Revolutionary democratic transformation towards socialism

টাকা পাচারকারী, ঋণ খেলাপীদের তালিকা প্রকাশ, টাকা উদ্ধার ও শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয় ছাড়া টাকা পাচার, ব্যাংক লোন, ঋণ খেলাপীর নামে ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটতে পারে না। মুক্তবাজারের নামে চলমান লুটপাটের অর্থনীতি এসবের ভিত্তি। তাই দুর্নীতি, লুটপাট প্রতিরোধে চলমান দুঃশাসনের অবসানের সাথে ব্যবস্থাও বদল করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, একদিকে নানা মাধ্যমে টাকা পাচার ও খেলাপী ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। অন্যদিকে সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। ‘অসৎ আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী আর অসৎ রাজনীতিক’ -এই দুর্বৃত্তায়িত চক্রই দেশ চালাচ্ছে। তার অনিবার্য পরিণতিতে পর্যাপ্ত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দেশের উন্নয়ন আর উন্নয়নের সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না।

টাকা পাচারকারী, ঋণ খেলাপীদের তালিকা প্রকাশ, টাকা উদ্ধার, যাদের পরামর্শে ও অনুমোদনে ঋণ-তার শ্বেতপত্র প্রকাশ, নিত্যপণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, দমন-পীড়নের-প্রতিবাদে আজ ১২ ডিসেম্বর ২০২২ বিকেলে ঢাকার পল্টন মোড়ে সিপিবি আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। বক্তব্য রাখেন- সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মানবেন্দ্র দেব।

এ সময় প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, ডা. সাজেদুল হক রুবেল, ইঞ্জিনিয়ার নিমাই গাঙ্গুলি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সামসুজ্জামান হীরা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নেতৃবৃন্দ টাকা পাচারকারী ও ঋণ খেলাপীদের তালিকা প্রকাশ এবং কাদের সহায়তায়-প্রশ্রয়ে অনুমোদনে এসব ঘটনা ঘটছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, আর সরকার ব্যর্থ হলে বামপন্থিরা টাকা পাচারকারী, ঋণ খেলাপীদের

তালিকা প্রকাশ করবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্যদিয়ে আমরা স্বাধীন দেশ পেলেও আজো দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। বৈষম্যের অবসান ঘটেনি। আগে সম্পদ পাচার হতো প্রধানত পশ্চিম পাকিস্তানে। এখন পাচার হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সেকেন্ড হোম ও অন্য দেশে নাগরিকত্ব নেয়ার পরিমাণ বেড়েই চলছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা শাসকরা সংকটের অবসান ঘটাতে তো পারেননি বরং তাদের নীতির ফলেই এ সংকট আরো তীব্র হয়েছে। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে নীতিনীষ্ঠ বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তির পতাকাতলে সমবেত হতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন মানুষ মনে করে দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক কাগুজে বাঘ । এরা ক্ষমতাসীনদলগুলোর ইচ্ছে বাস্তবায়নের কাজ করে চলেছে। এই অবস্থা থেকে ফিরে এসে দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংককে কার্যকরী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা ও সব তথ্য উপাত্ত সঠিকভাবে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, একটা গ্রুপ একটা ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়। তাদের হাজার হাজার কোটি টাকার কর মওকুফ করা হয়। এরা বিদেশে সম্পদ পাচার করে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হচ্ছে। দেশে জমিদারতন্ত্র গড়ে তুলছে। এদের সংখ্যা বাড়ছেই। আর কয়েক হাজার টাকার জন্য কৃষককে জেলে পোরা হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের মানুষ আজ 'রাষ্ট্রের মাফিয়া আর রাস্তার মাফিয়াদের' কাছে জিম্মি। এরা গণতন্ত্রহীনতা, স্বৈরতান্ত্রিকতা, ভয়ের পরিবেশ তৈরির সহায়তা করে তাদের স্বার্থের প্রতিনিধিদের ক্ষমতায় রাখছে। এদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। একই দাবিতে আজ সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সিপিবি’র আহ্বানে সামবেশ-বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..