ভোটাধিকার, দাম কমানো, পাচারের টাকা ফেরত, বৈষম্য ও দুর্নীতি দূর করার দাবিতে গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান

Posted: 12 জানুয়ারী, 2023

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) আহ্বানে দুঃশাসন, দুর্নীতি, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ রুখে দাঁড়ানো, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সপ্তাহের প্রথম দিনে আজ ১২ জানুয়ারি, বিকেল ৪টায় ঢাকায় পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সিপিবি’র সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবি ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সিপিবি ঢাকা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লুনা নূর। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবি’র সহ সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য শামসুজ্জামান সেলিম, সিপিবি’র অন্যতম নেতা কমরেড আব্দুল্লাহ আল ক্বাফী রতন, ডা. ফজলুর রহমান, এ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, লাকী আক্তারসহ নেতৃবৃন্দ।

বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবি’র সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, “লুটেরা রাজনীতি আর লুটেরা অর্থনীতি পরাজিত না করতে পারলে মানুষের মুক্তি আসবে না। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পেলে কৃষি-শিল্পসহ সর্বত্র উৎপাদন খরচ বাড়বে। ঐ বাড়তি দামও সাধারণ মানুষের পকেট থেকে তুলে নেওয়া হবে। এ সময় সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। প্রকৃত আয় কমে গেছে। খাদ্যপণ্য ঔষধের মূল্য আকাশচুম্বি। এই অবস্থায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে আরো সংকট নিয়ে আসবে। দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অপচয় দূর করতে পারলে বিদ্যুতের মূল্য না বাড়িয়ে কমানো যেত। আজ বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। সরকারের ভুলনীতির কারণে উৎপাদন ব্যয় বাড়ার দায় সাধারণ মানুষ নেবে না।”

তিনি বলেন, “মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারকে পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।”

সমাবেশে সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “গণতন্ত্রহীন পরিবেশে দুর্নীতি ও লুটেরারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সর্বত্র ঘুষ-দুর্নীতির উৎসব চলছে। টাকা পাচারকারী আর ঋণ খেলাপীরা থাকছে ধরাছোয়ার বাইরে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এই আর্থিক সংকটের সময়ে ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, জনমত উপেক্ষা করে আগামী নির্বাচনে প্রশাসনিক কারসাজির যে কোন চক্রান্ত দেশবাসীকে রুখে দাঁড়াতে হবে।”

তিনি বলেন, “মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারকে পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। সাম্রাজ্যবাদ আর বিদেশি আধিপত্যবাদী শক্তি দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার অব্যাহত রেখে এখন রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে। মানুষ বাঁচাতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেশনিং, ন্যায্যমূল্যের দোকান ও গণবণ্টন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সিণ্ডিকেট ভাঙতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারার প্রতিবাদে ১৫ জানুয়ারি বামজোট বিটিআরসি’র সামনে বিক্ষোভ করবে। পাচারের টাকা ফেরত ও খেলাপী ঋণ উদ্ধারের দুুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনেও আগামীতে বিক্ষোভ হবে।

সমাবেশে বক্তারা ভোটাধিকার, দাম কমানো, পাচারের টাকা ফেরত, বৈষম্য ও দুর্নীতি দূর করার দাবিতে গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি মিছিল পল্টন মোড় থেকে বিজয় নগর হয়ে, দৈনিক বাংলা মোড় ঘুরে সিপিবি’র অফিসের সামনে এসে শেষ হয়।