Revolutionary democratic transformation towards socialism

জ্বালানি তেল, সারসহ দ্রব্যমূল্য, যাতায়াত ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন জোরদার করুন, সারা দেশে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখুন


ডিজেল, কেরোসিনসহ জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখা এবং ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই জোরদার করে চলমান দুঃশাসনের অবসান ঘটানোর জন্য গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সারা দেশের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছে।

গত ৬ ও ৭ আগস্ট দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত সভা থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও করণীয় বিষয়ক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স। সাংগঠনিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ। সভায় কতক সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
 
সভায় বলা হয়, দেশে আজ এক ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে, দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে, এর মধ্যে আবার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে যাবে। আয় কমে যাওয়া মানুষের জীবন বাঁচানো হবে দুর্বিষহ। সরকারের পরিচালিত নীতি, লুটপাট, দুর্নীতি, সিন্ডিকেটের কারণে আজ সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ট।

সভায় বলা হয়, এসব অব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
 
সভা থেকে এসব দাবিতে আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত দেশব্যাপী ভোট ও ভাতের দাবিতে নানামুখী কর্মসূচি পালন করে আগামী নভেম্বরে ঢাকায় জাতীয় সমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়া আহ্বান জানানো হয়।

সভায় জ্বালানি তেল, সার, ঔষধসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ অপরাপর বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল দল, ব্যক্তি, সংগঠনের সাথে আলোচনা করে হরতাল, অবরোধ এর কর্মসূচি নেওয়া বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভায় বলা হয়, যত কথাই বলা হোক না কেন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সভায় নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার সহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন ও নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবিতে নানামুখি আন্দোলন জোরদার করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সভায় বলা হয়, মুক্তবাজারের নামে লুটপাটের ধারায় অর্থনীতি পরিচালিত হওয়ায় সংকটের সমাধান হচ্ছে না।

সভায় বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসানের সাথে সাথে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম জোরদার করা এবং দ্বিদলীয় রাজনীতির ধারার বাইরে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

সভায় দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের উচ্ছেদ, লুটের টাকা ও বিদেশে পাচারের টাকা ফেরত আনা, ২০ হাজার টাকা জাতীয় ন্যূনতম মজুরি, কর্মহীন-দরিদ্রদের নগদ সহায়তা, সার, গণপরিবহন, ঔষধসহ নিত্যপণ্যে ভর্তুকি বাড়িয়ে দাম কমানো, সারাদেশে রেশনিং, ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও অপব্যবহার বন্ধ, অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর প্রকল্প বাতিল, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল, বিদেশ সফরসহ অপ্রয়োজনীয় খরচ নিয়ন্ত্রণ, গণপরিবহন বাড়ানো ও নৈরাজ্য দূর করার দাবি জানানো হয়।

সভায় সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বন্ধে সচেতন দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সভায় দেশবিরোধী সব চুক্তি বাতিলেরও দাবি জানানো হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..