Revolutionary democratic transformation towards socialism

পল্টন বোমা হত্যাকাণ্ডে ১৯তম বার্ষিকীতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন দ্বি-দলীয় ধারার বিপরীতে বিকল্প শক্তির উত্থানের মধ্য দিয়ে শহীদদের প্রতি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা জানানো হবে - মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম


২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র মহাসমাবেশে বোমা হত্যাকাণ্ডের ১৯তম বার্ষিকীতে শহীদদের স্মরণে পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের সামনের অস্থায়ী বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দ্বি-দলীয় ধারার বিপরীতে বাম বিকল্প শক্তির উত্থানের মধ্য দিয়ে শহীদদের প্রতি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। তিনি বলেন, ২০ জানুয়ারির পল্টন ময়দানের বোমা হামলার পর আলামত সংগ্রহ না করে সিপিবির নেতাকর্মীদের তৎকালীন আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমনকি পুলিশ কমিশনার বলেছিলেন, এই হামলা দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে হয়েছে! আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরও বিএনপি সরকার একই কাজ করেছিল এবং একই কথা বলেছিল। সিপিবি সভাপতি সেলিম আরও বলেন, বর্তমানে দেশ ‘৯৯ বনাম ১’ এইভাবে বিভক্ত। এই ৯৯ ভাগ মানুষ যাতে তাঁরা তাঁদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে না পারে তার জন্য নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, সেদিন কমিউনিস্টদের স্তব্ধ করার জন্য বোমা হামলা চালানো হয়েছিল যাতে কমিউনিস্ট

পার্টি মানুষকে নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। হামলার পর জনগণের আরো বেশী অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সিপিবি এগিয়ে যাচ্ছে। অশুভ শক্তির হীন উদ্দেশ্য সফল হয়নি। এখনও নানা ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, দেশ এক গভীর সংকটের মধ্যে অতিবাহিত করছে। গণতন্ত্রহীনতা, লুটপাটতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা আজ চরম আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে বামপন্থার উত্থান ঘটাতে হবে। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাম গণতান্ত্রিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবি’র সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ও কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক জাহিদ হোসেন খান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র উপদেষ্টা শহীদুল্লাহ চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অস্থায়ী বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক

দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বামঐক্য ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কৃষক সমিতি, ক্ষেতমজুর সমিতি, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, গার্মেন্ট টিইউসি, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন, সিপিবি ঢাকা কমিটি, একতা, সিপিবি নারী সেল এবং ঢাকা নগরের বিভিন্ন থানা ও শাখাসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। আন্তর্জাতিক পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়। উল্লেখ্য, ২০০১ সালের এই দিনে রাজধানীর পল্টন ময়দানে সিপিবি’র লাখো মানুষের মহাসমাবেশে বোমা হামলা চালায় প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক চক্র। এই হামলায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুট মিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম ও মাদারীপুরের মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই এবং খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা কমরেড বিপ্রদাস রায় আহত হয়ে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ওই বছরেই ২ ফেব্রুয়ারি শহীদের মৃত্যুবরণ করেন। বোমা হামলায় শতাধিক কমরেড আহত হন।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..