লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
১. বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এ দেশের শ্রমিক শ্রেণী ও শ্রমজীবী জনগণের বিপ্লবী রাজনৈতিক দল।
২. সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা এই পার্টির লক্ষ্য।
৩. বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদ-লেনিনবাদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা তার সকল কর্মকান্ড পরিচালনায় ও নীতিসমূহ রচনায় সচেষ্ট থাকবে। সে ক্ষেত্রে পার্টি মার্কস, এঙ্গেলস, লেনিনের চিন্তার বৈজ্ঞানিক মর্মবাণী ও বিষয়বস্তুকে
অনুসরণ ও বিকশিত করে অগ্রসর হওয়ার ধারাকে পার্টির মতাদর্শগত ভিত্তি রূপে বিবেচনা করবে। মতাদর্শের ক্ষেত্রে পার্টি সঠিক মার্কসীয় চিন্তা অনুসরণে যে কোনো প্রকার মতান্ধতা, গোঁড়ামি, শাস্ত্রবদ্ধ চিন্তার প্রবণতা প্রভৃতি হতে
মুক্ত থাকবে এবং তত্ত্ব ও প্রয়োগের আন্তঃসম্পর্ক বিষয়ে মার্কসীয় সূত্র অনুসারে তত্ত্ব ও প্রয়োগকে সকল সময় সৃজনশীলভাবে অগ্রসর ও বিকশিত করতে সচেষ্ট থাকবে।
৪. এই পার্টি সমাজ বিকাশের বিপ্লবী শক্তি হিসেবে সমাজ ও সভ্যতার প্রগতিশীল বিকাশের জন্য সকল সময়ে এবং বিভিন্নমুখী ধারায় প্রগতির সচেতন উপাদান হিসেবে ভূমিকা পালনে সচেষ্ট থাকবে।
৫. পার্টি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে।
৬. দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সমাজ বিকাশের ধারার বিশিষ্টতা ও জনগণের সামাজিক মনস্তত্ত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সুনির্দিষ্ট বাস্তবতাকে যথাযথভাবে বিবেচনায় নিয়ে এই পার্টি চূড়ান্ত লক্ষ্যের পথে অগ্রসর
হওয়ার জন্য মার্কসবাদী-লেনিনবাদী নীতি অনুসারে সুনির্দিষ্ট সময়ের সুনির্দিষ্ট কর্তব্য নির্ধারণ করবে। পার্টি দেশের বিরাজমান অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক পশ্চাৎপদতা ও জনগণের জীবনে বিদ্যমান দারিদ্র্য মোচনের
জন্য, দেশবাসীর বৈষয়িক সম্পদের ও আত্মিক শক্তির বিকাশ সাধন করার জন্য, সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য এবং সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে সর্বোত্তম গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম
করে যাবে।
৭. বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে গড়ে তোলা এবং বিকশিত করার জন্য নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম পরিচালনা করবে।
বাক্-ব্যক্তি স্বাধীনতা, সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য পার্টি কাজ করে যাবে। পার্টির লক্ষ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আদর্শগত ক্ষেত্রে বিভিন্নমুখী
ধারায় আন্দোলন ও সংগ্রাম পরিচালনায় পার্টি সর্বতোভাবে নিয়োজিত থাকবে। পার্টি জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনের ভিত্তিতে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য প্রয়াস চালাবে।
৮. এই পার্টি প্রত্যেক নাগরিকের স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অবাধ অধিকার ও প্রত্যেকের ক্ষেত্রে বিবেকের স্বাধীনতা সুরক্ষার জন্য সব সময় সচেষ্ট থাকবে। পার্টি কূপমন্ডূকতা, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, সঙ্কীর্ণতা, আঞ্চলিকতা,
স্বৈরতান্ত্রিকতা প্রভৃতি পশ্চাৎপদ ধ্যান-ধারণা ও এসবের ধারক প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিসমূহের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে সংগ্রাম করবে এবং সুসভ্য, মানবিক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল মূল্যবোধ ও শক্তিসমূহকে দৃঢ়ভিত্তিক করতে সচেষ্ট থাকবে।
৯. পার্টি সকল ধর্ম-মতের মানুষ ও সকল জাতিসত্তার সমমর্যাদার জন্য, দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ও জাতীয় সংখ্যালঘু তথা ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ন্যায্য অধিকারসমূহ সুরক্ষা করতে এবং সকল প্রকার জাতিগত ও ধর্মীয় বৈষম্য-নিপীড়নের
বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে সংগ্রাম করবে।
১০. পার্টি দেশের নারী সমাজের বিরুদ্ধে অত্যাচার, নিপীড়ন, বৈষম্য অবসানে ও নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠায় নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাবে।
১১. সমাজের সকল দুর্বল অংশ ও সম্প্রদায়ের উন্নয়ন, অগ্রগতি, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পার্টি সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
১২. পার্টি পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, মানুষ ও প্রকৃতি রক্ষায় বিকল্প উন্নয়ন ধারা প্রতিষ্ঠাসহ বহুমুখী ও সামগ্রিক প্রয়াস চালাবে।
১৩. এই পার্টি সারা দুনিয়ার মানব সভ্যতার সাধারণ স্বার্থ রক্ষা ও তা অগ্রসর করার জন্য সব সময় সচেষ্ট থাকবে। মানবমুক্তির মহতি আদর্শ সাম্যবাদে উদ্বুদ্ধ এই পার্টি প্রাণের অস্তিত্ব বিলোপের আশঙ্কা থেকে মুক্ত শান্তিপূর্ণ বিশ্বের জন্য
সংগ্রাম করে যাবে। এই লক্ষ্যে পার্টি আণবিক ও তাপ পারমাণবিক যুদ্ধের বিপদের সম্পূর্ণ অবসান, সাধারণ নিরস্ত্রীকরণ প্রভৃতির জন্য দৃঢ়ভাবে সংগ্রাম করবে।
১৪. পার্টি উন্নয়নশীল বিশ্বের
স্বার্থ রক্ষায়, নয়া আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গণতন্ত্রায়নে এবং প্রতিটি জাতির নিজস্ব পথ বাছাইয়ের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করবে।
১৫. পার্টি পৃথিবীর দেশে দেশে শোষিত-বঞ্চিত মানুষ ও নিপীড়িত জাতিসমূহের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সমর্থন ও একাত্মতা প্রকাশে দ্বিধাহীন থাকবে এবং সাম্রাজ্যবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ, বর্ণবাদ, জায়নবাদ প্রভৃতি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির
বিরুদ্ধে দৃঢ় সংগ্রাম পরিচালনা করবে। পার্টি মানব সভ্যতার অগ্রগতি ও প্রগতির ক্ষেত্রে সকল অবদান ও সাফল্যকে যথাযথ মূল্য দেবে। পার্টি জাতীয় স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে প্রত্যেক জাতি ও রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব, মৈত্রী ও সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কাজ
করবে এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশসমূহের সঙ্গে বিশেষত প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে সচেষ্ট থাকবে।
১৬. পার্টি সর্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদের সুমহান আদর্শে পরিচালিত হবে। পার্টি প্রতিটি দেশের কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ণ স্বাধীনতা, সমমর্যাদা ও মতের বৈচিত্র্যের স্বীকৃতির ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী কমিউনিস্ট আন্দোলনের সকল শক্তির ঐক্য-সংহতি
জোরদার করার জন্য সচেষ্ট থাকবে। বিশ্বব্যাপী সমাজতন্ত্রের শক্তি ও অবদানকে সংহত করার জন্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি প্রচেষ্টা চালাবে। পার্টি একই সঙ্গে বিশ্ব পরিসরে মেহনতি মানুষের আন্দোলনের অন্যান্য অংশ এবং
প্রগতিশীল ও শান্তি, স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের স্বপক্ষের সকল শক্তির ঐক্য ও সংহতি জোরদার করার প্রচেষ্টা চালাবে।
১৭. এই পার্টি ব্যাপক জনগণের, বিশেষত শ্রমিক শ্রেণী ও শ্রমজীবী মানুষের সৃজনশীল শক্তি ও ভূমিকার উপর আস্থাশীল থেকে তার সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করবে এবং জনগণের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শিক্ষা গ্রহণ করে তাদের
আস্থাভাজন পার্টি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ও বিকশিত করতে সচেষ্ট থাকবে।
১৮. গণতন্ত্র ও কেন্দ্রীকতা এই উভয় উপাদানের সুসমন্বয়ের মাধ্যমে পার্টি তার সাংগঠনিক নীতি পরিচালনা করবে এবং সুশৃঙ্খল, সচেতন, বিপ্লবী রাজনৈতিক দল হিসেবে তার কার্যাবলী পরিচালনা করবে। এই পার্টির কাজকর্ম- একাধারে
একক কেন্দ্র ও একক সাধারণ লাইনে স্বীকৃতি এবং অন্যদিকে পার্টির অভ্যন্তরে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক বিধি-বিধানের প্রয়োগ- এই নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। সংগঠনের অভ্যন্তরে পার্টি যেমন গঠনতন্ত্রের নির্দিষ্টভাবে বিধি-বিধান
অনুসারে গণতন্ত্রের চর্চা ও প্রয়োগ, চূড়ান্ত লক্ষ্য এবং শ্রেণী, আদর্শগত ভিত্তি অক্ষুণ্ণ রেখে পার্টির অভ্যন্তরে মতবৈচিত্র্যের সুযোগ এবং পার্টির নীতি প্রণয়ন ও কার্যকলাপ পরিচালনায় সদস্যবৃন্দের ও সকল স্তরের সংগঠনের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ও
ভূমিকা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হবে, ঠিক তেমনি পার্টিতে কোনো শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ, উপদল, দলাদলির প্রবণতা প্রভৃতির বিরুদ্ধে কঠোর থাকবে। পার্টি নিজেকে আমলাতান্ত্রিকতা, পদমর্যাদাজনিত অহমিকা, স্বেচ্ছাচারী প্রবণতা, সুবিধাবাদ প্রভৃতি
হতে মুক্ত রাখার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।
১৯. গঠনতন্ত্রে ঘোষিত লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিধি-বিধানের ভিত্তিতে পার্টির রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও আদর্শগত ঐক্য সুদৃঢ় করার জন্য পার্টি সব সময় সচেতন প্রয়াস চালাবে।
গঠনতন্ত্র
ধারা-১ : নাম
এই সংগঠনের নাম বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি।
ধারা-২ : প্রতীক
পার্টির প্রতীক হবে আড়াআড়িভাবে বসানো লাল রং-এর হাতুড়ি ও কাস্তে।
ধারা-৩ : পতাকা
পার্টি পতাকার রং হবে গাঢ় লাল। এর দৈর্ঘ্য হবে প্রস্থের দেড় গুণ এবং দন্ডের দিকে উপরের কোণে আড়াআড়িভাবে সাদা রংয়ের হাতুড়ি ও কাস্তে থাকবে।
ধারা-৪ : পার্টির সাংগঠনিক নীতি : গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা
পার্টি তার মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য লেনিনবাদী সাংগঠনিক নীতি অনুসরণ করবে এবং গণতন্ত্র ও কেন্দ্রিকতা এই উভয় উপাদানের সুসমন্বয়ের মাধ্যমে একটি সুশৃঙ্খল, সচেতন, বিপ্লবী রাজনৈতিক দল হিসেবে তার সাংগঠনিক
কাজ পরিচালনা করবে। পার্টির এই সাংগঠনিক নীতি পার্টির অভ্যন্তরে একাধারে একক কেন্দ্র ও একক সাধারণ লাইনের স্বীকৃতি এবং অন্যদিকে সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক বিধি-বিধানের প্রয়োগ ও চর্চা সুনিশ্চিত করবে। পার্টির শ্রেণীভিত্তি, চূড়ান্ত লক্ষ্য ও
মতাদর্শগত ভিত্তি অক্ষুণ্ণ রেখে পার্টির অভ্যন্তরে মতামতের বৈচিত্র্য থাকতে পারবে। পার্টির সাংগঠনিক নীতিতে বিশ্বজনীন মানবিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও সচেতন বিপ্লবী শৃঙ্খলার যথাযথ প্রতিফলন থাকবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাংগঠনিক নীতিসমূহ নিম্নরূপ
:
১. সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত পার্টির প্রতিটি কমিটি ও কর্মকর্তা গোপন ব্যালটে নির্বাচিত হবেন।
২. সংখ্যালঘিষ্ঠদেরকে সংখ্যাগরিষ্ঠের এবং নিচের স্তরের কমিটিকে উপরের স্তরের কমিটির সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ কার্যকর করতে হবে। পার্টির কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ পালন করা সকল পার্টি সংগঠন ও পার্টি সদস্যের জন্য বাধ্যতামূলক হবে।
৩. নিচের স্তরের পার্টি কমিটিসমূহ উপরের স্তরের কমিটিসমূহের কাছে নিয়মিত রিপোর্ট করবে এবং তাদের পরামর্শ ও নির্দেশ গ্রহণ করবে। উপরের স্তরের কমিটিসমূহ নিয়মিত নিচের স্তরের কমিটিসমূহের কাছে সামগ্রিক কাজকর্ম ও চলমান রাজনীতি সম্পর্কে রিপোর্ট করবে।
৪. উপরের স্তরের কমিটিগুলো পার্টির সকল নীতি, তার প্রয়োগ ও কাজকর্ম সম্পর্কে পার্টির অভ্যন্তরে খোলাখুলি আলোচনায় পার্টি সদস্যদের উৎসাহিত করবে।
৫. পার্টির সকল স্তরে খোলাখুলি সমালোচনা ও আত্মসমালোচনায় উৎসাহ প্রদান করা হবে।
৬. পার্টির সকল স্তরে আমলাতান্ত্রিক ঝোঁকের বিরুদ্ধে অবিরাম সংগ্রাম পরিচালিত হবে।
৭. পার্টি সংগঠনের কোনো গুরুতর মতভেদ দেখা দিলে, প্রথমে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তার নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা চালানো হবে এবং তা সম্ভব না হলে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
৮. যে কোনো পার্টি সদস্যকে কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক প্রণীত বিধি অনুযায়ী তার ভিন্নমত প্রচার করতে দেয়া হবে।
৯. পার্টির রাজনৈতিক-সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অবদান রাখার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ উপরের স্তরের যে কোনো কমিটির কাছে নিচের স্তরের যে কোনো কমিটির মতামত, পরামর্শ ও প্রস্তাব পাঠানোর অধিকার থাকবে।
১০. পার্টির অভ্যন্তরে কোনো ধরনের উপদল সৃষ্টি বা দলাদলি গ্রহণযোগ্য হবে না।
ধারা-৫ : সদস্যপদ
১. আঠার বছর বা তার অধিক বয়সের জাতি-ধর্ম-সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিক পার্টির আদর্শ-উদ্দেশ্য-লক্ষ্য গ্রহণ করে পার্টির গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচি মেনে চলতে রাজি হলে, নিয়মিত পার্টির চাঁদা ও লেভি প্রদানে সম্মত হলে এবং পার্টির কোনো না কোনো সংগঠনে সংগঠিত থেকে কাজ করতে প্রস্তুত থাকলে, তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। একমাত্র ব্যক্তিগতভাবেই কেউ পার্টির সদস্যপদ লাভ করতে পারবেন।
২. পার্টির সদস্যপদ প্রার্থীকে সদস্যপদ পাওয়ার জন্য, পার্টি শাখার কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন ও জানেন এমন দু’জন পার্টি সদস্য দায়িত্ব সহকারে আবেদনকারী সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ সুপারিশ করলে, শাখার সাধারণ সভায় সদস্য পদপ্রার্থীর আবেদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
৩. শাখার সাধারণ সভায় সদস্যপদ প্রার্থীর আবেদন অনুমোদন লাভ করলে, তিনি এই অনুমোদনের তারিখ হতে ছয় মাস পর্যন্ত প্রার্থীসদস্য বলে গণ্য হবেন।
৪. প্রার্থী সদস্যদের পূর্ণ সদস্যদের মতো একই অধিকার ও কর্তব্য থাকবে, তবে তাদের নির্বাচন করার বা নির্বাচিত হওয়ার অথবা কোনো প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটির সময় ভোট দানের অধিকার থাকবে না।
৫. প্রার্থী সদস্যদের আদর্শগত ও রাজনৈতিক শিক্ষা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখা ও কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং তাদেরকে পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার জন্য উপযুক্ত করে তোলার প্রচেষ্টা নেবে।
৬. প্রার্থী সদস্যপদের মেয়াদ শেষ হলে, শাখার সাধারণ সভা পূর্ণ সদস্যপদ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রয়োজনে প্রার্থী সদস্যপদের মেয়াদ অনূর্ধ্ব ছয় মাসের জন্য বাড়ানো যাবে। সংশ্লিষ্ট পার্টি সংগঠনের প্রার্থী সদস্য সম্বন্ধে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত না থাকলে, ছয় মাস পর তিনি আপনা আপনি পূর্ণ সদস্য বলে বিবেচিত হবেন।
৭. পূর্ণ সদস্যপদ অনুমোদনের পর, সংশ্লিষ্ট পার্টি সংগঠন ঊর্ধ্বতন পার্টি কমিটির কাছে রিপোর্ট করবে। ঊর্ধ্বতন কমিটি কোনোরূপ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানালে, তা নিম্নতর কমিটিসমূহ বিবেচনা করবে। জেলা বা কেন্দ্রীয় কমিটি এ ব্যাপারে নিম্নতর কমিটিসমূহের গৃহীত সিদ্ধান্তের রদবদল করতে পারবে।
৮. সকল স্তরের পার্টি কমিটিগুলো অনুরূপ পদ্ধতিতে সদস্যপদ প্রার্থীর দরখাস্ত সরাসরি গ্রহণ ও সদস্যপদ প্রদান করতে পারবে। একমাত্র কেন্দ্রীয় কমিটি বিশেষ ক্ষেত্রে পার্টি সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে প্রার্থী সদস্যপদ পর্যায় বাদ দিয়ে সরাসরি পূর্ণ সদস্যপদ প্রদান করতে পারবে।
৯. যদি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের শাখা, আঞ্চলিক, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, থানা অথবা জেলা পর্যায়ের কোনো নেতৃস্থানীয় সদস্য পার্টিতে আসতে চান, তাহলে তার সদস্যপদ প্রদানের পূর্বে ঊর্ধ্বতন কমিটির অনুমতি গ্রহণ করতে
হবে।
১০. কেন্দ্রীয় কমিটির স্থিরকৃত নিয়ম-কানুন অনুসারে, প্রত্যেক পার্টি সদস্যকে প্রতি বছর তার সদস্যপদ নবায়ন করতে হবে।
ধারা-৬ : পার্টি শপথ
বিশেষ কারণে পার্টি অন্য রূপ সিদ্ধান্ত না নিয়ে থাকলে, পূর্ণ সদস্যপদ অনুমোদনের পর প্রত্যেক সদস্যকে শাখার সাধারণ সভায় অথবা কমিটি সভায় নিম্নোক্ত শপথ গ্রহণ করতে হবে :
“আমি সশ্রদ্ধ চিত্তে শপথ গ্রহণ করছি যে, আমি মার্কসবাদ-লেনিনবাদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী দ্বারা পরিচালিত হয়ে মানবমুক্তির সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত করবো। আমি পার্টির গঠনতন্ত্র, কর্মসূচি ও সিদ্ধান্ত সততার সাথে মেনে চলবো এবং তা বাস্তবায়নে নিষ্ঠাবান থাকবো। আমি পার্টি সদস্যের সম্মান ও পার্টির বিপ্লবী ঐতিহ্য ও মর্যাদা রক্ষায় যত্নবান হবো। আমি আমার দেশের শ্রমিক শ্রেণী, মেহনতি মানুষ, জনগণ ও দেশের স্বার্থে আন্তরিকভাবে কাজ করবো এবং সব সময় পার্টি ও
জনগণের স্বার্থকে নিজের স্বার্থের ওপরে স্থান দেবো। সর্বহারা আন্তর্জাতিকতাবাদের মহান আদর্শে পরিচালিত হয়ে আমি সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ ও বৈষম্য দূর করে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন প্রতিষ্ঠা, পরিবেশ-প্রকৃতি-জীববৈচিত্র্য রক্ষা, শান্তি, স্বাধীনতা,
সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও বিপ্লবী মানবিকতার মূল্যবোধ সুরক্ষা ও বিকাশ এবং মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।”
ধারা-৭ : পার্টির সদস্যের কর্তব্য
পার্টি সদস্যদের নিম্নোক্ত কর্তব্যগুলো পালন করতে হবে :
১. যে পার্টি সংগঠনের তিনি সদস্য, তার অন্তর্ভুক্ত থেকে পার্টির কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করা। পার্টির নীতি ও সিদ্ধান্ত কার্যকর করা। সমাজ জীবনে সম্পৃক্ত থেকে জনগণের স্বার্থে কাজ করা এবং তাদের মধ্যে পার্টির ভিত্তি প্রসারিত ও শক্তিশালী করা।
২. জনগণের মধ্যে থেকে জনগণের স্বার্থে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বহুমুখী ধারার কর্মকান্ড পরিচালনায় উদ্যোগী থাকা। জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণে একনিষ্ঠ থাকা। একই সঙ্গে জনগণকে পার্টির আদর্শ ও রাজনৈতিক লাইনে সচেতন ও সংগঠিত করা।
৩. পার্টির ঐক্য রক্ষা ও শক্তিশালী করা। পার্টির নিয়ম-শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্র মেনে চলা এবং নিয়মিত চাঁদা ও লেভি পরিশোধ করা। পার্টির এবং জাতি ও শ্রমজীবী জনগণের শত্রুর গণবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সব সময়ের জন্য সতর্ক ও সক্রিয় থাকা। নিজের গুণগত মান ও চেতনা এবং রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক জ্ঞান ক্রমে উন্নত করা। পার্টির পত্রিকা ও সাহিত্য পড়া এবং প্রচার করা। ভিন্ন মতের প্রতি সহনশীলতা ও সম্মানবোধ থাকা।
৪. পার্টির সদস্য ও কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নত করা এবং পার্টির মধ্যে ভ্রাতৃত্বমূলক, কমরেডসুলভ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
৫. সমালোচনা ও আত্মসমালোচনার মাধ্যমে যৌথভাবে কাজের পদ্ধতি উন্নত করা এবং নিজের ও সকলের কাজের উন্নতি সাধনে সাহায্য করা। যৌথভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কাজে ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও দায়িত্ব পালন করা।
৬. পার্টির কাছে সরলভাবে সত্য প্রকাশ করা এবং পার্টি আরোপিত কোনো গোপনীয়তা ভঙ্গ না করা।
৭. নিজের পেশাগত কাজের যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সচেষ্ট থাকা। কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও কাজের উৎকর্ষ দিয়ে অন্যদের কাছে দৃষ্টান্তস্থানীয় হয়ে ওঠা এবং অন্যদের কাজে অনুপ্রাণিত করা।
৮. দেশ, জাতি, জনগণ ও পার্টির স্বার্থকে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থান দেয়া।
৯. সততা, নীতিনিষ্ঠা, উচ্চ নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলী, সত্য ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম করার মানসিকতা, সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোসহীন মনোভাব প্রভৃতি গুণাবলী অর্জনে সব সময় যত্নবান থাকা।
১০. কোনো বিশেষ কারণে পার্টি অব্যাহতি না দিলে, কোনো না কোনো শাখা বা কমিটিতে সংগঠিত থাকা।
ধারা-৮ : সদস্যের অধিকার
পার্টি সদস্যের নিম্নোক্ত অধিকারগুলো থাকবে :
১. পার্টি সংগঠনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ও নির্বাচিত হওয়া।
২. পার্টির নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের আলোচনায় স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করা।
৩. পার্টি সভায় যে কোনো সংগঠন, সদস্য ও নেতৃস্থানীয় সদস্যদের দোষ-গুণ আলোচনা করা।
৪. কোনো পার্টি শাখা বা কমিটিতে সংগঠিত কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে পার্টি শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আলোচিত হলে, সংশ্লিষ্ট সদস্যের উক্ত পার্টি সভায় উপস্থিত থেকে আত্মপক্ষ সমর্থন করা।
৫. কোনো পার্টি সদস্য সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে গৃহীত পার্টি সিদ্ধান্তের বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করলে, ঊর্ধ্বতন কমিটি, এমনকি কেন্দ্রীয় কমিটি ও কংগ্রেসের কাছে তার বক্তব্য পেশ করতে পারবেন। তবে ইতোমধ্যে তিনি অবশ্যই সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী
কাজ করে যাবেন এবং কাজের অভিজ্ঞতা ও সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তার বক্তব্যগুলো যাচাই করতে চেষ্টা করবেন।
৬. পার্টি কংগ্রেসসহ যে কোনো ঊর্ধ্বতন পার্টি সংগঠনের কাছে তার কোনো প্রস্তাব, বক্তব্য ও আবেদন পেশ করা।
৭. কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হলে, কেন্দ্রীয় কমিটি, কন্ট্রোল কমিশন, পার্টি কংগ্রেসসহ সকল ঊর্ধ্বতন কমিটির কাছে গৃহীত ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা।
ধারা-৯ : সদস্যপদ বাতিল
সন্তোষজনক কারণ ছাড়া কোনো পার্টি সদস্য একটানা ছয় মাস পর্যন্ত শাখা বা কমিটি সভায় অনুপস্থিত থাকলে অথবা পার্টি তৎপরতায় অংশগ্রহণ না করলে কিংবা প্রতি বছর পার্টি সদস্যপদ নবায়নের সময় পার্টিকে দেয় বার্ষিক চাঁদা না দিলে অথবা ধার্যকৃত লেভি পরিশোধ না করে থাকলে, তার পার্টি সদস্যপদ বাতিল করে গণ্য হবে।
ধারা-১০ : পার্টি সদস্যপদ হতে পদত্যাগ
পার্টি সদস্যের সদস্যপদ ত্যাগের অধিকার থাকবে। কোনো পার্টি সদস্য সদস্যপদ ত্যাগ করতে চাইলে, নিজ সংগঠনের কাছে কারণ দর্শিয়ে লিখিতভাবে জানাতে হবে। ঊর্ধ্বতন কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট সংগঠন তার সদস্যপদ ত্যাগ অনুমোদন করতে পারবে। পার্টি সদস্যপদ ত্যাগের জন্য আবেদন করার সময় সংশ্লিষ্ট সদস্যকে তার পার্টি কার্ড, কাগজপত্র ও পার্টির অন্যান্য সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট পার্টি সংগঠনকে ফেরত দিতে হবে।
যে পার্টি সদস্য সদস্যপদ ত্যাগের জন্য আবেদনপত্র জমা দেবেন, তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মতো কারণ থাকলে তার আবেদন সদস্যপদ ত্যাগ হিসেবে গণ্য না হয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে গণ্য হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন পার্টি কমিটির
অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
ধারা-১১ : সদস্যের দেয় চাঁদা ও লেভি
১. কেন্দ্রীয় কমিটি পার্টি সদস্যদের বার্ষিক চাঁদার হার ধার্য করবে। সদস্যপদ গ্রহণের সময় এবং প্রতি বছর সদস্যপদ নবায়নের সময় এই চাঁদা প্রদান করতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য চাঁদার শতকরা ২০ ভাগ পাবে এবং অবশিষ্ট ৮০
ভাগ বিভিন্ন কমিটির মধ্যে বিতরণের হার নির্ধারণ করে দেবে।
২. কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্যদের আয়ের উপর লেভি ধার্য করবে এবং এই লেভির হার ও তার বণ্টনবিধি নির্ধারণ করবে।
ধারা-১২ : শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
১. পার্টি শৃঙ্খলা সর্বস্তরের সকল সদস্যের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য। পার্টির গঠনতন্ত্র, সিদ্ধান্ত ও শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কোনো কাজ করলে অথবা পার্টির পক্ষে অসম্মানজনক বা ক্ষতিকর কোনো কাজ করলে, কোনো পার্টি সংস্থা তার অন্তর্ভুক্ত ও অধীনস্থ সদস্যকে সতর্ক, নিন্দা, দায়িত্ব থেকে সাময়িক অথবা স্থায়ী অব্যাহতি, সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত, এমনকি পার্টি থেকে বহিষ্কার করতে পারবে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে ঊর্ধ্বতন কমিটিতে রিপোর্ট করতে হবে।
দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি অথবা সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করার সময়সীমা সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত হতে পারবে। সাময়িকভাবে স্থগিতের সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর, সংশ্লিষ্ট সদস্যের সদস্যপদ পুনরায় বহাল হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত থাকার সময় সংশ্লিষ্ট সদস্যের কমিটিতে নির্বাচিত পদ সম্পর্কে পৃথক কোনো সিদ্ধান্ত না হয়ে থাকলে, সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর তিনি পুনরায় তার পদে বহাল হবেন এবং আগের দায়িত্বসমূহ যথারীতি পালন করবেন। সদস্যপদ স্থগিত থাকাকালে সেই সদস্যের কার্যকলাপ সম্পর্কে কোনো অভিযোগ থাকলে, সেক্ষেত্রে পুনরায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয় বিবেচনা করা যাবে।
২. শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পূর্বে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সদস্যকে সংশোধনের জন্য চেষ্টা করতে হবে। শৃঙ্খলাজনিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য হবে সংশ্লিষ্ট সদস্যের ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধনের চেষ্টা করা।
৩. পার্টি থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। তবে ঊর্ধ্বতন কমিটির অনুমোদন না আসা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কমিটির সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
৪. পার্টি থেকে কোনো সদস্য বহিষ্কৃত হলে একমাত্র যে কমিটি ওই বহিষ্কার আদেশ অনুমোদন করেছে, সেই কমিটি বা ঊর্ধ্বতন কমিটি সেই আদেশ প্রত্যাহার করতে পারবে এবং বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি পার্টি সদস্য বলে বিবেচিত হবেন। ঊর্ধ্বতন কমিটি বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করার আগে যে কমিটি বহিষ্কার আদেশ অনুমোদন করেছে, তার মতামত পুনরায় ভালোভাবে জেনে নেবে।
৫. বিশেষ কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি কোনো সদস্যকে বহিষ্কার না করে তার সদস্যপদ সরাসরি বাতিল করতে পারবে।
৬. সংগঠনের যে কোনো স্তরের কমিটিতে নির্বাচিত কোনো সদস্য সন্তোষজনক কারণ
ছাড়া সংশ্লিষ্ট কমিটির সভায় পর পর তিন বার অনুপস্থিত থাকলে কিংবা সংশ্লিষ্ট কমিটিতে তার নির্ধারিত দায়িত্ব ন্যূনতমভাবে পালন করতে ব্যর্থ হলে, কমিটি থেকে তাকে অপসারণ করা যাবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটির মোট সদস্য সংখ্যার অর্ধেকের বেশি সংখ্যক সদস্যের সম্মতির প্রয়োজন হবে।
৭. কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ উল্লেখ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। তবে গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে অভিযোগ দায়ের ও আত্মপক্ষ সমর্থন সাপেক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বহিষ্কার করা যাবে।
৮. গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গ, পার্টির নীতি ও সিদ্ধান্ত না মানা, উপদলীয় তৎপরতায় লিপ্ত হওয়া প্রভৃতি অপরাধে কেন্দ্রীয় কমিটি বা জেলা কমিটি তার অধীনস্থ যে কোনো কমিটি বাতিল করতে পারবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। তবে জরুরি বলে বিবেচিত হলে, কেন্দ্রীয় কমিটি বা জেলা কমিটি সংশ্লিষ্ট কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে পারবে। কোনো কমিটি এভাবে বাতিল হলে কেন্দ্রীয় কমিটি বা জেলা কমিটি নতুন নির্বাচন পরিচালনা করতে অথবা নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি মনোনীত করতে পারবে। এভাবে মনোনীত কমিটি নির্বাচিত কমিটির মতো সকল অধিকার ভোগ করবে। বাতিলকৃত কমিটি এভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য যে কমিটিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তার কাছে এবং ঊর্ধ্বতন কমিটিসহ কন্ট্রোল কমিশনের কাছে আবেদন করতে পারবে। তবে এ আবেদনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
ধারা-১৩ : সভার কোরাম, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নির্বাচন
১. (ক) সভা অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে অবগত করা অথবা নোটিশ প্রদানের পর এক-তৃতীয়াংশ সদস্য উপস্থিত হলে, সভার কোরাম পূরণ হয়েছে বলে গণ্য হবে। তবে যদি কোনো ক্ষেত্রে মোট সদস্য সংখ্যা সাত জনের কম হয়, তাহলে কোরাম পূরণ হওয়ার জন্য অর্ধেক সদস্যকে উপস্থিত হতে হবে।
(খ) সংগঠনের যে কোনো পর্যায়ের সভায় কোনো সদস্য সম্পর্কে শাস্তিমূলক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হলে, সে সভায় সংশ্লিষ্ট সংগঠনের কমপক্ষে অর্ধেক সদস্যের উপস্থিত থাকতে হবে।
২. সংগঠনের যে কোনো পর্যায়ের আলোচ্য বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
৩. (ক) যে কোনো স্তরে কমিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে, পূর্বতন কমিটির সদস্য ছিলেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা যেন নতুন কমিটিতে তিন-চতুর্থাংশের বেশি না হয়, সে জন্য চেষ্টা করতে হবে।
(খ) যে কোনো স্তরের কমিটিতে যেন কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ নারী থাকেন, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে।
(গ) যে কোনো পর্যায়ের কমিটি নির্বাচনের পূর্বে তার সদস্য সংখ্যা সম্বন্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিতে হবে। বিদায়ী কমিটি প্রথমে এ সংখ্যা সম্পর্কে একটা প্রস্তাব পেশ করবে। নির্বাচকমন্ডলীর যে কোনো সদস্য তার নিজের প্রস্তাব
দিতে পারবেন।
(ঘ) বিদায়ী কমিটি তাদের কার্যকালের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সামগ্রিক বিবেচনায় নতুন কমিটির একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করবে। সংশ্লিষ্ট নির্বাচকমন্ডলীর যে কোনো সদস্য নির্ধারিত সংখ্যার মধ্যে তার নিজের প্রস্তাব দিতে পারবেন।
তবে এ প্রস্তাব নির্বাচকমন্ডলীর যে কোনো সদস্যের দ্বারা সমর্থিত হতে হবে। (ঙ) আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করা হবে। ঐকমত্যে উপনীত হওয়ার প্রক্রিয়ায় প্রস্তাবক অথবা যার নাম প্রস্তাব করা হবে, তিনি নিজে তার নাম প্রত্যাহার করতে পারবেন।
(চ) যদি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে বিদায়ী কমিটি কর্তৃক প্রস্তাবিত নামের তালিকা এবং অন্যান্য প্রস্তাবিত নামের উপর গোপন ব্যালটে ভোট গ্রহণ করে নতুন কমিটি নির্বাচন করা হবে।
৪. (ক) কোনো কমিটি তার কর্মকর্তা অথবা সভাপতিমন্ডলী বা সম্পাদকমন্ডলী নির্বাচনের সময় সে বিষয়ে পূর্বতন কমিটির কোনো প্রস্তাব থাকলে, সে প্রস্তাবসহ অন্যান্য প্রস্তাব বিবেচনা করবে এবং প্রথমে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সে বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে এবং ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত না হলে, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
(খ) প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো কমিটি আগে আলোচ্যসূচি দিয়ে ডাকা সভায় তার কর্মকর্তাসহ নেতৃত্ব পরিবর্তন করতে অথবা পদ শূন্য থাকলে সে পদে নতুন কাউকে নির্বাচিত করতে পারবে। কমিটিতে কোনো আসন শূন্য থাকলে বা হলে, সে ক্ষেত্রেও কমিটি সেই শূন্য আসনে নতুন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
ধারা-১৪ : গঠনতন্ত্রের সংশোধনী
পার্টি গঠনতন্ত্রের
সংশোধন কেবলমাত্র পার্টি কংগ্রেসই করতে পারবে। পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠানের কমপক্ষে এক মাস পূর্বে পার্টির কোনো সদস্য, শাখা বা যে কোনো পর্যায়ের কমিটি গঠনতন্ত্রের সংশোধনী সংক্রান্ত যে কোনো প্রস্তাব কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠাতে পারবে। অতঃপর কেন্দ্রীয় কমিটি তার নিজস্ব প্রস্তাব এবং গঠনতন্ত্র সংশোধন সম্পর্কে তার নিজস্ব প্রস্তাব কংগ্রেসে উত্থাপন করবে। কংগ্রেসে উপস্থিত প্রতিনিধিদের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনে পার্টি গঠনতন্ত্র সংশোধন করা যাবে।
ধারা-১৫ : পার্টি কংগ্রেস
১. পার্টি কংগ্রেস বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ সংস্থা। সাধারণভাবে চার বছর পর পর কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি কমপক্ষে তিন মাসের সময় নিয়ে কংগ্রেস আহ্বান করবে এবং কংগ্রেসের স্থান, তারিখ ও আলোচ্যসূচি স্থির করবে। বিশেষ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে কংগ্রেস অনুষ্ঠান করা সম্ভব না হলে, কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সে বিষয়ে কারণ দর্শিয়ে কংগ্রেসে রিপোর্ট করতে হবে।
২. কেন্দ্রীয় কমিটি প্রয়োজনবোধে দুই কংগ্রেসের মধ্যবর্তী সময়ে বিশেষ কংগ্রেস আহ্বান করতে পারবে। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত নিয়মিত কংগ্রেসের প্রতিনিধিগণ বিশেষ কংগ্রেসের প্রতিনিধি বলে গণ্য হবেন।
৩. দুই কংগ্রেসের মধ্যবর্তী যে কোনো সময়ে কংগ্রেসের এক-তৃতীয়াংশ প্রতিনিধি লিখিতভাবে দাবি জানালে, পার্টির বিশেষ কংগ্রেস আহ্বান করতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি এ দাবি অনুসারে বিশেষ কংগ্রেস আহ্বান না করলে, এই প্রতিনিধিগণ নিজেরাই কংগ্রেস আহ্বান করতে পারবেন। এই কংগ্রেসকে ‘তলবি কংগ্রেস’ বলে অভিহিত করা হবে। তবে নিয়মিত কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে অধিকাংশ প্রতিনিধি এই ‘তলবি কংগ্রেসে’ উপস্থিত না হলে, কংগ্রেসের কোনো বৈধতা থাকবে না।
৪. পার্টির সদস্য সংখ্যার ভিত্তিতে জেলা সম্মেলন থেকে কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। নির্বাচন পদ্ধতি ও প্রতিনিধিত্বের সংখ্যানুপাত কেন্দ্রীয় কমিটি নির্ধারণ করে দেবে। এ ক্ষেত্রে নারী, আদিবাসী প্রভৃতি বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি বিশেষ সংখ্যানুপাত নির্ধারণ করতে পারবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সরাসরি পরিচালনাধীন শাখাসমূহ কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক বিশেষভাবে নির্ধারিত সংখ্যানুপাতে কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে।
৫. কেন্দ্রীয় কমিটি, কন্ট্রোল কমিশনের সদস্যবৃন্দ ও উপদেষ্টাগণ পদাধিকার বলে পার্টি কংগ্রেসের প্রতিনিধি হবেন। কংগ্রেসে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অনুপাত এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে যেন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংখ্যা, পদাধিকার বলে
প্রতিনিধিদের সংখ্যার তিন গুণের বেশি হয়।
৬. কেন্দ্রীয় কমিটি কংগ্রেসে যে রণনীতি সংক্রান্ত দলিল অথবা তার কোনো মৌলিক সংশোধনী প্রস্তাব এবং মূল রাজনৈতিক প্রস্তাব উত্থাপন করবে তা কংগ্রেস অনুষ্ঠানের কমপক্ষে দুই মাস পূর্বে সমগ্র পার্টির মধ্যে প্রচার করবে। এই দলিল নিয়ে পার্টির প্রতিটি স্তরে আলোচনা সংগঠিত করতে হবে। পার্টির প্রতিটি সংগঠনের ও প্রত্যেক পার্টি সদস্যের কংগ্রেসে প্রস্তাব পাঠাবার এবং প্রচারিত দলিলের উপর সংশোধনী পাঠাবার অধিকার থাকবে।
৭. কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করার জন্য কংগ্রেস শুরুতেই একটি সভাপতিমন্ডলী নির্বাচন করবে।
৮. কংগ্রেসের দায়িত্ব ও অধিকার হলো :
(ক) পার্টির মূলনীতি, কৌশল প্রভৃতি স্থির করা।
(খ) কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক উত্থাপিত রাজনৈতিক, সাংগঠনিক রিপোর্ট ও অন্যান্য রিপোর্ট, প্রস্তাব প্রভৃতি আলোচনা করা এবং এসব রিপোর্ট ও প্রস্তাব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
(গ) পার্টির কর্মসূচি প্রণয়ন করা এবং প্রয়োজন হলে গঠনতন্ত্র সংশোধন করা।
(ঘ) কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পার্টির কেন্দ্রীয় তহবিলের হিসাবপত্র পরীক্ষার জন্য ‘অডিট কমিটি’ নির্বাচন করা এবং সেই কমিটির রিপোর্ট বিবেচনা করা।
(ঙ) কন্ট্রোল কমিশনের রিপোর্ট বিবেচনা করা এবং প্রয়োজন বোধে সংখ্যা নির্ধারণসহ পার্টির কন্ট্রোল কমিশন নির্বাচন করা।
(চ) পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন করা।
ধারা-১৬ : কেন্দ্রীয় কমিটি
১. দুই কংগ্রেসের মধ্যবর্তী সময়ে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি হলো পার্টির সর্বোচ্চ সংস্থা। কংগ্রেসে যেসব সাধারণ নীতি ও কার্যক্রম গৃহীত হবে তা কার্যকর করা, দুই কংগ্রেসের মধ্যবর্তী সময়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বদান এবং পার্টির নীতি ও গঠনতন্ত্র রক্ষা করা কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্ব। কেন্দ্রীয় কমিটি তার সমুদয় কাজের জন্য কংগ্রেসের কাছে দায়ী থাকবে।
২. কেন্দ্রীয় কমিটি বছরে কমপক্ষে তিনবার কমিটি সভা করবে। সভায় পূর্ববর্তী সভার কার্যবিবরণী অনুমোদনের জন্য উপস্থিত করতে হবে। সভায় সভাপতিমন্ডলী তার
কাজের রিপোর্ট পেশ করবে। সভা আহ্বান, নোটিশ প্রদানের সময়সীমা এবং সভা পরিচালনা প্রয়োজনীয় নানাবিধ পদ্ধতি কেন্দ্রীয় কমিটি নিজেই স্থির করে নেবে।
৩. কেন্দ্রীয় কমিটি তার দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন কমিটি, সাব কমিটি, বিভাগ ও কমিশন গঠন করতে পারবে এবং বিভিন্ন কমরেডকে বিশেষ দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে। কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের কাজের নিয়মাবলী স্থির করে দেবে।
৪. কেন্দ্রীয় কমিটি তার কাজের সুবিধার জন্য কিছু সংখ্যক সংগঠক নিয়োগ করতে পারবে। সংগঠকদের সংখ্যা কেন্দ্রীয় কমিটির মোট সদস্য সংখ্যার এক-চতুর্থাংশের বেশি হতে পারবে না। কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সংগঠকদের আহ্বান করা যাবে। তবে সংগঠকবৃন্দ সভার ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
৫. সমগ্র পার্টির মধ্যে যাতে যৌথভাবে কাজ করার ও নেতৃত্ব দেয়ার এবং সমালোচনা-আত্মসমালোচনার রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়, সে জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি যত্নবান হবে ও উৎসাহ দান করবে।
৬. পার্টির পত্রিকা ও সাহিত্য প্রকাশনার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে থাকবে। কেন্দ্রীয় কমিটি পার্টি পত্রিকার সম্পাদকীয় বোর্ড ও সম্পাদক নির্বাচন করবে।
৭. কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত নতুন জেলা কমিটিসমূহ এবং কমিটিতে অথবা কমিটির কর্মকর্তার ক্ষেত্রে কোনো রদবদল হলে, তা অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
৮. কেন্দ্রীয় কমিটি কোনো এলাকাকে সাংগঠনিক জেলার মর্যাদা দিতে পারবে। প্রয়োজনবোধে কেন্দ্রীয় কমিটি তার সরাসরি পরিচালনায় একাধিক পার্টি শাখা গঠন করতে পারবে এবং এসব শাখার কাজের পদ্ধতি, নিয়মাবলী ও কাঠামো নির্ধারণ করে দেবে।
৯. বিশেষ বিবেচনায় কেন্দ্রীয় কমিটি কংগ্রেসে অংশ নেয়ার জন্য কিছুসংখ্যক পর্যবেক্ষক মনোনীত করতে পারবে। পর্যবেক্ষকগণ কংগ্রেসের আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন, কিন্তু ভোটাভুটির সময়ে ভোট দিতে পারবেন না।
১০. কেন্দ্রীয় কমিটি প্রয়োজনবোধে বিশেষ বিবেচনায় কাউকে কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় অথবা জাতীয় পরিষদের সভায় আমন্ত্রণ জানাতে পারবে।
১১. কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা কমিটিগুলোর কাজে সাহায্য, পরামর্শ ও নির্দেশ প্রদান করবে এবং জেলা সম্মেলনগুলোতে কমপক্ষে একজন বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি পাঠাবে।
১২. কেন্দ্রীয় কমিটি দুই কংগ্রেসের মাঝামাঝি সময়ে সাংগঠনিক সম্মেলনের ব্যবস্থা করার জন্য জেলা কমিটিসমূহকে নির্দেশ প্রদান করতে পারবে। এ ধরনের জেলা সাংগঠনিক সম্মেলনের আলোচ্যসূচি ও প্রতিনিধিত্বের নিয়ম-কানুন কেন্দ্রীয় কমিটি নির্ধারণ করে দেবে।
১৩. কেন্দ্রীয় কমিটি গণসংগঠনে কর্মরত পার্টি সদস্য ও কর্মীদের কাজের পদ্ধতি ও মূলধারা নির্ধারণ করবে।
১৪. কেন্দ্রীয় কমিটি পার্টি শিক্ষার ব্যবস্থা করবে।
১৫. কেন্দ্রীয় কমিটি পার্টির কেন্দ্রীয় তহবিলের হিসাব-নিকাশ রক্ষা করবে।
১৬. কেন্দ্রীয় কমিটি পার্টির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষা করবে।
১৭. কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনতন্ত্রের ব্যাখ্যা প্রদান করবে এবং গঠনতন্ত্রে কোনো বিষয়ে সুস্পষ্ট উল্লেখ না থাকলে, সে সম্বন্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।
১৮. কেন্দ্রীয় কমিটি তার সদস্যদের মধ্য থেকে একটি প্রেসিডিয়াম নির্বাচন করবে। তবে, কংগ্রেস দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের ক্ষেত্রে একই ব্যক্তিকে একাদিক্রমে দুই মেয়াদকালের অধিক সময়ের জন্য নির্বাচিত করতে পারবে না। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদাধিকার বলে প্রেসিডিয়ামের সদস্য বিবেচিত হবেন। প্রেসিডিয়ামের সদস্য সংখ্যা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যার এক-চতুর্থাংশের বেশি হবে না। প্রেসিডিয়াম কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কাজ পরিচালনা করবে এবং উদ্যোগ গ্রহণ করবে। কেন্দ্রীয় কমিটি প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করবে।
১৯. কেন্দ্রীয় কমিটি তার সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সভাপতি, একজন সাধারণ সম্পাদক, প্রয়োজন বোধে একজন সহকারী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবে। কেন্দ্রীয় কমিটি তার কাজের সুবিধার জন্য তার সদস্যদের মধ্য থেকে একাধিক সম্পাদক নির্বাচন করতে পারবে। প্রেসিডিয়ামের তত্ত্বাবধানে সম্পাদকবৃন্দ তাদের কাজ-কর্ম সম্পাদন করবে।
২০. পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যগণকে পার্টির ‘সার্বক্ষণিক’ হতে হবে।
২১. সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে, প্রেসিডিয়ামের যে কোনো সদস্যকে সাময়িকভাবে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া যাবে।
২২. সভাপতি হবেন সংগঠনের প্রধান। সভাপতি প্রেসিডিয়ামের যৌথ কাজে নেতৃত্ব প্রদান করবেন, প্রেসিডিয়ামের সভা আহ্বান করবেন এবং প্রেসিডিয়াম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করবেন। সভাপতির সঙ্গে পরামর্শ করে সাধারণ
সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির সভা আহ্বান করবেন এবং প্রেসিডিয়ামের পক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় রিপোর্ট পেশ করবেন। সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদকের কাজে সহযোগিতা করবেন এবং তার অনুপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন।
২৩. সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহকারী সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদকবৃন্দ ও অন্য সদস্যদের কাজের সুনির্দিষ্ট এখতিয়ার ও দায়িত্ব কেন্দ্রীয় কমিটি স্থির করে দেবে।
২৪. কেন্দ্রীয় কমিটি তার সদস্যদের মধ্য থেকে একজন কোষাধ্যক্ষ ও একটি অর্থ বিভাগ নির্বাচন করতে পারবে। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হলে তিনি বা এই দায়িত্ব যার উপর ন্যস্ত হবে, তিনি অর্থ বিভাগের সহায়তায় পার্টির জন্য অর্থ সংগ্রহে ও তহবিল গঠনে তৎপর হবেন এবং আয়-ব্যয়ের হিসাব রক্ষা করবেন। তিন মাস অন্তর প্রেসিডিয়াম তহবিল সংক্রান্ত রিপোর্ট পরীক্ষা করবে। প্রেসিডিয়াম বছরে কমপক্ষে একবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে তহবিল সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করবে।
২৫. প্রেসিডিয়াম তাদের সকল কাজের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দায়ী থাকবেন।
২৬. কেন্দ্রীয় কমিটি প্রয়োজনবোধে কেন্দ্রীয় কমিটির কাজে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উপযুক্ত কয়েকজন কমরেডকে কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা নির্বাচন করতে পারবে, তবে তাদের মোট সংখ্যা কেন্দ্রীয় কমিটির মোট সদস্য সংখ্যার এক-পঞ্চমাংশের বেশি হতে পারবে না। উপদেষ্টারা কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় উপস্থিত থাকতে এবং সেখানে তাদের বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন, তবে ভোটাভুটির সময় ভোট প্রদান করতে পারবেন না। সভাপতির সাথে আলোচনাক্রমে সাধারণ সম্পাদক উপদেষ্টাদের সভা আহ্বান করতে পারবেন এবং সেই সভার মতামত প্রেসিডিয়াম ও কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে রিপোর্ট করবেন।
২৭. কেন্দ্রীয় কমিটি সময় সময় পার্টি সদস্যপদ স্ক্রুটিনির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। স্ক্রুটিনির নিয়ম-কানুন কেন্দ্রীয় কমিটি স্থির করবে।
ধারা-১৭ : জাতীয় পরিষদ
১. কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সদস্য ও সংগঠক, সকল জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় সাব কমিটি ও বিভাগসমূহের সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটি মনোনীত অনূর্ধ্ব ২৫% সদস্যের সমন্বয়ে পার্টির জাতীয় পরিষদ গঠিত হবে।
২. কেন্দ্রীয় কমিটি জাতীয় পরিষদের সভা আহ্বান করবে। বছরে কমপক্ষে একবার জাতীয় পরিষদের সভা করতে হবে।
৩. জাতীয় পরিষদের সভা পার্টির কংগ্রেস ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে এবং কংগ্রেসে গৃহীত মূল রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক লাইনের ভিত্তিতে সময় উপযোগী সুনির্দিষ্ট করণীয় সম্পর্কে কেন্দ্রীয় কমিটিকে পরামর্শ দেবে।
ধারা-১৮ : জেলা সম্মেলন
১. জেলা সম্মেলন জেলা পার্টির সর্বোচ্চ সংস্থা। জেলা কমিটি পার্টি কংগ্রেসের পূর্বে কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠান করবে। এই সম্মেলনের প্রতিনিধি নির্বাচন সংখ্যানুপাত এবং নিয়মাবলী কেন্দ্রীয় কমিটি ঠিক করে দেবে। কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন নিয়ে বিশেষ জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠান করা যাবে। পূর্বতন জেলা সম্মেলনের প্রতিনিধিবৃন্দ এই বিশেষ সম্মেলনের প্রতিনিধি হবেন। জেলা কমিটির সদস্যগণ পদাধিকার বলে জেলা সম্মেলনের প্রতিনিধি হবেন। জেলা সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে অন্তত একজন বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। দুই কংগ্রেসের মধ্যবর্তী সময়ে জেলা কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি নিয়ে অথবা কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মধ্যবর্তী জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠান করতে পারবে। মধ্যবর্তী জেলা সম্মেলনে নিয়মিত জেলা সম্মেলনের নিয়মাবলী ও পদ্ধতি অনুযায়ী সম্মেলনের জন্য নিম্নস্তরের কমিটিসমূহ থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আসবেন। মধ্যবর্তী জেলা সম্মেলন কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচন ও কংগ্রেসের আলোচ্যসূচি ছাড়া অন্য সকল দায়িত্ব পালন করবে।
২. জেলা সম্মেলনের অধিকার ও কর্তব্যসমূহ নিম্নরূপ হবে :
(ক) জেলা সম্মেলন পরিচালনার জন্য শুরুতেই সভাপতিমন্ডলী নির্বাচন করা। (খ) জেলা কমিটির রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক রিপোর্ট আলোচনা করা এবং সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। (গ) কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জনতার মধ্যে জেলা পার্টির কাজের ধারা নির্ধারণ করা। (ঘ) কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক প্রচারিত দলিল আলোচনা করা এবং সে সম্পর্কে মতামত গ্রহণ করা। (ঙ) কংগ্রেসের অনুরূপ পদ্ধতিতে জেলা কমিটির আয়-ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা করা। (চ) পার্টি কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচন করা। (ছ) জেলা কমিটি নির্বাচন করা।
ধারা-১৯ : জেলা কমিটি
১. জেলা কমিটি দুই সম্মেলনের মধ্যবর্তী সময়ে জেলা পার্টির কাজকর্ম পরিচালনা করবে।
জেলা কমিটির তার কাজকর্মের জন্য জেলা সম্মেলনের কাছে দায়ী থাকবে।
২. জেলা কমিটি তার সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সভাপতি ও একজন সাধারণ সম্পাদক এবং প্রয়োজনে একজন সহকারী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবে। তবে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের ক্ষেত্রে একই ব্যক্তিকে একাদিক্রমে তিন মেয়াদকালে অধিক সময়ের জন্য নির্বাচিত করতে পারবে না। জেলা কমিটি তার সদস্যদের মধ্য থেকে একটি সম্পাদকমন্ডলী নির্বাচন করতে পারবে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহকারী সাধারণ সম্পাদক জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হবেন। জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সংখ্যা জেলা কমিটির সদস্য সংখ্যার অর্ধেকের কম হবে।
৩. জেলা সম্পাদকমন্ডলী জেলা কমিটির পক্ষে জেলা পার্টির দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনা করবে এবং নতুন কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
৪. সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহকারী সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ও অপরাপর সদস্যদের মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয় বিবেচনায় রেখে জেলা কমিটি সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন ও কাজের এখতিয়ার স্থির করে দেবে :
(ক) সভাপতি হবেন জেলা পার্টির প্রধান। তিনি জেলা কমিটির সকল সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং জেলা কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করবেন।
(খ) সভাপতির সঙ্গে পরামর্শ করে সাধারণ সম্পাদক জেলা কমিটির সভা আহ্বান করবেন এবং জেলা পার্টির কাজ-কর্ম পরিচালনায় উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবেন। তিনি জেলা কমিটির সভায় রিপোর্ট পেশ করবেন।
(গ) সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদকের কাজে সাহায্য করবেন এবং তার অনুপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন। সহকারী সাধারণ সম্পাদক না থাকলে, সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সম্পাদকমন্ডলীর কিংবা সম্পাদকমন্ডলী না থাকলে জেলা কমিটির সদস্যদের কোনো একজনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের সাময়িক দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
(ঘ) সভাপতির অনুপস্থিতিতে সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যদের মধ্যে কিংবা সম্পাদকমন্ডলী না থাকলে জেলা কমিটির সদস্যদের কোন একজন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সাময়িক দায়িত্ব পালন করবেন।
(ঙ) প্রয়োজনীয় অন্যান্য ক্ষেত্রে সাধারণভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির কাজের ধারা ও পদ্ধতি অনুসরণ করবে।
৫. নিজ নিজ জেলায় পার্টি কংগ্রেস ও কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন করা, নিম্নতর পার্টি ইউনিটসমূহের কাজ তদারক করা এবং তাদের কাজে সাহায্য করা, কেন্দ্রীয় কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জেলার গণসংগঠনের সদস্যদের কাজে সহযোগিতা করা এবং তাদের কাজ চেকআপ করা, পার্টি সাহিত্য ও পত্রিকা জনগণের মধ্যে বিতরণ করা ও তার হিসাব রক্ষা করা, জেলা পার্টির তহবিল গঠন করা ও তার হিসাব রক্ষা করা, জেলা পার্টির স্কুল ও শিক্ষার ব্যবস্থার করা, জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক-সাংগঠনিক, আন্দোলনগত ও অন্যান্য বহুমুখী কাজ পরিচালনা করা, জেলায় পার্টির শ্রেণী সংগ্রাম ও শ্রেণী আন্দোলন বিকশিত করা ইত্যাদি জেলা কমিটির দায়িত্ব ও কাজ।
৬. জেলা কমিটিকে নিয়মিতভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে তার কাজকর্ম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে রিপোর্ট করতে হবে।
৭. জেলা কমিটির কোনো পদ শূন্য হলে, কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে সেই পদ পূরণ করা যাবে।
৮. জেলা কমিটি তার কাজের সুবিধার জন্য বিভিন্ন সাব কমিটি গঠন এবং জেলা কমিটির সংগঠক নিয়োগ করতে পারবে। জেলা কমিটির সভায় মতামত ব্যক্ত করার জন্য সংগঠকদের আমন্ত্রণ জানানো যাবে। কিন্তু ভোটাভুটির সময় তারা ভোট দিতে পারবেন না।
৯. কোনো পার্টি সদস্যকে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সদস্যপদ স্থানান্তর করতে হলে, তাকে নির্ধারিত ফরমে জেলা কমিটির কাছে আবেদন করতে হবে। জেলা কমিটির অনুমোদনসহ কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে সদস্যপদ সংশ্লিষ্ট জেলায় স্থানান্তর করা হবে। জেলার অভ্যন্তরে এক শাখা থেকে অন্য শাখায় সদস্যপদ স্থানান্তরের বিষয় জেলা কমিটি অনুমোদন করবে।
১০. জেলা কমিটি বছরে কমপক্ষে চার বার কমিটি সভা করবে।
ধারা-২০ : উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, আঞ্চলিক কমিটি
১. জেলা কমিটির ঠিক নিচের কমিটি হলো উপজেলা/থানা কমিটি। সাধারণভাবে প্রশাসনিক বিভাগ অনুসরণ করে এগুলোর সীমানা নির্ধারণ করা যাবে। প্রয়োজনবোধে উপজেলা/থানা ও শাখার মধ্যবর্তী স্তরে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা যাবে। কাজের সুবিধার্থে জেলা কমিটি অঞ্চলভিত্তিক কমিটিও গঠন করতে পারবে। কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করে অঞ্চলভিত্তিক কমিটিগুলোর সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
২. উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, আঞ্চলিক কমিটিগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা হলো সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে তাদের সম্মেলন। প্রতি দু’বছর অন্তর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এসব সম্মেলনের প্রতিনিধি নির্বাচনের নিয়মাবলী ও পদ্ধতি জেলা কমিটি
নির্ধারণ করে দেবে। সকল জেলায় যাতে একই নিয়ম অনুসরণ করা যায়, সেজন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে জেলা কমিটিসমূহ এই নিয়ম ও পদ্ধতি স্থির করবে। জেলা কমিটির পক্ষ থেকে কমপক্ষে একজন বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি এসব সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। এসব সম্মেলন উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, আঞ্চলিক কমিটির নেতৃত্ব নির্বাচন করবে এবং সম্মেলনে উত্থাপিত রিপোর্ট আলোচনা ও অনুমোদন করবে।
৩. উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, আঞ্চলিক কমিটির সদস্য সংখ্যা তাদের সম্মেলনে নির্ধারিত হবে এবং সম্মেলনে কমিটির সদস্যগণ নির্বাচিত হবেন।
৪. উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, আঞ্চলিক কমিটির কাজ অনেকটা জেলা কমিটির মতো হবে। জেলা কমিটি তাদের কাজকর্মে সহায়তা করবে এবং নিয়মিত তদারক করবে। ঠিক একইভাবে উপজেলা/থানা কমিটি তার অধীনস্থ কমিটিসমূহের কাজকর্মে নিয়মিতভাবে সাহায্য ও চেকআপ করবে। এই কাজে উপজেলা/থানা কমিটিসমূহ জেলা কমিটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে কাজের সমন্বয় সাধন করবে।
৫. উপজেলা/থানা কমিটি প্রয়োজনবোধে জেলা কমিটির অনুরূপ কর্মকর্তা ও সম্পাদকমন্ডলী গঠন করতে পারবে।
৬. উপজেলা/থানা কমিটিসমূহ বছরে কমপক্ষে ছয় বার কমিটি সভা করবে।
ধারা-২১ : পার্টি শাখা
১. পার্টি শাখা হবে পার্টির বুনিয়াদি প্রাথমিক সংস্থা। কোনো কল-কারখানা, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, বাগান, খামার, গ্রাম, এলাকা, অঞ্চল, মহল্লার পার্টি সদস্য ও প্রার্থী সদস্যদের সমন্বয়ে পার্টি শাখা গঠিত হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি শাখার সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করে দেবে। কমপক্ষে তিনজন পার্টি সদস্য নিয়ে শাখা গঠিত হবে।
২. শাখার সাধারণ সভা হবে তার সর্বোচ্চ সংস্থা।
৩. বিশেষ অবস্থায় পার্টির বড় বড় শাখায় কাজের সুবিধার জন্য সদস্যদের একাধিক টিমে ভাগ করা চলবে। শাখার সাধারণ সভা এসব টিমের পরিচালক নির্বাচন করে দেবে। এ ধরনের টিমের কাজ হবে তার সদস্যদের মধ্যে কাজ বণ্টন করে দেয়া এবং কাজের চেকআপ করা।
৪. কমপক্ষে প্রতি মাসে একবার শাখার সাধারণ সভা করতে হবে। সভায় সম্পাদক সকলের বিবেচনার জন্য কাজের রিপোর্ট এবং প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। শাখার সাধারণ সভায় সদস্যদের মধ্যে কাজ বণ্টন ও কাজের চেকআপ করা হবে।
৫. প্রতি দু’বছর অন্তর শাখা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা কমিটির অবগতি ও অনুমতিক্রমে বিশেষভাবে অনুষ্ঠিত শাখার সাধারণ সভা শাখা সম্মেলন বলে বিবেচিত হবে। শাখা সম্মেলনে শাখার রাজনৈতিক-সাংগঠনিক রিপোর্ট,ভবিষ্যৎ কাজের পরিকল্পনা, কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন প্রস্তাব ও রিপোর্ট এবং কংগ্রেসে উত্থাপনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির দলিলসমূহের উপর আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করা হবে। শাখা সম্মেলনে শাখার জন্য একজন সম্পাদক ও প্রয়োজনবোধে একজন সহকারী সম্পাদক নির্বাচন করতে হবে। কোনো শাখার সদস্য সংখ্যা ২০ জনের অধিক হলে, সম্মেলন সেই শাখার জন্য একজন সভাপতি ও একটি সম্পাদকমন্ডলী গঠন করতে পারবে। জেলা কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসারে শাখা সম্মেলন থেকে ঊর্ধ্বতন কমিটিসমূহের সম্মেলনের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে হবে। ঊর্ধ্বতন কমিটি থেকে বিশেষভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন প্রতিনিধি শাখা সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। শাখা সম্মেলনে নির্বাচিত শাখা নেতৃত্বকে জেলা কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
৬. প্রয়োজনবোধে কোনো শাখার সদস্য জেলা কমিটির সম্মতিতে অথবা তার নির্দেশে নিজের জেলার অধীনস্থ অন্য কোনো শাখার কাজের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারবেন। কেন্দ্রীয় কমিটি প্রয়োজন মনে করলে, এক জেলার কোনো পার্টি সদস্যকে অন্য কোনো জেলার যে কোনো স্তরের সংগঠনে সম্পৃক্ত করে তাকে সেখানকার কাজে যুক্ত করতে পারবে, তবে সেখানে তার ভোটাধিকার থাকবে না।
৭. শাখার কাজ হবে নিম্নরূপ :
(ক) এলাকার জনগণের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ রক্ষা করা এবং নিজস্ব এলাকায় রাজনৈতিক কার্যকলাপ সংগঠিত করা, শ্রেণী সংগ্রাম ও গণআন্দোলন বিকশিত করার মধ্য দিয়ে পার্টির গণভিত্তি গড়ে তোলা এবং পার্টির নীতি কার্যকর করা।
(খ) ঊর্ধ্বতন কমিটির সাধারণ নীতিমালার ভিত্তিতে নিজস্ব এলাকার বাস্তবতায় সৃজনশীলভাবে সুনির্দিষ্ট কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ঊর্ধ্বতন কমিটির সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। কেন্দ্রীয় কমিটিতে গৃহীত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্তগুলোর পক্ষে এলাকায় জনমত গড়ে তোলা এবং জনগণকে পার্টির পতাকা তলে সমবেত করা।
(গ) নিজ এলাকার জনগণের ও সমাজ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা ধরনের সংগঠন, সংস্থা ও গণসংগঠনের কাজে অংশগ্রহণ করা।
(ঘ) পার্টির পত্রিকা, সাহিত্য প্রভৃতি প্রচার করা ও বিক্রি করা এবং তার হিসাব যথাযথভাবে রক্ষা করা।
(ঙ) শাখার সদস্যদের চাঁদা ও
লেভি সংগ্রহ করা এবং পার্টির জন্য অর্থ সংগ্রহ করা।
(চ) শুভানুধ্যায়ী, সমর্থক, সহযোগী ও নতুন কর্মীদের পার্টিতে টেনে আনা এবং তাদেরকে সহযোগী সদস্য হিসেবে যুক্ত করা। তাদের মধ্যে অগ্রসর ও সক্রিয়দেরকে নিয়ে পার্টি গ্রুপ গঠন করা।
(ছ) পার্টির নীতি ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের তৎপর থাকার পাশাপাশি এসব নীতি ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে শাখার অভিমত উপরের স্তরের সংগঠনের কাছে প্রেরণ করা।
ধারা-২২ : পার্টি গ্রুপ ও সহযোগী সদস্য
১. অগ্রসর নতুন কর্মীদের নিয়ে পার্টি গ্রুপ গঠন এবং সেসব পার্টি গ্রুপের সদস্যদের আদর্শগত ও রাজনৈতিকভাবে শিক্ষিত করে পার্টি সদস্যের যোগ্য করে তোলার জন্য, নিয়মিত গ্রুপ তৎপরতা পরিচালনা করা যাবে। যে কোনো শাখা বা কমিটি এ ধরনের পার্টি গ্রুপ গঠন করতে পারবে।
২. পার্টিকে নানাভাবে সমর্থন করেন, পার্টির পক্ষে প্রচার করেন, পার্টির প্রার্থীকে বিভিন্ন নির্বাচনে ভোট দেন, পার্টির সভা-সমাবেশ ও ঘোষিত কর্মসূচি ও অনুষ্ঠানে যোগ দেন, কোনো না কোনোভাবে যিনি নিজেকে পার্টিরই একজন হিসেবে মনে করেন- এ ধরনের পার্টির শুভানুধ্যায়ী, সমর্থকদের পার্টির সহযোগী সদস্য করা যাবে। সংগঠনের প্রসারের জন্য এবং পার্টির কাজকর্ম ও সংযোগ বিস্তৃত করার জন্য তাদের সঙ্গে যোগসূত্রের একটি সংগঠিত ধারা চালু রাখতে হবে। যেসব পার্টি শাখা বা কমিটি সহযোগী সদস্যপদ প্রদান করবে সেই শাখা বা কমিটিই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে। সহযোগী সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের নিয়ম-কানুন ও পদ্ধতি কেন্দ্রীয় কমিটি প্রণয়ন করবে।
ধারা-২৩ : গণসংগঠনে অন্তর্ভুক্ত সদস্যগণ
১. গণসংগঠন ও তার কার্যকরী কমিটিতে যেসব পার্টি সদস্য কাজ করেন, তারা সেই গণসংগঠন পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক গঠিত সাব কমিটির সাধারণ নির্দেশাবলী অনুযায়ী সংগঠিতভাবে কাজ করবেন। সাব কমিটির নির্দেশাবলী কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। সাব কমিটির নির্দেশ কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে জেলা কমিটিসমূহে পাঠানো হবে। পার্টির সদস্যবৃন্দ নিজ নিজ গণসংগঠনের ঐক্য সংহত করা, তার গণভিত্তি প্রসারিত করা, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং গণসংগঠনের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক কর্মধারা বিশ্বস্ততার সঙ্গে সমুন্নত রাখার জন্য সচেষ্ট থাকবেন।
২. বিশেষ বিশেষ অবস্থায় কোনো গণসংগঠনের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সংস্থা বা কমিটিতে কর্মরত পার্টির সকল সদস্যকে নিয়ে পার্টি ফ্যাকশন গঠন অথবা তাদের নিয়ে বৈঠক করা যাবে। এসব ফ্যাকশন পার্টি কর্তৃক গঠিত কেন্দ্রীয় সাব-কমিটির কাজে সাহায্য করবে।
৩. প্রয়োজনবোধে জেলাতেও এ ধরনের সাব কমিটি ও ফ্যাকশন গঠন করা যাবে। এই ফ্যাকশন সংশ্লিষ্ট গণসংগঠনের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা কমিটির সদস্য বা জেলা কমিটি কর্তৃক গঠিত সাব কমিটি দ্বারা পরিচালিত হবে।
ধারা-২৪ : নির্বাচিত সংস্থার কাজ
পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির জাতীয় সংসদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য পার্টির প্রার্থী মনোনয়নের জন্য মনোনয়ন বোর্ড গঠন করবে এবং মনোনয়নের জন্য নিয়ম-কানুন স্থির করে দেবে। জাতীয় সংসদে নির্বাচিত পার্টি সদস্যবৃন্দ সংসদে পার্টির সংসদীয়
দল গঠন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে সংসদীয় দলের নেতা ও উপনেতা নির্বাচন করবে। কেন্দ্রীয় কমিটি সরাসরি সংসদীয় দলের কাজ-কর্ম পরিচালনা ও তদারক করবে। দেশের বিভিন্ন স্থানীয় সংস্থার মনোনয়ন প্রদানের পদ্ধতি ও নিয়ম-কানুন এবং সেখানে নির্বাচিত পার্টি সদস্যদের কাজ, আচরণ ইত্যাদি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ম-নীতি স্থির করবে।
ধারা-২৫ : কন্ট্রোল কমিশন
কন্ট্রোল কমিশন পার্টির গঠনতন্ত্রের মর্যাদা সংরক্ষণে যত্নবান থাকবে। কমিশন পার্টি শৃঙ্খলা বিষয়ে কোনো সদস্য বা যে কোনো স্তরের সংগঠনের অভিযোগ শুনবে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠাবে। কন্ট্রোল
কমিশনের সদস্যগণ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং জেলা কমিটিসহ নিম্নস্তরের যে কোনো পর্যায়ের কমিটি সভায় প্রয়োজনবোধে উপস্থিত থাকতে পারবেন। কন্ট্রোল কমিশনের কাজের বিধি-বিধান ও নিয়মাবলী কমিশন নিজেই স্থির করবে। কেন্দ্রীয় কমিটি
কন্ট্রোল কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।
Login to comment..