Revolutionary democratic transformation towards socialism

সিপিবি’র আসন্ন দ্বাদশ কংগ্রেস প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন


প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ

আপনাদের সকলকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাই।

আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, গণমানুষের অধিকার আদায় ও লড়াই-সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বাদশ কংগ্রেস আগামী ২৫-২৮  ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে একাদশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৮-৩১ অক্টোবর। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৪ বছর পর পর কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে এক বছর অধিককাল বিলম্বে সকল কোভিড প্রটোকল অনুসরণ করে দ্বাদশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

“দুঃশাসন হটাও, ব্যবস্থা বদলাও, বিকল্প গড়ো” এই স্লোগান ধারণ করে সিপিবি’র দ্বাদশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। ‘লুটপাটতন্ত্র, গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক’, ‘সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন সাধন’ এবং আওয়ামী, বিএনপি কেন্দ্রিক দ্বি-দলীয় মেরুকরণের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আসছি আমরা। কাঙ্ক্ষিত প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির একটি পদক্ষেপ সিপিবি’র দ্বাদশ কংগ্রেস।

ইতিমধ্যে সারাদেশে পার্টির সকল শাখা, উপজেলা কমিটি এবং জেলা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা কমিটিসমূহের সম্মেলনে ৪৮৭ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। কংগ্রেসের উদ্বোধনী অধিবেশনে সর্বমোট ২২৯ জন ভেটারেন কমরেডদের সংবর্ধনা দেয়া হবে।  

২৫ ফেব্রুয়ারি  শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে সারাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধি পর্যবেক্ষকদের নিয়ে কংগ্রেসের  উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। শুরুতেই দ্বাদশ কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির সাংস্কৃতিক উপ-পরিষদ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে। জাতীয় পতাকা ও কাস্তে-হাতুড়ি খচিত পার্টির লাল পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কংগ্রেসের উদ্বোধন ঘোষিত হবে।  আমাদের পার্টির সংগ্রামী সভাপতি জননেতা কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম যথাক্রমে জাতীয় পতাকা ও পার্টির পতাকা উত্তোলন করবেন। কংগ্রেসের উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বক্তব্য রাখবেন সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, উপদেষ্টা কমরেড মনজুরুল আহসান খান, কমরেড সহিদুল্লাহ চৌধুরী, কমরেড শাহাদাত হোসেন, কমরেড নুরুল হাসান ও কংগ্রেস প্রস্তুতি পরিষদের চেয়ারম্যান কমরেড লক্ষী চক্রবর্তী।  

উদ্বোধনী সমাবেশের পর বিকাল ৩টায় গুলিস্তানের কাজী বশির মিলনায়তনে (মহানগর নাট্যমঞ্চ) সাংগঠনিক অধিবেশন শুরু হবে এবং চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল পর্যন্ত। কংগ্রেসে গত পাঁচ বছরের কর্মকাণ্ডের উপর ‘কেন্দ্রীয় কমিটির রিপোর্ট’, পার্টির রণকৌশলগত দলিল অর্থাৎ কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক প্রণীত খসড়া ‘রাজনৈতিক প্রস্তাব’ ওপর আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। গঠনতন্ত্র অনুসারে কংগ্রেসের ৩ মাস আগে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে মতামত প্রদানের জন্য খসড়া ‘রাজনৈতিক প্রস্তাব’ পার্টির অভ্যন্তরে বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিটি শাখা সম্মেলন, উপজেলা/থানা কমিটি সম্মেলন, জেলা কমিটি সম্মেলনে আলোচ্যসূচিভুক্ত করে খসড়া ‘রাজনৈতিক প্রস্তাব’ আলোচনা করা হয়।  কংগ্রেসে রণনীতিগত দলিল ‘ঘোষণা ও কর্মসূচি’ সমসাময়িকীকরণ ও গঠনতন্ত্রের সংশোধনী, অডিট কমিটির রিপোর্ট, কন্ট্রোল কমিশনের রিপোর্ট, ক্রেডেনসিয়াল কমিটির রিপোর্ট উত্থাপিত এবং অনুমোদিত হবে। কংগ্রেসের শেষ অধিবেশনে আগামী ৪ বছরের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি ও কন্ট্রোল কমিশন নির্বাচন করা হবে এবং জাতীয় পরিষদ ঘোষণা করা হবে।

কংগ্রেস চলাকালীন প্রত্যেকদিন সন্ধ্যে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মহানগর নাট্যমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে। অনুষ্ঠানে দেশের বরেণ্য শিল্পীরা অংশ নেবেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

দ্বাদশ কংগ্রেসের প্রস্তুতির কাজে নিয়োজিত আছেন শত শত দক্ষ ও পার্টিপ্রাণ কমরেডগণ। নানাভাবে মানুষ আমাদের সহযোগিতা করছেন। গণচাঁদা এবং সদস্য ও দরদীদের আর্থিক অনুদানের ওপর নির্ভর করে এই কংগ্রেসের ব্যয় মেটানো হবে। এছাড়া কংগ্রেসের প্রতিনিধি-পর্যবেক্ষকদের খাবারের জন্য বিভিন্ন জেলা কমিটি চাল, ডাল, সবজিসহ অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করে পাঠিয়েছেন। কংগ্রেসকে সফল করতে কেন্দ্রীয়ভাবে গঠিত প্রস্তুতি কমিটির অধীনে ১৫টি উপ-পরিষদ রয়েছে, যেখানে ৫ শতাধিক কমরেড কর্মরত আছেন। কংগ্রেস সফল করে তুলতে মোট ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছেন এবং থাকবেন।

করোনা মহামারীর কারণে বিদেশী প্রতিনিধিগণ শারীরিক ভাবে উপস্থিত না থাকলেও এখন পর্যন্ত ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, ইরান, ফিলিস্তিন, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, পুর্তগাল, ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, কুর্দিস্তান, কানাডা, চিলি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কিউবা, ভেনেজুয়েলা,গ্রিস, ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, সোয়াজিল্যান্ড, চীন প্রভৃতি দেশের ভাতৃপ্রতীম পার্টিসমূহ কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে তাদের বার্তা পাঠিয়েছে।  

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ
কংগ্রেস সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানানোর উদ্দেশ্যে কংগ্রেস চলাকালে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় কংগ্রেসের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া কংগ্রেসের ‘স্পোকসম্যান’ (মুখপাত্র) থাকবেন। তাঁদের কাছ থেকেও কংগ্রেস সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে পারবেন।

আমরা আশা করি, আপনারা সিপিবি’র দ্বাদশ কংগ্রেসের বক্তব্য দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে আগের মতোই ভূমিকা পালন করবেন।
আপনাদের সকলকে আবারও শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।


Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..