শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার

Posted: 27 জানুয়ারী, 2020

### সীমান্তে ভারতের হত্যাকাণ্ড ও বাংলাদেশ সরকারের ক্ষমাহীন নীরবতার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাম জোটের ডাক ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতীয়রা মিথ্যা অভিযোগে প্রতিনিয়ত পাখির মত গুলি করে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা করছে। তারা এ সাহস পাচ্ছে বাংলাদেশের সরকারের নীরবতার কারণে। নেপাল সীমান্তে একজন নেপালীকে হত্যা করায় নেপাল সরকার ও জনগণের প্রতিবাদের মুখে ভারত সরকার ও বিএসএফ কর্তৃপক্ষ ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের নীরবতায় এ বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম বিশ দিনেই সতের জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মানস নন্দী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনিরউদ্দিন পাপ্পু ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক। সভা পরিচালনা করেন ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম। বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী সরকার ভারতের কাছে নতজানু। এ সরকারের একজন মন্ত্রী ভারতীয়দের বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাইছেন। তিনি এ সকল হত্যাকাণ্ডে ভারতীয়দের কোনো দোষ খুঁজে পান না। বাংলাদেশিদের চরিত্র দোষের কারণেই নাকি এসকল হত্যাকাণ্ড ঘটছে। নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে ভারতের দালাল এ মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতীয় সরকারের মদদে এ সরকার বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতাসীন হওয়ায় তারা ভারতের সরকারের কাছে আত্মসমর্পণমূলক তোষামদী আচরণ করছে। সরকারের মন্ত্রীরা বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ককে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের সাথে তুলনা দিচ্ছেন। আরেকজন মন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারতের বর্তমান সম্পর্ককে ইতিহাসের সবচেয়ে ভাল বলে আখ্যা দিচ্ছেন। বাংলাদেশ-ভারতের রাখিবন্ধন চির অটুট রাখার অঙ্গীকার করছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, তারা রাখিবন্ধন দেখছেন কিন্তু বর্তমান হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় সরকার বাংলাদেশিদের রক্তে যে হোলি খেলছে তা তাদের নজরে পড়ছে না। নেতৃবৃন্দ বলেন, এনআরসি, সিএএ প্রভৃতি আইনের নামে হিন্দুত্ববাদীরা বাংলাদেশের উপর মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। বাংলাভাষী ভারতীয় মুসলমানদের বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টা করছে ভারত। এ বিষয়ে সরকার নীরব। নেতৃবৃন্দ সীমান্তে ভারতের হত্যাকাণ্ড ও এ বিষয়ে সরকারের ক্ষমাহীন নীরবতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।