বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার ও চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর দাবিতে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার হরতাল শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে সমাপনী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ- এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আক্তার, বাসদ নেত্রী প্রকৌশলী শম্পা বসু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র ইভা মজুমদার ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির আমেনা আক্তার, প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নাসির উদ্দিন প্রিন্স।
নেতৃবৃন্দ

তাদের বক্তব্যে শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে হরতাল সফল করার জন্য দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানান। তারা বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার তাদের দল ও জোটের নেতাকর্মীদের লুটপাটের জন্য বারবার বিদ্যুৎ-গ্যাস ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করছে। স্বাধীনতার পর গত ছেচল্লিশ বছর ধরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি, জামাত-জাতীয় পার্টি এবং কখনো কখনো সামরিক পোশাকে শাসকশ্রেণি ক্ষমতায় ছিল। তারা দেশকে লুটপাট করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। পুনরায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জাতিকে লুটের সুযোগ তাদেরকে দেয়া হবে না। নেতৃবৃন্দ সরকারকে অবিলম্বে বর্ধিত বিদ্যুতের মূল্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানান, নতুবা আরো কঠোর আন্দোলন-কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন সূচিত হবে।
এর আগে নেতৃবৃন্দ বলেন, হরতাল শুরুর আগেই পুলিশ বিনা উস্কানিতে সিপিবি কার্যালয়ে চার রাউন্ড টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে। সিপিবি কার্যালয়ের ৬ষ্ঠ তলায় নেতা-কর্মীদের অবরুদ্ধ করে পাঁচতলা পর্যন্ত দখল করে নেয় পুলিশ। রুমে রুমে তল্লাশি করে সিপিবি’র ১১জন ছাত্র-যুব-শ্রমিক নেতাকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের আগে ও পরে তাদের উপর অমানুষিক

নির্যাতন চালানো হয়। যে সকল পুলিশ অবৈধভাবে সিপিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাংচুর করেছে, নেতৃবৃন্দকে নির্যাতন করেছে, গ্রেফতার করেছে অবিলম্বে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গাইবান্ধায় জোটের নেতা সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য মিহির ঘোষ, ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আজিজুর রহমান, গণসংহতি আন্দোলনের জুলহাস নাইন বাবু, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আহসান হাবীব লাবলু, খুলনায় সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এ রশীদ, জামালপুরে সিপিবি জেলা কমিটির সভাপতি মোজহারুল হক, সহকারি সাধারণ সম্পাদক মানিক, ঢাকায় ছাত্রনেতা দীপক শীল, জহর লাল রায়, মোর্শেদ হালিম, নোবেল বড়–য়া, যুবনেতা শাখারভ হোসেন সেবক, গার্মেন্ট শ্রমিক নেতা জালাল হাওলাদার, কৃষক নেতা নিমাই গাঙ্গুলী, ক্ষেতমজুর নেতা মোতেলব হোসেন, সিপিবি নেতা আহমেদ তালাত তাহজীব, বাসদ-এর বাসুদেব, নয়ন, খুলনায় বাসদ নেতা মিথুন, ছাত্রনেতা উত্তম, গাইবান্ধায় বাসদ (মার্কসবাদী)’র মিনা, মাসুদা, যশোরে বাসদ-এর

মাসুদ, জামালপুরে ছাত্রনেতা সুজনসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বলেন, কিশোরগঞ্জে সিপিবি’র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড এডভোকেট এনামুল হক, রজব আলী, মাহতাব উদ্দীন, বাসদ-এর জোনায়েদ, রীতা, জাকির, খুলনায় বাসদ-এর লাবণ্য ঘরামী, শান্তনু, লিপন, নিরঞ্জন, সুপ্রভাত, সিপিবি’র নিতাই, মৃত্যুঞ্জয়ের উপর পুলিশ নির্মম নির্যাতন চালায়। এছাড়া কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ঢাকায় ছাত্রদের কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা প্রদান করে এবং কোথাও কোথাও হরতালের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। নেতৃবৃন্দ পুলিশের এহেন গুন্ডাগিরির তীব্র নিন্দা জানান।
আগামীকালকের প্রতিবাদ কর্মসূচি
সমাবেশ থেকে সিপিবি কার্যালয়ে পুলিশের অবৈধ প্রবেশ, হামলা ও ভাংচুর এবং সারাদেশে সিপিবি-বাসদ-বাম মোর্চার নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বিকাল ৪টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে।