বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালানা পরিষদের এক সভা আজ ১২ জানুয়ারি ২০২৩, বৃহস্পতিবার সকাল ১১:৩০টায় বাসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বামজোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সভাপতি কমরেড মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুর সাত্তার, বাসদের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, জনার্দন দত্ত নান্টু, বাসদ (মার্ক্সবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সদস্য রাশেদ শাহরিয়ার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, সদস্য রুবেল সিকদার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভার এক প্রস্তাবে গতকাল সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ‘যারা কুইক রেন্টাল নিয়ে বেশি কথা বলেন, তাদের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেবো’ (যুগান্তর) এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, সাময়িক বিদ্যুৎ সংকট নিরসনের কথা বলে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে বছরের পর বছর বসিয়ে রেখে এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত ১০ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা কেন দেয়া হলো তার জবাব কি প্রধানমন্ত্রী দিবেন?
প্রস্তাবে বলা হয়, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, দেশ পরমাণু বিদ্যুৎ যুগে প্রবেশ করেছে, মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করেছে, টানেল হচ্ছে ইত্যাদি সরকার উন্নয়নের নহর বইয়ে দিচ্ছে বলে প্রচারের ঢাক পিটাচ্ছে। অথচ এসব প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় দফায় দফায় বাড়ালো কেন? তার জবাব নাই।
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, রিজার্ভ সংকটে আমদানি বাণিজ্যের এলসি খোলা যাচ্ছে না। ক্রমাগত মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জনজীবন পর্যুদস্ত, ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ ৩০ হাজার কোটি টাকা ভুয়া নামে তুলে নিয়েছে। এগুলো কি সরকারের প্রশ্রয় ছাড়া হতে পারে? হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছেন কানাডায় বেগম পাড়ায় যারা বাড়ি করেছে তাদের ২০/২৫ জনকে তিনি দেখেছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত মুহিত সাহেব বলেছিলেন মেগা প্রজেক্ট মানেই মেগা দুর্নীতি, পুকুর চুরি নয় এখন সাগর চুরি হচ্ছে। এতসব দুর্নীতি, ব্যাংক ডাকাতির পরেও চ্যালেঞ্জ দেয়া হয় কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে। হিসাব দিন, জবাব দেবো। এটা কি সেই বিখ্যাত প্রবাদ “চোরের মা’র বড় গলা”র মতো শোনায় না?
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, সরকার বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি, ভুলনীতি, অপচয়, অদক্ষতা দূর না করে পুনরায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করছে। এই মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিবে। প্রস্তাবে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
সভায় দুর্নীীতর শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।
কর্মসূচি
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সভা থেকে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। ঐদিন ঢাকায় বিকাল ৪টায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।