বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সরকার তার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যাতে মানুষ সংগঠিত হতে না পারে তার জন্য হামলা-মামলা-ভয়ভীতি দেখিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসন দীর্ঘায়িত করতে চাইছে। কিন্তু অতীতের শিক্ষা ভয়ভীতির শাসন কখনো দীর্ঘায়িত হয় না। তারা মানুষকে রাস্তায় নেমে এসে সরকারের ষড়যন্ত্র রুখে দেবার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন- কমিউনিস্ট পার্টি কখনো শাসকের রক্ত চক্ষু ভয় পায়নি, গণতান্ত্রিক শাসন- সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম থেকে দূরে সরেনি।
গতকাল নেত্রকোনার কলমাকান্দায় পার্টির
পূর্ব নির্ধারিত জনসভায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ, পুলিশের হামলায় পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা ডাক্তার দিবালোক সিংহ, জেলা কমিটির সভাপতি নলিনী সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমদ, ছাত্রনেতা দীন ইসলাম, আবু সায়েম, পার্টি নেতা আব্দুল আজীজসহ নেতা কর্মীদের আহত করার প্রতিবাদে আজ ১০ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকায় বিকেলে পুরানা পল্টন মোড়ে দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।
পার্টির সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম এর
সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক এমএম আকাশ, সাজ্জাদ জহির চন্দন, লুনা নুর, মানবেন্দ্র দেব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সমীর প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকার দেশ শাসনে পুরোপুরি ব্যর্থ। তারা জনগণের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না। সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনায় সাম্প্রতিক বন্যায় সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায় নি। কমিউনিস্ট পার্টি নেত্রকোনায় বন্যা দুর্গতদের সহায়তার
জন্য দাবি তুলে ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জনসভার আয়োজন করেছিল। আর পুলিশ ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা বিনা উষ্কানিতে সেখানে হামলা করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সিপিবির পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশে হামলার জন্য কলমাকান্দার থানার ওসিকে অপসারণ ও অপর হামলাকারী ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের বিচার করতে হবে।
বক্তারা বলেন, সরকারের ব্যর্থতার কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে কিন্তু তার দায় চাপানো হচ্ছে রাশিয়ার যুদ্ধের উপর। বক্তারা প্রশ্ন রাখেন, যুদ্ধের আগে কি এখানে
দ্রব্যমূল্য বাড়েনি? তেলের দাম গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন হলেও সরকার এখানে দু পয়সা পাচ পয়সা দাম কমিয়ে- বাস ভাড়া কমিয়ে জনগণের সাথে তামাশা করছে।
সার ডিজেলের দাম বাড়িয়ে প্রমাণ করছে কৃষি- কৃষক এর কাছে সরকারের কোন দায়বদ্ধতা নেই। পৃথিবীর কোথাও ধনীর গাড়ির জ্বালানি আর গরিব মানুষের ঘরে আলো দেয়ার কুপির জ্বালানি কেরোসিন একই দাম হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে তাও হচ্ছে। দেশের কোথাও বিরোধী দলীয় সভা করতে দেয়া হচ্ছে না। পুলিশ আর সরকারি গুন্ডারা বলে আসছে কি কি বিষয়ে সভা সমাবেশে বলা যাবে। তারা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেবার পর এবার
কথা বলার অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে।
বক্তারা বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি নীতি ও গদি বদলের জন্য সংগ্রাম করছে। আর এজন্য শাসকদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। কমিউনিস্ট পার্টি ভোট ও ভাতের অধিকার, নীতি ও গদি বদলের সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
বক্তারা নেত্রকোনায় হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও সেখানের ওসির নেতৃত্বে হামলার ঘটনার বিচার দাবি করেন।
একই দাবিতে আজ দেশের বিভিন্ন জেলায়-উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।