বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মো. শাহ আলম আজ ২২ মে এক বিবৃতিতে ক্রসফায়ারসহ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করে মাদকের ভয়াবহতা নিরসনে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
মাদক দমন অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’র নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে সিপিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, সমস্যার সমাধানের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এতে প্রান্তিক পর্যায়ের মাদক বিক্রেতাদের হত্যা করা হচ্ছে। এদের বিচারের আওতায় আনার পরিবর্তে সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে। অবাধ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ক্রমান্বয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হত্যাকাণ্ডে পর্যবসিত হতে পারে এবং এ পথ দিয়েই ফ্যাসিবাদ সমাজ, রাষ্ট্রের ওপর চেপে বসবে। যারা বিদেশ থেকে চোরাচালানির মাধ্যমে মাদক দেশে এনে বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে সেই উৎসমূল বন্ধ না করে এবং তাদের বিচারের আওতায় না এনে কতিপয় চুনোপুটি মাদক বিক্রেতাকে হত্যা করে এই মারাত্মক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে মাদকের প্রসার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদক আজ দেশের প্রান্তিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত। এর ৮০ শতাংশ যুবক। নারীদের মধ্যেও মাদকাসক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ১৪১ জন মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা প্রণয়ন করেছে। এতে সরকারি দলের সাংসদ, স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দসহ সিআইপি খেতাবপ্রাপ্ত ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তা, সরকারের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নাম রয়েছে। মাদকাসক্তদের অধিকাংশই নানারকম অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে। মাদকের চক্রে পরে অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক তরুণের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেছে। মাদক ব্যবসায়ীরা মায়ানমার, ভারত থেকে মাদক চোরাচালানি করে দেশে এনে দেশের সর্বনাশ করে বিত্তশালী হয়ে উঠেছে। দেশের তরুণ সমাজকে বাঁচাতে এবং দেশের তারুণ্যকে ধ্বংস করে বিত্তশালীতে পরিণত হওয়া মাদক সম্রাট আর গডফাদারদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প কিছু নেই।
Login to comment..