
পিরোজপুর-স্বরূপকাঠি অঞ্চলের বামপন্থী আন্দোলনের প্রবীণ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র প্রবীণ সদস্য, স্বরূপকাঠি উপজেলা কমিটির সাবেক সভাপতি সর্বজন শ্রদ্ধেয় কমরেড আইয়ুব আলী মাস্টার আর নেই। আজ ২৪ জুলাই ভোরবেলায় ৯০ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘদিন তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মো. শাহ আলম এক বিবৃতিতে কমরেড আইয়ুব আলী মাস্টারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, কমরেড আইয়ুব আলী মাস্টার ছিলেন সমাজ পরিবর্তনের বিপ্লবী লড়াইয়ের এক অসাধারণ সৈনিক। তিনি ছিলেন পিরোজপুর বিশেষ করে স্বরূপকাঠি অঞ্চলের গণমানুষের নেতা। তিনি বেআইনি ঘোষিত কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন এবং পার্টির সদস্যপদ অর্জন করেন। কমিউনিস্ট পার্টি, কৃষক সমিতি সর্বোপরি বামপন্থী আন্দোলন তীব্র করতে তিনি অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। মানুষকে জাগানোর মন্ত্র নিয়ে তিনি জনগণের মধ্যে লেগে-পড়ে থেকে কাজ করতেন। তিনি ছিলেন সকলের প্রিয়, সকলের শ্রদ্ধেয়।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে কমরেড আইয়ুব আলী মাস্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে পার্টির পক্ষ থেকে তিনি পার্টি কমরেডদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের অশোকনগরে ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর ক্যাম্পে তিনি খাদ্যের দায়িত্বে ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে তাঁকে বিভিন্ন সময় আত্মগোপনে থাকতে হয়। বারবার পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন এবং গ্রেপ্তারও হন। জেলের মধ্যে তিনি সাধারণ বন্দীদের কমিউনিস্ট মতাদর্শে উজ্জীবিত করতেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ কমরেড আইয়ুব আলী মাস্টারের বিপ্লবী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে বিপ্লবী আন্দোলনকে অগ্রসর করার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ প্রয়াতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।