জনগণের প্রতি ‘বিনা ভোটের সরকারে’র কোনো দায় নেই

Posted: 16 অক্টোবর, 2021

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, গণবিরোধী সরকার আর অবৈধ সিন্ডিকেটের যোগসাজশে একদিকে ভোক্তাদের পকেট কাটা হচ্ছে, অন্যদিকে উৎপাদক কৃষক প্রতারিত হচ্ছে। অবৈধ ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেট শুধু বাজার নয়, গণবিরোধী কর্তৃত্ববাদী সরকারকেও নিয়ন্ত্রণ করছে। গণবিরোধী সরকার লুটেরা, মুনাফাখোর, মজুদদারদের ‘পাহারাদার’ হিসেবে ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেটকে রক্ষা করে চলেছে। সাধারণ মানুষের প্রতি ‘বিনা ভোটের সরকারে’র কোনো দায় নেই।

চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাগামহীন বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিপিবি আহূত দেশব্যাপী ‘বিক্ষোভ সপ্তাহে’র প্রথম দিনে আজ ১৬ অক্টোবর ঢাকার শান্তিনগর কাঁচাবাজারের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-সমাবেশে কমরেড সেলিম এসব কথা বলেন। সিপিবি, পল্টন থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ত্রিদিব সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক কমরেড জলি তালুকদার, শান্তিনগর শাখার সম্পাদক কমরেড ফারহান হাবিব প্রমুখ। 

সমাবেশে কমরেড সেলিম আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দর্শনের বদলে সরকার এখন মুক্তবাজার দর্শনের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করছে। সরকারের বাজার তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের অভাবে ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়েই চলেছে। করোনার আঘাতে মানুষ যখন বিপর্যস্ত, তখন ‘দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া’র ধাক্কায় মানুষের জীবন চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যেই ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে সরকার আবারও ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজির দাম বাড়িয়েছে। দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে তীব্র লড়াই গড়ে তোলার পাশাপাশি কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশ থেকে গরিব মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু, গণবণ্টন ব্যবস্থা চালু, টিসিবির কার্যক্রম জোরদার করা, ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু, ‘বাফার স্টক’ গড়ে তোলা, অবৈধ ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া, লুটেরা-মজুদদার-মুনাফাখোর-মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। 

দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে সমাবেশে সিপিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দূরে থাক, সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ দিচ্ছে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে হবে। সর্বত্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তার জন্য বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে। 

সমাবেশ শেষে ‘দাম কমাও, জান বাঁচাও’ স্লোগানে একটি বিক্ষোভ মিছিল শান্তিনগর এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।