“উপমহাদেশের প্রথম রাজনৈতিক জেল হত্যাকাণ্ড দিবসের স্বীকৃতি, দিনটিকে জাতীয় শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা, শহীদদের নাম ও সংগ্রামের ইতিহাস গুরুত্ব দিয়ে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি”
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে, ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল খাপড়া ওয়ার্ডে তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশের গুলিতে শহীদ কমরেডদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রতিনিধি দল শ্রদ্ধা নিবেদন ও খাপড়া ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন।
এরপর এই দিনটিকে উপমহাদেশের প্রথম রাজনৈতিক জেল হত্যাকাণ্ড দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান,
এই দিনকে জাতীয় শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং ২৪ এপ্রিলের শহীদদের নাম ও সংগ্রামের ইতিহাস গুরুত্ব দিয়ে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে আজ ২৪ এপ্রিল ২০২৪ রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কাছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এ সময় সিপিবি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাগীব আহসান মুন্না সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর
বিকেল তিনটায় সাহেব বাজারের মোড়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির বিভাগীয় সমন্বয়ক ইসমাইল হোসেন। সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, শহীদদের স্বপ্ন ছিল শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। আজ দেশ গণতন্ত্রহীন, বৈষম্য চরম পর্যায়ে। লুটপাট-দুর্নীতি সীমাহীন। নব্য ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চলছে। এ অবস্থা পরিবর্তনে সাহস ও দৃঢতা নিয়ে দুঃশাসনে অবসান এবং ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ডে পুলিশের গুলিতে নিহত বিপ্লবীরা হলেন- বিজন সেন, কম্পরাম সিংহ, হানিফ শেখ, সুধীন ধর, দেলোয়ার হোসেন, সুখেন ভট্টাচার্য
এবং আনোয়ার হোসেন।
নিহত বিপ্লবীদের মধ্যে সুধীন ধর এবং বিজন সেন ছিলেন রেল শ্রমিক। হানিফ শেখ ছিলেন কুষ্টিয়া মোহিনী মিলের শ্রমিক নেতা। সুখেন্দ ভট্টাচার্য ছিলেন ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের স্নাতক পরীক্ষার্থী। দেলোয়ার হোসেন ছিলেন রেলওয়ের লাল ঝান্ডা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা এবং আনোয়ার হোসেন ছিলেন খুলনার দৌলতপুর কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র এবং ছাত্র ফেডারেশনের নেতা।
গুলিবিদ্ধ আহতরা হলেন- ১. সৈয়দ মনসুর হাবিবুল্লাহ (মুর্শিদাবাদ এর অধিবাসী। ১৯৭৭-৮২ সময়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার স্পিকার ও সাবেক আইনমন্ত্রী) ২. আব্দুস শহীদ
(বরিশাল) ৩. আব্দুল হক (যশোর) ৪. কমরেড প্রসাদ রায় (পাবনা) ৫. আমিনুল ইসলাম বাদশা (পাবনা) ৬. আশু ভরদ্বাজ ৭. সত্যেন সরকার ৮. নূরুন্নবী চৌধুরী ৯. প্রিয়ব্রত দাস ১০. অনন্ত দেব ১১. গনেন্দ্র নাথ সরকার ১২. নাসির উদ্দিন আহমেদ ১৩. শচীন্দ্র ভট্টাচার্য ১৪. সাইমন মন্ডল ১৫. কালিপদ সরকার ১৬. অনিমেষ ভট্টাচার্য ১৭. বাবর আলী (দিনাজপুর) ১৮. গারিস উল্লাহ সরকার ১৯. ভুজেন পালিত (দিনাজপুর) ২০. ফটিক রায় ২১. সীতাংশু মৈত্র ২২. সদানন্দ ঘোষ দস্তিদার ২৩. ভোলারাম সিংহ ২৪. সত্য রঞ্জন ভট্টাচার্য ২৫. লালু পান্ডে ২৬. মাধব দত্ত ২৭. কবীর শেখ ২৮. আভরন সিংহ ২৯. সুধীর স্যানাল ৩০. শ্যামাপদ সেন (বগুড়া) ৩১. হীরেন সেখ ৩২. পরিতোষ দাস গুপ্ত।