পাটকল শ্রমিকদের চলমান আমরণ অনশনের প্রতি সংহতি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। আজ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকার পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনের সামনে সংহতি অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সংহতি অবস্থানে সভাপতির বক্তব্যে কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, পাটকল শ্রমিকরা ১৫ সপ্তাহ মজুরি পাচ্ছে না। যখন ব্যাংক লুট হয়, দেশ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয় তখন সরকারের মন্ত্রীরা বলেন এই টাকা কিছুই না। এখন শ্রমিকের বকেয়া মজুরি পরিশোধের সময় সেই তুলনায় অতি সামান্য অর্থ যোগান দিতে তাদের সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষায় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পরামর্শে পাট শিল্পকে ক্রমেই ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে কমরেড সেলিম বলেন, শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ না করে মন্ত্রী-আমলাদের বেতন দেয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও করা হবে।
সিপিবি’র সভাপতি জননেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংহতি অবস্থান কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, সভাপতিম-লীর অন্যতম সদস্য আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন, কোষাধ্যক্ষ শ্রমিকনেতা মাহাবুব আলম, কেন্দ্রীয় সম্পাদক আহসান হাবীব লাবলু, রুহিন হোসেন প্রিন্স, জলি তালুকদার, লতিফ বাওয়ানী পাটকল সিবিএ’র প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের, গার্মেন্ট শ্রমিকনেতা কাজী রুহুল আমীন, যুবনেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল, কৃষকনেতা জাহিদ হোসেন খান, পরিবহন শ্রমিকনেতা হযরত আলী, হকারনেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, ক্ষেতমজুর নেতা আরিফুল ইসলাম নাদিম, উদীচীর কোষাধ্যক্ষ পারভেজ মাহমুদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় প্রমুখ। সংহতি অবস্থান সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রমিকনেতা সাদেকুর রহমান শামীম।
অবস্থান কর্মসূচিতে কমরেড সেলিম আরও বলেন, ‘নিও লিবারেল ইকোনমি’ নামে গণবিদ্বেষী নীতিতে দেশ চালাচ্ছে সরকার। তারা সমস্ত কলকারখানা এবং পরিসেবাখাত বেসরকারিকরণের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে পাট শিল্পে ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ নামে সকল পাটকলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি লুটের বাজারে তোলার চক্রান্ত চলছে। পাট শিল্পকে ক্রমাগত লোকসানিখাত হিসেবে দেখিয়ে তারা তাদের অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, পাটকল শ্রমিকরা পাটশিল্প রক্ষার যে ১১-দফা দাবি তুলে ধরেছে তার সাথে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনৈতিক আন্দোলন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দেশ বাঁচাতে হলে চলমান নয়া উদারনীতিবাদ নামের লুটেরা শাসন যারা চালাচ্ছে সেই গণবিরোধী সরকারকেও উচ্ছেদ করতে হবে।