Revolutionary democratic transformation towards socialism

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সভায় নেতৃবৃন্দ রাজশাহী বরিশাল সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তামাশায় পরিণত হয়েছে প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দিন

বাম গণতান্ত্রিক জোট নেতৃবৃন্দ আজ এক সভায় বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, গুলিবর্ষণ, নিপীড়ন, মেয়র প্রার্থীর ওপর বর্বরোচিত হামলা, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া, হুমকি প্রদানসহ যাবতীয় অপতৎপরতার মধ্য দিয়ে জনগণের ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নেয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সরকারি প্রার্থী-পুলিশ-নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন যৌথ তৎপরতার মধ্য দিয়ে সর্বশেষ এই তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকেও তামাশায় পরিণত করেছে। নেতৃবৃন্দ প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনে পুনরায় নির্বাচন দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারের তৎপরতা ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ যেভাবে একতরফা দেশ শাসনের বন্দোবস্ত কায়েম করেছে, তারই ধারাবাহিকতা। এবং এই নির্বাচন বুঝিয়ে দিচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও আদৌ কোনো ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য বা গণতান্ত্রিক কায়দায় করার বিন্দুমাত্র কোনো ইচ্ছা এই আওয়ামী লীগ সরকারের নেই। নেতৃবৃন্দ বলেন, বরিশালে হাতেনাতে জাল ভোট ধরার সময় বাসদের মেয়রপ্রার্থী মনীষা চক্রবর্তীর ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা চালানো হয়। বরিশালে সিপিবি’র মেয়র প্রার্থী অ্যাড. আবুল কালাম আজাদের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়, কাস্তে মার্কায় ভোট দেওয়া ব্যালেট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নৌকার পোলিং এজেন্টরা ছিঁড়ে ফেলে এবং কেন্দ্রের সামনে উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের নিগৃহীত করে। রাজশাহীতে গণসংহতির প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদের প্রধান পোলিং এজেন্টের ওপর হামলা ও দুর্ব্যবহার, তাকে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। সিলেটে সিপিবি-বাসদ মেয়র প্রার্থী আবু জাফর একই ধরনের আচরণের সম্মুখীন হন। সব জায়গায় প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া বা কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার মত ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনি ঘটেছে কেন্দ্র দখল করে অবাধে সিল মারা, ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন এবং অপেক্ষমাণ ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ার মত ঘটনাও। এসব নিয়ে অভিযোগ করা হলেও রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশন ন্যূনতম কোনো ব্যবস্থা নেয়ার আগ্রহ প্রদর্শণ করেনি। অর্থ, অস্ত্র ও প্রশাসনের ক্ষমতার সাথে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও ছিল ন্যক্কারজনক। তারা বাংলাদেশে নির্বাচনকে, ভোটের অধিকার হরণকে প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা দেয়ার কাজটিতে বৈধতা প্রদান করেছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই পুরো ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে, বর্তমান সরকারের জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ন্যূনতম কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে জাতীয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই বর্তমান সরকারকে পদ্যতাগ করতে হবে, আলোচনার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। বর্তমান অথর্ব নির্বাচন কমিশনকেও পদত্যাগ করে জাতীয় সমঝোতার ভিত্তিতে অনুসন্ধানের মাধ্যমে গঠিত নতুন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন ছাড়া ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার আর কোনো উপায় নেই বলে নেতৃবৃন্দ মত প্রকাশ করেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক কমরেড সাইফুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাংলাদশের সমাজাতান্ত্রিক দল বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাংলাদশের সমাজাতান্ত্রিক দল-বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, গনতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোমিনুর রহমান বিশাল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নিশিখা জামালী, সিপিবি’র আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বাসদ (মার্কসবাদী) ফখরুদ্দীন কবীর আতিক।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..