মৌলবাদী
সম্পদ্রায়িক গোষ্ঠীর কাছে নতজানু হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় শিক্ষাক্রমের
পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য গঠিত সমন্বয় কমিটি বাতিলের ঘটনায়
উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে
সহস্রাধিক মানুষ জীবন দিয়েছে ফ্যাসিবাদের উচ্ছেদ করে মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িক
গোষ্ঠীর উত্থানের জন্য নয়। প্রস্তাবে বলা হয়, মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী
কখনও গণতন্ত্রের মিত্র শক্তি হতে পারে না। প্রস্তাবে অন্তর্বর্তী সরকারকে
আপসকামীতা পরিহার করে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে
বলা হয়, অন্যথায় আপনাদেরকেও দেশবাসী ক্ষমা করবে না।
সভার অপর এক
প্রস্তাবে আশুলিয়ায় শ্রমিক হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে
বলা হয়, পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার বাঁচার মতো মজুরি চাওয়ায় গুলি করে শ্রমিকদের
হত্যা করেছিল মালিকশ্রেণির স্বার্থ রক্ষায়। গণঅভ্যুত্থানের পরও শ্রমিকের
বুকে গুলি করা হলো- অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শ্রমিক জনতা এহেন ফ্যাসিবাদী
আচরণ আশা করেনি। শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা এবং বাজার দরের সাথে সঙ্গতি রেখে
শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের দাবি করলে পুলিশ গুলি করে মারবে এটা
দেশবাসী বরদাস্ত করবে না। প্রস্তাবে অবিলম্বে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে
শিল্পাঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার এবং শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ীদের বিচারের
আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
সভার অপর এক প্রস্তাবে অন্তর্বর্তী সরকারের
কার্যক্রমে ধীরগতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ
গ্রহণে ব্যর্থতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সকল রাজনৈতিক দল সমর্থন
দেওয়ার পরও পরিস্থিতির উন্নয়নে ধীরগতি, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে
শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অপারগতা গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে
বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলা হয় বিরাজমান অবস্থা দেখে মনে হয় অন্তর্বর্তী
সরকার রাজনৈতিক দলসমূহকে প্রতিপক্ষ ভাবছে। কি সংস্কার করবে, কতটুকু সংস্কার
করবে, কত দিনে করবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে কার্যকর আলোচনার কোন
উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রস্তাবে অবিলম্বে গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য
সংস্কারের রূপরেখা ও নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে
আলোচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।