Revolutionary democratic transformation towards socialism

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নয়া সামরিক  চুক্তির পাঁয়তারায় সিপিবির নিন্দা

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বেশ কিছু নয়া সামরিক চুক্তি সম্পাদনের অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আজ ৯ এপ্রিল ২০২২ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে বলেছেন, সম্প্রতি সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান বিরোধী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে দুটি সামরিক চুক্তি সম্পাদনের পাঁয়তারা শুরু করেছে। বর্তমানে সে চুক্তি সম্পাদনের প্রক্রিয়া আরো অগ্রসর হয়েছে। ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্যাটাজির’ মার্কিনি কাঠামোর অধীনে সরকার ‘জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট’ ও ‘একুইজিশন ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট’ নামের এই দুটি চুক্তি করার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই দুটি চুক্তি সম্পাদিত হলে, বাংলাদেশের ওপর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সামরিক নজরদারি এবং আধিপত্য আরও বহুগুণে বেড়ে যাবে। বাংলাদেশের সামরিক তথ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনেক স্পর্শকাতর তথ্য মার্কিনের হস্তগত হবে। এটা দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আত্মমর্যাদার প্রতি বিরাট এক হুমকি। শুধু তাই নয়, এ চুক্তি সম্পাদিত হলে বাংলাদেশকে মার্কিনের বিভিন্ন যুদ্ধজোটের অংশীদার হতে বাধ্য হতে হবে এবং মার্কিনের কাছ থেকে সমরাস্ত্র কিনতে বাধ্য থাকতে হবে। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণ কখনোই ক্ষমতাসীন সরকারের এই জাতীয় স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ মেনে নেবে না। 
বিবৃতিতে সিপিবি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, তথাকথিত নিরাপত্তা সহযোগিতা সংলাপের নামে গত ৬ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের আসল উদ্দেশ্য হলো, এই চুক্তিসমূহ সম্পাদন করা এবং বাংলাদেশকে এশিয়ায় মার্কিনের সামরিক প্রকল্প ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে যুক্ত করা। বহুদিন ধরে এ দেশের মানুষ জোট-নিরপেক্ষ নীতির আন্দোলন পরিচালনা করেছে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ দেশে একটি মৌলিক নীতি হিসেবে স্বীকৃত হয়েছিল, সরকারের এমন তৎপরতা তার সরাসরি বরখেলাপ। এর ফলে দেশকে সাম্রাজ্যবাদের অভিপ্রায় পূরণের জন্য আন্তর্জাতিক উত্তেজনা ও সংঘাতের মধ্যে টেনে নেয়ার বিপদ সৃষ্টি হবে। 

বিবৃতিতে সিপিবি নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষের জীবনে যখন নাভিশ্বাস উঠেছে, যখন দেশে জাতীয় অর্থনীতিতে লুটপাট, দুর্নীতি সীমাহীন, যখন দেশে নির্বাচন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রহসনে পরিণত হয়েছে, তখন এধরনের চুক্তি দেশকে আরও দেউলিয়া করে দেবে। 

সিপিবি নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে জাতীয় স্বার্থবিরোধী এই চুক্তি সম্পাদনের প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ধারায় দেশের নীতি পরিচালনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 



Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..