বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ঐ নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা এখনই আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্দলীয় সরকারের অধীনেই সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সংঘাত ’৭১-এর ঘাতক চক্র ও দেশি-বিদেশি অপশক্তির তৎপরতা সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে জনগণ অতিষ্ঠ। এরা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে আবারো একটি প্রহসনের নির্বাচন সংগঠিত করতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে- গোটা নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার, দুঃশাসন হটানো ও ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম করে আসছি। সরকার জনগণের কথাকে উপেক্ষা করে সভা-সমাবেশের অধিকার নিয়ন্ত্রণ, হরণ, হামলা-মামলা দিয়ে দেশকে আরেক অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজন মতো নানা অপশক্তিকে ব্যবহার করছে।
গতকাল ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ’৭১-এর ঘাতক রাজনীতিক দল জামায়াত বাধাহীনভাবে সমাবেশ করলেও বিএনপির সমাবেশ ভণ্ডুল হয়েছে। পল্টনে ছাত্রদের মিছিলে হামলা করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ গতকালের সমাবেশকে ঘিরে পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর সাথে প্রকৃতভাবে জড়িতদের চিহ্নিত ও শাস্তির দাবি করেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাধাহীনভাবে সভা সমাবেশ, হরতাল, অবরোধ করার অধিকার দেশবাসীর সাংবিধানিক অধিকার- এই অধিকার হরণ করে অতীতে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, আগামীতেও পারবে না।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সরকারি প্রশাসনের দায়িত্ব, কোনো দলের নয়। পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের লাঠিসোটা হাতে অবস্থান ও বিরোধীদের ওপর হামলা করে পুরো পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলা হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বিএনপির মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেফতারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিরোধী মত দমনে সরকারের স্বৈরাচারী আচরণ নানা অপশক্তিকে সুযোগ করে দেবে। দেশে অসাংবিধানিক শক্তিকে ক্ষমতা দখলের পথ পরিস্কার করবে, যা দুঃশাসনকে আরও দীর্ঘায়িত করবে। সচেতন দেশবাসীকে তাই নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তির আন্দোলনে শরিক হয়ে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তুলে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একমাত্র জনগণের শক্তিতে বলীয়ান হয়েই দুঃশাসনের অবসান, ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামে অগ্রসর করা এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।