
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারী সেল-এর উদ্যোগে আজ ২০ আগস্ট, শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মেধাবী শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী আফসানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড লক্ষ্মী চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাকসুদা আক্তার লাইলী, শ্রমিকনেতা কমরেড জলি তালুকদার, সিপিবি নারী শাখার সম্পাদক কমরেড তাহমিনা ইয়াসমিন নীলা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সহ-সাধারণ সম্পাদক সংগীতা ইমাম, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি লাকী আক্তার ও ছাত্র নেতা নিলয় অনন্যা পাটোয়ারি। সমাবেশটি পরিচালনা করেন নারীনেত্রী কমরেড লুনা নূর।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কমরেড লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, দেশজুড়ে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ ও চূড়ান্ত নৈরাজ্য বিরাজ করছে। মৌলবাদ, নারী-শিশু নির্যাতন ও হত্যা বেড়েই চলেছে। বিচারহীনতার এ সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে ও আফসানা হত্যাসহ সকল নারী নির্যাতন ও হত্যার বিচার আদায় করতে হবে।
সমাবেশে সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা মাকসুদা আক্তার লাইলী বলেন, দেশে চলমান বিচারহীনতার সংস্কৃতি একের পর এক হত্যা, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। রাষ্ট্রে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা যাদের দেয়ার কথা, যারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার শপথ নিয়েছেন তারা অব্যাহতভাবে এসকল অন্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে।
আজ দেশজুড়ে যে হত্যা-ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন চলছে তার বিচার করা এবং নারীদের সুরক্ষা দেয়ার কাজে সরকারে ব্যর্থতা সকল সীমা অতিক্রম করেছে। সরকরের এই সীমাহীন ব্যর্থতার জবাব দিতে হবে।
সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী আফসানা হত্যকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চক্রান্ত এবং সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারে টালবাহানা সহ্য করা হবে না। তিনি আরো বলেন, একটি মৃতদেহ দেখে কাফরুল থানার ওসি যখন আত্মহত্যা বলে মন্তব্য করেন তখন আমাদের তনু হত্যাকাণ্ডের পরবর্তি ঘটনাবলী মনে পরে যায়। তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, তনুর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়ে যে প্রহসন আমরা দেখেছি, তার পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, স্কুল, কলেজ, কারখানা, অফিস আদালত সর্বত্র নারীদের আত্মরক্ষার প্রয়োজনে সংগঠিত প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একই সাথে রাষ্ট্রসমাজ নারীর বিরুদ্ধে যে অন্যায়-জুলুম ও বৈষম্য চাপিয়ে দিয়েছে তার বিরুদ্ধে শ্রমজীবী ও তরুণ নারীদের সংগঠিত হয়ে নারী মুক্তির আন্দোলন ও সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।
সমাবেশ থেকে আফসানা, তনু, মিতু ও কল্পনা চাকমাসহ সকল হত্যা-ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিচার দাবি করা হয়। একই সাথে আফসানা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহভাজন ছাত্রলীগ নেতা রবীনসহ অন্যদের গ্রেফতার করে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিচার আদায়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।