বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম উপদেষ্টা মার্কসবাদী তাত্ত্বিক, লেখক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কমরেড হায়দার আকবর খান রনোকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চিরবিদায় জানানো হয়েছে ।
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর মরদেহ আজ ১৩ মে ২০২৪ সকাল ১০টায় কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি শুরুতে কাস্তে-হাতুড়ি খরিচ লালপতাকা দিয়ে আবৃত্ত করা হয়। এরপর পার্টির পক্ষ থেকে সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ, সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।
পরে বিভিন্ন জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং বিভিন্ন গণসংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর বন্ধুরা আন্তর্জাতিক সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে তাকে শেষ বিদায় জানায়।
যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শোক মিছিল করে কমরেড হায়দার আকবর খান রনোর লাশবাহী যান পার্টি কার্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয় জাতির শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
সেখানে ১১.৩০টায় রাষ্ট্রের পক্ষে ঢাকা জেলা প্রশাসন গার্ড অব অনার প্রদান করে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ, বাসদ (মার্কসবাদী), জাসদ, ন্যাপ, গণতন্ত্রী পার্টি, ঐক্যন্যাপ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, নাট্যজন মামুনুর রশিদ, ঢাবি উপ-উপার্চায অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার, অধ্যাপক রামেন্দু মজুরদারসহ অসংখ্য বরেণ্য জনের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় কমরেড হায়দার আকবর খান রনোকে বিদায়ী শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এছাড়াও অসংখ্য মানুষ সেখানে উপস্থিত থেকে তাদের প্রিয় নেতা, প্রিয় মানুষ হায়দার আকবর খান রনোর প্রতি বিদায়ী শ্রদ্ধা নিবেদন করে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, পার্টির সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, তার চিকিৎসক ডা. চন্দ্র শেখর বালা, ডা. হারুনর রশিদ, তার ভ্রাতুষ্পুত্রী লাবনী পুতুল, কন্যা রানা সুলতানা বিদায়ী শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক সঙ্গীত গেয়ে তাকে বিদায় জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর নামাজে জানাজা শেষে বনানী গোরস্থানে তার বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
কমরেড হায়দার আকবর খান রনো তার মৃত্যুর পূর্বে মরণোত্তর চক্ষু দান করে গিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে তার ইচ্ছা অনুসারে ২ চোখের কর্নীয়া ২ জন অন্ধ লোকের চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
উলেখ্য শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাজনিত কারণে ঢাকার হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১১ মে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মরদেহ রাজধানীর সমরিতা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।
কমরেড হায়দার আকবর খান রনো লাল সালাম।