সারাদেশে অব্যাহত নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণ, খুন, গুমের প্রতিবাদে আজ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নারী সেলের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সিপিবি সভাপতিম-লীর সদস্য ও নারী সেলের আহ্বায়ক কমরেড লক্ষ্মী চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অধ্যাপিকা এ এন রাশেদা, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জলি তালুকদার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. মাকসুদা আক্তার লাইলী, লুনা নূর, ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী কাজী রিতা প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন লাকী আক্তার।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশজুড়ে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ ও চূড়ান্ত নৈরাজ্য বিরাজ করছে। চলমান বিচারহীনতার সংস্কৃতি একের পর এক হত্যা, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। রাষ্ট্রে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা যাদের দেয়ার কথা, যারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার শপথ নিয়েছেন তারা অব্যাহতভাবে এসকল অন্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছেন। নারীর প্রতি শোষণ, নির্যাতন, বৈষম্য রোধ করতে হলে রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, স্কুল, কলেজ, কারখানা, অফিস আদালত, যানবাহন সর্বত্র নারীদের আত্মরক্ষার প্রয়োজনে সংগঠিত প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একই সাথে রাষ্ট্রসমাজ নারীর বিরুদ্ধে যে অন্যায়-জুলুম ও বৈষম্য চাপিয়ে দিয়েছে তার বিরুদ্ধে শ্রমজীবী ও তরুণ নারীদের সংগঠিত
হয়ে নারী মুক্তির আন্দোলন ও সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। সকল নারী নির্যাতন ও হত্যার বিচার আদায় করতে হবে। সমাবেশ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল ছাত্রীদের জোরপূর্বক হল ত্যাগ করানোর প্রতিবাদ জানানো হয়।
সমাবেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে নারীসেলের ৯ দফা তুলে ধরা হয়। দফাসমূহ হলো: ১. সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, হত্যা ও নারী নির্যাতন বন্ধে দ্রুত বিচার আদালতে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ২. সমকাজে সমমজুরি এবং নারী শ্রমিকের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ৩. সম্পদ ও সম্পত্তিতে নারীর সম অধিকার নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন করতে হবে। ৪. নারীমুক্তির শত্রু সা¤্রাজ্যবাদ, কর্পোরেট পুঁজিবাদ, ধর্মীয় মৌলবাদকে রুখতে হবে। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে। ৫. সমাজের সর্বস্তরে, গণমাধ্যম-পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে। ৬. যৌতুক বিরোধী আইন ও নারী নির্যাতন বিরোধী অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। ৭. পারিবারিক আদালতকে নারীবান্ধব করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। ৮. অপসংস্কৃতি-অশ্লীলতা, মাদক-জুয়া, নারী ও শিশু পাচার বন্ধ করতে হবে। ৯. নারীর গৃহশ্রমের অর্থনৈতিক মূল্যকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধে রাজধানীসহ দেশের সকল ট্রেন স্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কল-কারখানাগুলোতে লাগাতার প্রচার অব্যাহত থাকবে।