“বাগদা ফার্মের জমিতে ইপিজেড স্থাপন চলবে না”

Posted: 05 সেপ্টেম্বর, 2021

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ (বাগদা) ফার্মের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

সিপিবির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম আজ ৫ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বলেছেন, চিনিকলের আখচাষের জন্য গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাগদা বাজার সংলগ্ন সাঁওতালদের মালিকানাধীন ১৮৪২ একর জমি ১৯৫৪-৫৫ সালে সরকার অধিগ্রহণ করে। ১৯৬২ সালে এক চুক্তিপত্রের মাধ্যমে তৎকালীন সরকার পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনকে উল্লেখিত জমি হস্তান্তর করে। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, এ জমিতে আখ চাষ ছাড়া অন্য কিছু করা যাবে না। শর্ত লংঘিত হলে এসব জমি পূর্বতন মালিকদের কাছে ফেরত দেয়া হবে। অধিগ্রহণের পর মহিমাগঞ্জে অবস্থিত রংপুর সুগার মিলস লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে এসব জমিতে গড়ে ওঠে সাহেবগঞ্জ ইক্ষু ফার্ম। স্থানীয় সাঁওতালরা দাবি করেছেন, অধিগ্রহণ করা ১৮৪২ একর জমির সাথে তাঁদের আরো প্রায় ৬০০ একর জমি ফার্মের নামে অবৈধভাবে কুক্ষিগত করে রেখেছে মিল কর্তৃপক্ষ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ১৭ বছর আগে রংপুর সুগার মিলে আখমাড়াই বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এসব জমি পূর্বতন মালিকদের ফেরত না দিয়ে মিল কর্তৃপক্ষ লিজ দেয়া শুরু করে। এসব জমিতে আখচাষের পরিবর্তে ধান, গম, সব্জিচাষ এমনকি পুকুর খনন করে মাছচাষও করা হয়। ২০০৬ সালের ৬ নভেম্বর প্রশাসন ও পুলিশ ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের যোগসাজসে এবং সুগার মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় বাগদা ফার্ম এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালায়। পুলিশের গুলিতে ৩ জন আদিবাসী সাঁওতাল নিহত হন। কিছু পুলিশ সদস্য ও দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে সাঁওতালদের সহস্রাধিক বাড়িঘর ভস্মীভূত হয়।

সিপিবির নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সাহেবগঞ্জ (বাগদা) ফার্মের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান সম্প্রতি এই এলাকা সফর করেছেন। এর প্রতিবাদে স্থানীয় আদিবাসী সাঁওতালরা বিক্ষোভ করেছেন। সাঁওতালরা চুক্তির শর্তানুযায়ী তাঁদের পূর্বপুরুষের জমি তাঁদের ফিরিয়ে দিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জমির আদি মালিক সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর সাথে সম্পাদিত চুক্তির বরখেলাপ করে এবং বর্তমানে তাঁদের উত্তরাধিকারীদের দাবি উপেক্ষা করে সাহেবগঞ্জ (বাগদা) ফার্মের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। চুক্তির শর্তানুযায়ী অধিকৃত জমিতে চিনিকলের জন্য আখ চাষ না করায় তা জমিদাতাদের উত্তরাধিকারীদের কাছে অবিলম্বে ফিরিয়ে দিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ অবৈধভাবে আদিবাসী, প্রান্তিক সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর জমির ওপর নয়, ইপিজেড বা ইকোনোমিক জোন করতে হলে দখল হয়ে থাকা খাসজমি উদ্ধার করে সেখানে করার দাবি জানান।