Revolutionary democratic transformation towards socialism

হামলা-গ্রেফতারের প্রতিবাদে সিপিবি-বাসদ, বাম মোর্চার বিক্ষোভ দমন-পীড়ন উপেক্ষা করেই বামপন্থিরা আন্দোলন এগিয়ে নেবে


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, হরতালের আগেই সিপিবি অফিসে হানা দিয়েছে পুলিশ। সারাদেশে হামলা-নির্যাতন, গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ ‘সনিক ক্যানন’ (শব্দ কামান) ব্যবহার করেছে। কিন্তু হামলা-নির্যাতন করে আন্দোলন থামানো যাবে না। হরতাল করেই বামপন্থিরা থেমে থাকবে না। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। সরকারের সকল অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত বামপন্থিরা রুখে দেবে। দমন-পীড়ন উপেক্ষা করেই বামপন্থিরা আন্দোলন এগিয়ে নেবে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে এবং চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর দাবিতে সিপিবি-বাসদ, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আহূত গতকালের হরতালে সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি হানা, হরতাল চলাকালে ঢাকাসহ সারাদেশে দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার, নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ ১ ডিসেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতায় কমরেড সেলিম এসব কথা বলেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক কমরেড সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন এবং ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কমরেড মোশারফ হোসেন নান্নু। সমাবেশ পরিচালনা করেন বিপ্লবী

ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আকবর আলী খান। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সহ-সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক কমরেড ফিরোজ আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক, কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড আব্দুস সাত্তার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড বহ্নিশিখা জামালী প্রমুখ। সমাবেশে কমরেড সেলিম আরও বলেন, বামপন্থিরা হরতাল, আন্দোলন করছে জনগণের স্বার্থে। আমাদের আন্দোলন বুর্জোয়া দলগুলোর ক্ষমতার কামড়াকামড়ির জন্য নয়। বিএনপি বলছে, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি। কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে তারাও দাম বাড়িয়েছে। আবার আওয়ামী লীগও বিরোধী দলে থাকলে কখনও কখনও দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করে। ক্ষমতার বাইরে থাকলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বুর্জোয়া দলগুলো ক্ষমতার সংকীর্ণ স্বার্থে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে কখনও কখনও জনগণের পক্ষে কথা বলে। আসলে তাদের অবস্থান জনগণের স্বার্থের বিপক্ষে। জনগণের স্বার্থে আওয়ামী লীগ, বিএনপিকে চিরতরে বিরোধী দলে পরিণত করতে হবে। বামপন্থিদের ক্ষমতায় বসাতে হবে। সমাবেশে কমরেড সাইফুল বলেন, সরকারের পেটোয়া পুলিশ বাহিনী ফ্যাসিবাদী কায়দায় সিপিবি’র কেন্দ্রীয়

অফিসে, সারাদেশে নেতা-কর্মীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছে। ক্ষমতার মোহে অন্ধ সরকার জনগণের স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের শিক্ষা নির্যাতন চালিয়ে, জোর করে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে যথাযথ জবাব দেওয়া হবে। কমরেড রতন বলেন, সরকার দলীয় একজন নেতা অভিযোগ করে বলেছেন, হরতাল করে নাকি বামপন্থিরা মৌলবাদীদের শক্তিশালী করছে! কিন্তু নির্মম সত্য হচ্ছে, সরকার দলীয় ওই নেতা মৌলবাদী হেফাজতের সঙ্গে সরকারের আপসের উদ্দেশ্যে হেফাজত নেতার কাছে ছুটে গিয়েছিলেন এবং হেফাজত নেতার পায়ের কাছে বসে পড়েছিলেন। এই সরকার মৌলবাদীদের সঙ্গে আপস করে কীভাবে দেশকে মৌলবাদী ধারায় নিয়ে গেছে সেটা দেশবাসী ভালো করেই জানে। কমরেড নান্নু বলেন, সরকার সম্পূর্ণ অযৌক্তিভাবে সকল মতামতকে উপেক্ষা করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছিলেন কীভাবে বিদ্যুতের দাম কমানো সম্ভব। দমন-পীড়ন চালিয়ে সরকার জনগণের মুখ বন্ধ করে রাখতে চায়। সমাবেশ থেকে বিদ্যুৎ ও চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর দাবিতে আগামী ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় সচিবালয়ের সামনে এবং সারাদেশে ডিসি অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরনো পল্টনে এসে শেষ হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..