Revolutionary democratic transformation towards socialism

সাম্প্রদায়িকতা অপশক্তিকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আজ সারাদেশে বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ দিবস’ পালন করে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেলে ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালিত হয়। সিপিবি’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মো. শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড আব্দুল্লাহ কাফি রতন, প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স।

গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে চাঁদপুরে হাজীগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলা ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সারাদেশে বিদ্যুৎবেগে ছড়িয়ে পড়া সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে বিভিন্ন জেলায় শতাধিক মন্দির-মণ্ডপ ও প্রায় দেড় শতাধিক হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষের বসতবাড়ি দোকানঘর ও প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ধংসযজ্ঞ চালানো হয়। এই ঘটনায় প্রায় সাতজন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নানা গুজব ছড়িয়ে দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করা হয়েছে। এবারও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দমন করার বদলে সরকার প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। বিচারহীনতার কারণে একের পর এক সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, শাসকদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ও লালন-পালনের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িতার বিপদ কেবল ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল সন্ত্রাসী ক্যাডারবাহিনী রূপেই বিরাজ করছে না। সাম্প্রদায়িকতা দিন দিন দেশের ‘সামাজিক মনস্তত্ত্বে’ আসন গেড়ে বসেছে। এর দায়-দায়িত্ব শাসকদেরই নিতে হবে। বর্তমান সরকার হেফাজতকে খুশী করতে গিয়ে পাঠ্যপূস্তকে ও সিলেবাসকে সাম্প্রদায়িক ধারায় পরিবর্তন করেছে। শাসকদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় আজ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, মানুষের মনস্তত্ত্বে সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ও প্রশাসনের লোকেরাও এ থেকে মুক্ত নয়।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ও সমাজতন্ত্র অভিমুখীন শোষণমুক্ত সমাজ নির্মাণের জন্য ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ উৎসর্গ করেছে। আজ শুধু বাংলাদেশ থেকেই নয়, গোটা উপমহাদেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতাকে নিশ্চিহ্ন করা এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান রাজনৈতিক কর্তব্য। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে জণগণকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বিবৃতিতে সিপিবির নেতৃবৃন্দ যে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি সর্ম্পকে সতর্ক থাকা এবং অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..