Revolutionary democratic transformation towards socialism

সিপিবি’র ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় নেতৃবৃন্দ দুঃশাসন হঠাতে বামপন্থি শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন জগদ্দল পাথরের মতো দেশবাসীর ওপর চেপে বসেছে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। গণতন্ত্র এখন নির্বাসনে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করা হচ্ছে। লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচার বেড়েই চলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছেই। বিদ্যুৎ-পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। গণবিরোধী এই সরকারের হটাতেই হবে। গণ-আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। তার জন্য বামপন্থী শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে। আজ ৬ মার্চ পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনে সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) নেতা কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ মার্কসবাদী নেতা মানস নন্দী, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম

সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী, সিপিবি’র অন্যতম সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবি ঢাকা কমিটির সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন। আলোচনাসভায় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দুঃশাসন হটিয়ে যদি বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তিকে ক্ষমতায় আনা না যায়, তাহলে দুঃশাসন পর্যায়ক্রমিকভাবে চলতেই থাকবে, এক দুঃশাসনের জায়গায় আরেক দুঃশাসন আসবে। তাই বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান ঘটাতেই হবে। বাম-গণতান্ত্রিক দল, শক্তি ও ব্যক্তিকে এখন এক কাতারে দাঁড়াতে হবে। জনগণের ঐক্যকে জোরদার করতে হবে। আলোচনাসভায় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ইতিহাসে কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা উজ্জ্বল ও বর্ণিল। তেভাগা, নানকার, টংকসহ নানা কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি সিপিবি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংগঠিত করেছে। এ দেশের ঐতিহ্যবাহী গণসংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠার পেছনে কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকাই মুখ্য। কমিউনিস্ট পার্টির নেতা-কর্মীদের ওপর বারেবারে হত্যা, নির্যাতন, জেল-জুলুম-হুলিয়ার

খড়গ নেমে এসেছে। কয়েক দফায় পার্টিকে বেআইনি করা হয়েছে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী হাজার হাজার কমিউনিস্টকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, সাম্প্রদায়িকতা-সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই, জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামাত-শিবির নিষিদ্ধের আন্দোলনসহ সকল আন্দোলন-সংগ্রামেই সিপিবি অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সিপিবি তার বিপ্লবী ঐতিহ্যের ধারায় বর্তমানে কমিউনিস্ট ঐক্য ও বাম ঐক্যকে অগ্রসর করে নিচ্ছে। বর্তমানে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকেন্দ্রিক দ্বি-দলীয় মেরুকরণের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার কঠিন ও জটিল পথ পরিক্রমায় নানামুখী তৎপরতায় সিপিবি তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দেশ ও জাতির কাক্সিক্ষত মুক্তির জন্য সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন সাধনে সিপিবি কাজ করে যাচ্ছে।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..