কুমিল্লা, ফেনী, চৌমুহনী, পীরগঞ্জ, হাজীগঞ্জসহ দেশব্যাপী সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস রুখে দাঁড়াতে ও ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন হটানোর দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট দুই দিনব্যাপী (২-৩ নভেম্বর) রোডমার্চ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার পল্টন মোড়ে উদ্বোধীন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, জোটের শীর্ষ নেতা ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাসদ নেতা কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী) ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক কমরেড ফখরুদ্দিন কবীর আতিক, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইকবাল কবীর জাহিদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আকবর খান, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা আকম জহিরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় পরিষদের সদস্য মনিরউদ্দিন পাপ্পু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি কমরেড আব্দুল আলী।
সকাল সাড়ে ৮টায় পল্টন মোড়ে দুই দিনব্যাপী রোডমার্চের উদ্বোধীন সমাবেশ শেষে বাম জোটের সমন্বয়ক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে ২৯ সদস্যের টিম ঢাকা থেকে রওনা হন। সকাল সাড়ে ৯টায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে জোটের জেলা সমন্বয়ক কমরেড নিখিল দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য রাখেন জোটের কেন্দ্রীয় নেতা আকবর খান, আকম জহিরুল ইসলাম, আব্দুল আলী, দীপক রায় ও জেলা সিপিবি নেতা শিনাথ চক্রবর্তী।
কাঁচপুর পথসভা শেষে টিম সাড়ে ১০টায় সোনারগাঁও মোগড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে স্থানীয় বাসদ নেতা বেলায়েত হোসনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুলাহ কাফি রতন, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবার কবির জাহিদ, বাসদ নেতা জনার্দন দত্ত নান্টু, স্থানীয় সিপিবি নেতা আব্দুল সালাম বাবুল।
পথসভা শেষে রোডমার্চ দুপুর ১২টায় চান্দিনা বাস স্ট্যান্ডে স্থানীয় সিপিবি নেতা সুজাতা আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য রাখেন জোটের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহ কাফি রতন, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, মনিরউদ্দিন পাপ্পু ও কুমিল্লা জেলা সিপিবি নেতা পরেশ চন্দ্র কর।
চান্দিনায় পথসভা শেষে রোডমার্চ কুমিল্লা শহরে কান্দিরপাড়ে পূবালী ব্যাংক চত্বরে জোটের জেলা সমন্বয়ক জুলকার নাইন ইমন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, শাহ আলম, সাইফুল হক, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, ইকবাল কবির জাহিদ, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, মনিরউদ্দিন পাপ্পু, আব্দুল আলী ও জেলা বাম জোটের নেতা পরেশচন্দ্র কর, ফারজানা আক্তার।
কুমিল্লার সমাবেশ শেষে বাম জোটের রোডমার্চ ফেনী শহীদ মিনারে সমাবেশ এবং রাত্রিযাপন করবে। পরদিন ৩ নভেম্বর সকাল ৯টায় ফেনী থেকে রোডমার্চ শুরু হয়ে দাগনভূইয়া, চৌমুহনী, রামগঞ্জ হয়ে চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে সমাবেশের মাধ্যমে রোডমার্চ শেষ করবে।
দুই দিনব্যাপী রোডমার্চ টিমে আরও আছেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে সংগঠক শাহজাহান কবীর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি আল কাদেরী জায়, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম সদস্য রুখশানা আফরোজ আশা, শ্রমিক নেতা সেলিম মাহমুদ, দীপক রায়সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশসমূহে নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক এই হামলার সাথে সরাসরি জড়িত, পৃষ্ঠপোষক, মদদদাতা ও রাজনৈতিক আশ্রয়দাতাদের খুঁজে বের করে দ্রুত শাস্তি প্রদান করতে হবে। অতীতের কোন সাম্প্রদায়িক হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়াতে একের পর এক সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে।
বক্তাগণ আরও বলেন, সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। যে কারণে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের শাসকেরা বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রদায়িকতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে দেশের জনগণের দৈনন্দিন জলন্ত সমস্যা আড়াল করতে সহায়তা করে। কুমিল্লা, পীরগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, চৌমুহনীসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলাকারীদের অনেকে ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্তার ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। কুমিল্লায় আটক ইকবাল ভবঘুরে ও মানসিক রোগী বলে অপপ্রচার করে নতুন করে জর্জ মিয়া নাটক সাজানোর পায়তারা হচ্ছে বলে বক্তাগণ আশংকা প্রকাশ করেন। নেতৃবৃন্দ একই সাথে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন হটাতে দেশের বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন পরিচালনা করার আহ্বান জানান।