Revolutionary democratic transformation towards socialism

রাষ্ট্রীয় পাটকল পিপিপি বা লীজ নয় আধুনিকায়ন কর পাট, পাটশিল্প ও পাটচাষী রক্ষায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা


## দিনব্যাপী জাতীয় কনভেনশনে নেতৃবৃন্দের আহ্বান পাট, পাটশিল্প ও পাটচাষী রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মনে দিনব্যাপী জাতীয় কনভেনশন আজ ২৯ আগস্ট ২০২০ শনিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে ২নং মণি সিংহ সড়কস্থ মুক্তি ভবনের ৫ম তলায় মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। বক্তব্য রাখেন সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী কমরেড জোনায়েদ সাকী, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক। দিনব্যাপী কনভেনশনে খুলনা, যশোর, সিরাজগঞ্জ, ডেমরা, নরসিংদী, চট্টগ্রামের পাটকল শ্রমিক নেতাসহ নানা শ্রেণি পেশার এবং বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে ও ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক কমরেড টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফয়জুল হাকিম লালা। কনভেনশনে সংহতি জানিয়ে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রাশেদ আল তিতুমীর। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, নারী আন্দোলনের নেত্রী বহ্নিশিখা জামালী, কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের নেতা অধ্যাপক আব্দুর সাত্তার, বাম প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতা মফিজুর রহমান লাল্টু, রাষ্ট্র চিন্তার এ্যাড, হাসনাত কাইয়ুম; পাটকল শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ খুলনার আহ্বায়ক এ্যাড. কুদরত-ই-খুদা, সদস্য সচিব এম এ রশিদ, ইস্টার্ন জুট মিলস সিবিএ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক খান, সদস্য কারামুক্ত ইস্টার্ন জুট মিলের শ্রমিক নেতা অলিয়ার রহমান ও প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলস এর শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম। জাতীয় জুট মিল (সাবেক কওমী জুট মিল) সিরাজগঞ্জ এর নেতা, পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ সিরাজগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম, স্টার জুট মিলস খুলনার শ্রমিক নেতা আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম আমিন জুট মিল সিবিএ-র সাংগঠকিন সম্পাদক সামছুল আলম, চট্টগ্রামের শ্রমিক নেতা মোশিউদ দৌলা, জেজেআই’র শ্রমিক নেতা শামশেদ আলম শমসের, যশোর বদলি শ্রমিক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি, খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক শ্রমিক নেতা আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার। সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন পাটকল সংগ্রাম পরিষদের নেতা লুৎফর রহমান, প্রগতিশীল প্রকৌশলী ও স্থপতি নেতা প্রকৌশলী

নিমাই গাংগুলী, প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস ফর পিপলস ফোরাম নেতা অধ্যাপক ডা, হারুন অর রশীদ, ক্ষেতমজুর নেতা এ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা এ্যাড. মন্টু ঘোষ, পাটকল রক্ষায় নাগকির পরিষদ খুলনা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক জনার্দন দত্ত নান্টু, সিরাজগঞ্জের পাটকল রক্ষায় সম্মিলিতি নাগরিক পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন ও নব কুমার কর্মকার, শ্রমিক আন্দোলনের ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-জনতা প্রতিনিধি রুহুল আমিন। কনভেনশনে বক্তারা বলেন, করোনা মহামারিতে পুরো দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা যখন বিপন্ন, ঠিক সেই সময় রাষ্ট্রীয় খাতের ২৫টি পাটকল বন্ধ করে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিককে বেকার করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় পাটকল লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে। কিন্তু কেন লোকসান, কাদের কারণে লোকসান, লোকসান কাটাতে কী কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল? সে সব প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে স্বেচ্ছাচারি কায়দায়, একতরফাভাবে বিনা ভোটের সরকার রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যের সম্ভাবনা যখন দুনিয়াব্যাপী বাড়ছে, পাটের চাহিদা ও বাজার যখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাড়ছে তখন কাদের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ করা হচ্ছে। এটা কি দেশের স্বার্থে নাকি পাটখাত দেশে-বিদেশী পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেয়ার স্বার্থে? বক্তাগণ আরও বলেন, পাটকল বন্ধ হলে শুধুমাত্র ৫০ হাজার পাটকল শ্রমিকরাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে না, এর সাথে ৪০ লাখ পাটচাষী ও পাট চাষের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ৪ কোটি মানুষও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের জাতীয় অর্থনীতি। পাট বাংলাদেশের একটি স্থায়ী শিল্পের ভিত্তি রচনা করেছিল, যার কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদা পূরণ করে যা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। সেই শিল্প ও শ্রমিক-কৃষকের স্বার্থে পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে দেশপ্রেমিক সকল মানুষকে আন্দোলনে নেমে আসার আহ্বান জানান। বক্তাগণ বলেন, পাট, পাটশিল্প ও পাটচাষী রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল, পিপিপি বা লীজ নয় আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় পাটকল চালু, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ, জাতীয় নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ, পাটখাত ধ্বংস ও দুর্নীতি লুটপাটে জড়িতদের শাস্তিসহ ৩ দফা দাবিতে বাম জোট ঘোষিত ৩ দফা দাবিতে নিম্নলিখিত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচি ঘোষণাকালে নেতৃবৃন্দ বলেন, ১ সেপ্টেম্বর মিল চালু করা, কলোনী ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাহার, ৬ সপ্তাহের বেতন, ঈদুল আজহার বোনাস ও এরিয়া বিল প্রদান ও বদলি শ্রমিক স্থায়ী করতে হবে। পাটকল রক্ষায় সকলের সমন্বয়ে সংগ্রাম কমিটি গঠনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। কর্মসূচি: ১) ১ সেপ্টেম্বর প্রত্যেক মিল গেইটে গেইট মিটিং ও সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ২) ১৩ সেপ্টেম্বর প্রত্যেক জেলায় ও শিল্পাঞ্চলে অবস্থান ও সংহতি সমাবেশ ৩) ২৭ সেপ্টেম্বর পাট মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি এবং জেলায় জেলায় ডিসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ। অক্টোবরের ১ম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিল। এর পরেও দাবি মানা না হলে হরতাল/ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে নেতৃবৃন্দ ঘোষণা করেন।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..