সিপিবি একাদশ কংগ্রেসের পর্দা উঠছে শুক্রবার ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন বিদেশি অতিথিরা

Posted: 26 অক্টোবর, 2016

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির একাদশ কংগ্রেস শুরু হতে আর মাত্র দুই দিন বাকি। শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর দুপুর ২টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদ্বোধনের মাধ্যমে কংগ্রেসের কার্যক্রম শুরু হবে। উদ্বোধনী সমাবেশে যোগ দিতে এর মধ্যে বিদেশি অতিথিরা ঢাকায় আসা শুরু করেছেন। মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় এসেছেন নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মশাল) এর সাধারণ সম্পাদক মোহন বিক্রম সিং ও একই দলের নেতা দূর্গা পোডেল এমপি । এসেছেন নেপালের প্রাক্তণ উপপ্রধানমন্ত্রী চিত্রবাহাদুর কেসি এমপি, কমিউনিস্ট পার্টি অব রাশিয়ান ফেডারেশনের নেতা আলেক্সান্ডার পোতাপভ ও অল ইন্ডিয়া ফরোয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক কমরেড শ্যামল চক্রবর্তী। আজ আসছেন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই) নেতা ও ভারতের রাজ্যসভার সদস্য কমরেড ডি রাজা, মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট পার্টি অব ডয়েচল্যান্ডের কমরেড থমাস বাইসেনকাম্প, কমিউনিস্ট পার্টি অব ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক সম্পাদক কমরেড জন ফস্টার। আজ-কালের মধ্যে বাকি অতিথিরাও ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন। ১০টি দেশ থেকে মোট ২৬ জন প্রতিনিধি কংগ্রেসে সংহতি জানাতে উপস্থিত থাকবেন বলে ভ্রাতৃপ্রতীম এসব পার্টি নিশ্চিত করেছে। এদের মধ্যে আছে ভারত থেকে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই), ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিআইএম, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)-সিপিআইএমএল, অল ইন্ডিয়া ফরোয়ার্ড ব্লক, নেপাল থেকে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (ইউএমএল), নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী), নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মশাল), যুক্তরাজ্য থেকে ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টি, ভিয়েতনাম থেকে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টি, জার্মানি থেকে এমএলপিডি, রাশিয়া থেকে রুশ ফেডারেশনের কমিউনিস্ট পার্টি, পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি, শ্রীলংকার কমিউনিস্ট পার্টি, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও উত্তর কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিনিধিরা কংগ্রেসে উপস্থিত থাকবেন। কংগ্রেসের সাফল্য কামনা করে এরইমধ্যে বিভিন্ন দেশের বন্ধুপ্রতীম পার্টিগুলোর শুভেচ্ছা বার্তা আসতে শুরু করেছে। এদিকে একাদশ কংগ্রেস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা ও উদ্বোধনস্থল সোহরাওয়ার্দীকে সাজাতে কাজ শুরু করেছে কংগ্রেস প্রস্তুতি পরিষদের সাজসজ্জা উপ-কমিটি। এরই মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দেয়াল লিখনের কাজ শেষ হয়েছে। শুক্রবার বেলা ২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ লাল পতাকা নিয়ে সমাবেশে যোগ দেবেন। এরপর বর্ণাঢ্য র‌্যালি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ হবে। কংগ্রেসে আসা বিদেশি অতিথিদের কংগ্রেসের মঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেয়া হবে। উদ্বোধনী মঞ্চে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গীতিআলেখ্য ‘দিন বদলের পালা’ পরিবেশন করবে। এর আগে সিপিবির দশম কংগ্রেস হয়েছিল ২০১২ সালের ১১-১৩ অক্টোবর। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৪ বছর পর এবারের কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কংগ্রেস উপলক্ষে পার্টির দেশব্যাপী সব শাখা, উপজেলা ও জেলা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সম্মেলনে ৬৮২ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ২১৭ জন নারী ও ১৭ জন আদিবাসী। কংগ্রেসে যোগদানের জন্য ১০৮ জন পর্যবেক্ষককেও মনোনীত করা হয়েছে। ৯৯ জন ভেটারেন কমরেডকে কংগ্রেসে যোগদানের জন্য বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উদ্বোধনের পরদিন ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় গুলিস্তানের কাজী বশির মিলনায়তনে (মহানগর নাট্যমঞ্চ) রুদ্ধদ্বার সাংগঠনিক অধিবেশন শুরু হবে এবং চলবে ৩১ অক্টোবর বিকেল পর্যন্ত। এছাড়া ২৯ অক্টোবর, শনিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের (২য় তলা) কনফারেন্স কক্ষে ‘সাম্রাজ্যবাদ, নয়া উদারনীতিবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদ’ বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারে কংগ্রেসে যোগদানকারী বিদেশি প্রতিনিধিরা আলোচনা করবেন। ২৯ ও ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭.৩০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মহানগর নাট্যমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে। এসব আয়োজনে দেশের বরেণ্য শিল্পীরা অংশ নেবেন।