
আজ ১১ নভেম্বর। ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বেতিয়ারাতে পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করে জীবন উৎসর্গ করেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর ৯ জন গেরিলা যোদ্ধা। বেতিয়ারার এই যুদ্ধে যাঁরা শহীদ হন, তাঁরা হচ্ছেন- নিজাম উদ্দিন আজাদ, সিরাজুম মুনীর, মো. শহীদুল্লাহ, বশির মাস্টার, আব্দুল কাইয়ুম, জহিরুল হক দুদু, আওলাদ হোসেন, কাদের মিয়া, সফিউল্লাহ।
বেতিয়ার শহীদ দিবস উপলক্ষে আজ কুমিল্লার বেতিয়ারায় বেতিয়ারা শহীদ স্মৃতিসৌধ চত্ত্বরে বেতিয়ারার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিরক্ষা কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় জিয়াউল হোসেন জিবুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক কমরেড আহসান হাবিব লাভলু, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জিলানী শুভ, সিপিবি নোয়াখালী জেলা কমিটির সভাপতি শহীদ উদ্দিন বাবুল, কুমিল্লা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পরেশ কর, কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, গণতন্ত্রী পার্টির ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ আহম্মদ সেলিম, যুব ইউনিয়ন কুমিল্লা জেলা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান কাউছার, নরসিংদীর রায়পুরার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবদুল ওয়াদুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম মহিউদ্দীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা (অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার) তাজুল ইসলাম, শব্দসৈনিক সামশুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ কুমিল্লা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক

সম্পাদক আয়েশা জামান শিমু, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার প্রমোদ চক্রবর্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক পাটোয়ারী।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, যে স্বপ্ন ও অঙ্গীকার নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই স্বপ্ন ও অঙ্গীকার থেকে বাংলাদেশ অনেক দূরে সরে গেছে। শাসকদের আপোসকামীতা, আশ্রয়-প্রশ্রয়, ক্ষমতাকেন্দ্রীক নানা হিসাব-নিকাশের কারণে, যুদ্ধাপরাধীরা এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ভিত্তির ওপর আঘাত হানছে। দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হলে, মুক্তিযুদ্ধের পুনর্জাগরণ ঘটাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ-বিএনপি‘র দ্বিদলীয় মেরুকরণের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প বলয় গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই মুক্তিযুদ্ধের লিখিত ইতিহাসে বামপন্থীদের অবদানের কথা উপেক্ষিত হয়েছে। বেতিয়ারার সাহসী লড়াই ও আত্মদানকে জাতীয়ভাবে তুলে ধরতে হবে।
বক্তারা অবিলম্বে যুদ্ধাপরাধী জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
আলোচনা সভার আগে বেতিয়ারার শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে কমিউনিস্ট পার্টি-ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনী, সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটি, গণতন্ত্রী পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটি, ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, খেলাঘর আসর, সিপিবি নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ফেনী জেলা কমিটি এবং স্থানীয় জনসাধারণ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে।