Revolutionary democratic transformation towards socialism

গণআন্দোলনের মাধ্যমে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়


বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ করে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ার লক্ষ্যের প্রতি আবারও অবিচল আস্থার কথা জানিয়েছেন সিপিবির কাউন্সিলে থাকা প্রতিনিধি-পর্যবেক্ষকসহ ডেলিগেটরা। রোববার বিকালে কংগ্রেসের তৃতীয় দিনে খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবের ওপর আলাপ-আলোচনার পর সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম রাজনৈতিক প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আহ্বান জানালে উপস্থিত প্রতিনিধিরা তাদের প্রতিনিধি কার্ড উর্ধ্বে তুলে ধরে প্রস্তাব অনুমোদন করেন।  

অষ্টম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন কংগ্রেসের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কমরেড অ্যাড. এমদাদুল হক মিল্লাত। ৩৪ জন প্রতিনিধি তাদের জন্য নির্ধারিত সময়ে রাজনৈতিক প্রস্তাবের উপর আলোচনা করেন। 

আলোচনায় তারা বলেন, “রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে যে পচন ও অবক্ষয় দেখা দিয়েছে, সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে সেই সংকট নিরসন করা যাবে না। বুর্জোয়া রাজনীতির বেড়াজাল ভেঙে বামপন্থীদের নেতৃত্বে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি এবং গণশক্তির সচেতন সংগঠিত উত্থান ছাড়া বর্তমানের দুঃশাসন হটানো ও ব্যবস্থা বদলানো সম্ভব না। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে সুস্পষ্টভাবে একথাও প্রমাণ করছে যে, সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদী বিশ্বায়নই আজ সকল জাতির ও মানব সমাজের দুর্দশার মূল কারণ এবং সমাজতন্ত্রের পথ ধরেই এই সংকট থেকে মুক্তি সম্ভব। কমিউনিস্ট ও বামপন্থীদেরকে সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন সাধনের কঠিন দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সেই লক্ষ্যের পথে এগিয়ে যেতে হবে”। 

এ প্রস্তাব অনুমোদনের মাধ্যমে প্রতিনিধিরা সিপিবির আগামী নেতৃত্বকে বাম-বিকল্প গড়ে তুলে শ্রমিক-কৃষকের রাষ্ট্র গঠনে কর্মসূচির গাইড ঠিক করে দেন।

সপ্তম অধিবেশনে কেন্দ্রীয় কমিটির রিপোর্টের উপর আলোচনা শেষে পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম রিপোর্টের উপর সমাপনী বক্তব্য রাখেন। এরপর হাউজ সর্বসম্মতিক্রমে তা অনুমোদন করেন। 

আলোচনায় প্রতিনিধিগণ বলেন, “দেশ আজ এক বিশেষ সন্ধিক্ষণে। শাসকশ্রেণির অনুসৃত নীতির ফলে জনগণের জীবনের সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বোগতি, বাক-স্বাধীনতার উপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ, বিভিন্ন জনবিরোধী আইন ও নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের দৈনন্দিন জীবন আরো তীব্র সংকটের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে লুটপাটের মধ্য দিয়ে একটা শ্রেণি সীমাহীন বিত্ত বৈভবের মালিক রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে রাখার জন্য বা যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য শাসকশ্রেণির মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে। দেশবাসী এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চায়। কিন্তু মানুষ কোন আস্থাভাজন বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি খুঁজে পাচ্ছে না। ফলে মানুষ হতাশ। কমিউনিস্ট পার্টিকেই এই দুঃশাসন হটানো, ব্যবস্থা বদলানো ও বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির সমাবেশ গড়ে তোলার কাজে মূল ও উদ্যোগী দায়িত্ব পালন করতে হবে। মেহনতি মানুষের বিজয় অনিবার্য।” 

আজ দলের ঘোষণা-কর্মসূচি সমসাময়িকীকরণ ও গঠনতন্ত্র সংশোধন বিষয়ে কংগ্রেসে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও দশম অধিবেশনে অডিট কমিটির রিপোর্ট ও একাদশ অধিবেশনে কন্ট্রোল কমিশনের রিপোর্টের উপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। 

কংগ্রেসের অগ্রগতি নিয়ে প্রতিদিনের মত আগামীকালও বিকেল ৪টায় অধিবেশনস্থলের বাইরের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কংগ্রেসের জন্য নির্বাচিত মুখপাত্রগণ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন।

নির্ধারিত কার্যপ্রণালী ও সূচি অনুযায়ী আগামী কাল কাউন্সিল অধিবেশনে আগামী চার বছরের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। 

আজ বিকেল ৪টায় কংগ্রেসের গণমাধ্যম কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্রগণ এসব তথ্য তুলে ধরেন। আগামীকাল একই সময়ে কংগ্রেস মুখপাত্রগণের প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে। 


Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..